সিলেটটুডে ডেস্ক

২৯ জুলাই, ২০১৭ ১২:৩৯

২০৩০ সালের মধ্যে সবার জন্যে নিরাপদ পানি: প্রধানমন্ত্রী

পুরনো ছবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের সব মানুষের জন্য নিরাপদ পানির ব্যবস্থা করা হবে।

শনিবার (২৯ জুলাই) ‘টেকসই উন্নয়নে পানি’ প্রতিপাদ্য নিয়ে রাজধানীতে শুরু হওয়া দুই দিনব্যাপী পানি সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এই মন্তব্য করেন।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত এই সম্মেলনে কয়েকটি দেশের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, “বর্তমানে বাংলাদেশের শহরাঞ্চলে শতকরা ৯৮ ভাগ মানুষ নিরাপদ পানির সুবিধা পাচ্ছেন। এসডিজির নির্ধারিত সময়সীমা ২০৩০ সালের আগেই আমরা শত ভাগ মানুষকে নিরাপদ পানি সরবরাহ করতে চাই।”

তিনি বলেন, “সকলের সঙ্গে বন্ধুত্বের তাগিদ থেকে নিরাপদ পানি ব্যবস্থাপনায় বিশ্ব পরিস্থিতির দিকেও আমাদের নজর দিতে হবে।

“গোটা বিশ্বে এই মুহূর্তে ২৪০ কোটি মানুষ স্যানিটেশন সুবিধা থেকে বঞ্চিত। নিরাপদ পানির অভাবে পৃথিবীতে বছরে ১০ লাখ মানুষ মারা যায়, যাদের অধিকাংশই শিশু। প্রতিদিন গড়ে বিশ্বে এক হাজার শিশু বিশুদ্ধ পানির অভাবে প্রাণ হারায়।”

তিনি বলেন, “পৃথিবীর শতকরা ৯০ ভাগ বিপর্যয়ের জন্য দায়ী পানি। প্রাকৃতিক দুর্যোগে মৃত্যুর শতকরা ৭০ ভাগই সংঘটিত হয় বন্যা এবং অন্যান্য পানি-সংক্রান্ত দুর্যোগে।”

বিশ্বে শতকরা ১ ভাগেরও কম পানিসম্পদ পানের জন্য নিরাপদ বলে বিবেচিত হওয়ার কথা মনে করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন পর্যন্ত বিশ্বের প্রায় ১০০ কোটি মানুষের সুপেয় পানির প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা যায়নি।

জনসংখ্যা বৃদ্ধি, নগর সভ্যতার ক্রমবিকাশ এবং প্রযুক্তিগত ভিন্নতায় পানি ব্যবহারের ধরনের পরিবর্তন হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “সুপেয় পানির প্রাপ্যতা হুমকিতেই রয়ে গেছে। বিশ্বের প্রায় শতকরা ৪০ ভাগ মানুষ কমবেশি সুপেয় পানি সমস্যায় ভুগছেন।”

তিনি বলেন, বিশ্বের প্রায় ১০৭ কোটিরও বেশি মানুষ নদী অববাহিকায় বসবাস করেও পানির চাহিদা মেটাতে ব্যর্থ হচ্ছেন।

মানুষ্য সৃষ্ট ৮০ শতাংশেরও বেশি অপরিশোধিত বর্জ্য পানি প্রকৃতিতে ফিরে গিয়ে বড় আকারে পরিবেশ দূষণ সৃষ্টি করছে বলেও শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন।

নিরাপদ পানি নিশ্চিত করতে তার সরকার ইতোমধ্যেই বিশেষ সাফল্য অর্জন করেছে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, “সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ২০১৫ সালের মধ্যে ৮৪ শতাংশ মানুষের জন্য নিরাপদ পানির ব্যবস্থা করার লক্ষ্য নির্ধারিত ছিল। ২০১৫ সাল নাগাদ বাংলাদেশের ৮৭ শতাংশ মানুষ নিরাপদ পানির আওতায় এসেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সাধারণভাবে প্রতিদিনের পানির ব্যবহার ও ব্যবস্থাপনায় আমাদের দেশে মূল সমস্যা হচ্ছে আর্সেনিক ও লবণাক্ততা, ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর হ্রাস, ভূ-উপরিস্থ পানি সংরক্ষণের অপ্রতুলতা, পানির অপচয় এবং শিল্প বর্জ্যসহ নানা কারণে পানি দূষণ। এসব সমস্যা মোকাবেলা করতে আমরা স্বল্প, মধ্য এবং দীর্ঘ-মেয়াদি পরিকল্পনা কার্যকর করে যাচ্ছি।”

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়নে পানির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করে খাদ্য নিরাপত্তাসহ এসডিজির ৭টি অভিষ্ঠ লক্ষ্যকে সামনে রেখে এই পানি সম্মেলন উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঢাকায় প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে এই সম্মেলনে দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, পূর্ব এশিয়া ও ডেল্টা কোয়ালিশনভুক্ত অঞ্চলের ২৭টি দেশের মন্ত্রী- প্রতিমন্ত্রীসহ ৮২ জন বিদেশী প্রতিনিধি অংশ নিচ্ছেন। সম্মেলনের শেষ পর্যায়ে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর সঙ্গে সুপারিশক্রমে ‘ঢাকা পানি ঘোষণাপত্র’ গৃহীত হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত