জামালগঞ্জ প্রতিনিধি

১৯ ফেব্রুয়ারি , ২০২০ ১২:৫৪

এমপি রতনকে দুদকে জিজ্ঞাসাবাদ

সুনামগঞ্জ-১ (তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, ধর্মপাশা ও মধ্যনগর) আসনের সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন।

মঙ্গলবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় দুদকের সেগুনবাগিচা প্রধান কার্যালয়ে তার জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়। টানা তিন ঘন্টার জিজ্ঞাসাবাদ দুপুর ১টায় শেষ হয়।

দুদকের অনুসন্ধান দলের প্রধান সৈয়দ ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে সাত সদস্যের অনুসন্ধান দল এমপি রতনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।

মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের বিরুদ্ধে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ এবং কারারুদ্ধ আলোচিত ঠিকাদার গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জিকে শামীমের সহযোগী হিসেবেও পরিচিত। জিকে শামীমসহ বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে যোগসাজশে বড় বড় ঠিকাদারি কাজ বাগিয়ে নিয়ে অবৈধ প্রক্রিয়ায় সরকারি অর্থ আত্মসাৎ, ক্যাসিনো ব্যবসা ও অন্যান্য অবৈধ কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে শত শত কোটি টাকা অর্জন এবং তা পাচারের অভিযোগ অন্যতম।

এছাড়া ঢাকা, নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ, ধর্মপাশাসহ ২৫টি বিলাসবহুল বাড়িসহ জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

জিজ্ঞাসাবাদ শেষে দুদকের ডিজি সৈয়দ মাহবুব খান জানান, এমপি রতন ও তার পরিবারের সদস্যদের পাসপোর্টের তথ্য চাওয়া হয়েছে। এছাড়া কানাডায় তার সম্পদ রয়েছে কি না সে বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

এদিকে এমপি রতনের অভিযোগ, রাজনৈতিকভাবে হেয় করতেই তার বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ জানিয়েছে একটি পক্ষ।

মঙ্গলবার দুদকের অনুসন্ধান টিমের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে দুদক কার্যালয় ত্যাগের পূর্বে বেশ কয়েকটি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে সরকার দলীয় এমপি রতন নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, একটি কুচক্রী মহল রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতে দুদকে অভিযোগ করেছে।

গত কয়েক বছরে স্থানীয়দের কাছে এমপি রতন আলোচিত তার বিলাসবহুল একাধিক বাড়ি-গাড়ি, জমিসহ বিপুল সম্পদের কারণে।

এমপি রতনকে দুদকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে দুদক মহাপরিচালক (বিশেষ তদন্ত) সাইদ মাহবুব খান বলেন, উনার (এমপি রতন) এমপির হওয়ার আগের যে সম্পদ এবং বর্তমানে যে সম্পদ এ যে পরিবৃদ্ধি এর ব্যাখ্যা আমরা উনার কাছ থেকে জানতে চেয়েছি। পাশাপাশি উনি যে (সুনামগঞ্জ)-১ নির্বাচনী এলাকায় এমপি সেখানকার জলমহাল, বালু পাথর মহাল, ঘাট ইজারা এবং ধর্মপাশায় একটি পাওয়ার প্লান্ট হচ্ছে কোরিয়ার উদ্যোগে সেটার সাথে উনার সম্পৃক্ততা কিছু কিছু এসেছে। কানাডার সম্পদের বিষয়ে উনার কাছ থেকে প্রাথমিক তথ্যটা পাওয়ার পরে আমাদের যে মানি লন্ডারিং ইস্যু সিস্টেম রয়েছে তার মাধ্যমে আমরা ওখানকার (কানাডার) সম্পদের বিষয়ে তথ্যাদি সংগ্রহ করব।

অনুসন্ধানের বিষয়ে আবারও এমপি রতনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুদকে তলব করা হবে বলেও জানান দুদক মহাপরিচালক (বিশেষ তদন্ত) সাইদ মাহবুব খান।

এর আগে ২০১৯ সালের ২৪ অক্টোবর দুদক এমপি রতনের বিদেশ যাত্রার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।

তখন এসবির ইমিগ্রেশন শাখায় দুদকের পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, দুদকের অনুসন্ধানে এমপি রতনের বিরুদ্ধে বিদেশে অর্থ পাচারের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে।

গত বছর ১৮ সেপ্টেম্বর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু হয়। ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ক্যাসিনোসহ নানা মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়ে অনুসন্ধানে নামে দুদক।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত