
১৮ অক্টোবর, ২০২৪ ০৪:২৭
ঐতিহাসিক ৭ মার্চ জাতীয় দিবস বাতিলের সিদ্ধান্ত অন্তর্বর্তী সরকার সম্পর্কে ভুল বার্তা দেবে বলে মনে করেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক।
তিনি বলেন, ‘অপরাপর জাতীয় দিবসের সঙ্গে ৭ মার্চকে একাকার করে দেখা বিবেচনাপ্রসূত নয়। তা ছাড়া ৭ মার্চে সরকারি কোনো ছুটিও ছিল না। জাতীয় দিবস হিসাবে ৭ মার্চ বাতিলের সিদ্ধান্ত অন্তর্বর্তী সরকার সম্পর্কে ভুল বার্তা দেবে; সরকারকে অপ্রয়োজনীয় ও অনাকাঙ্ক্ষিত বিতর্কের মধ্যে ঠেলে দেবে।’
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আওয়ামী ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন ও তাদের গণহত্যার মতো অপরাধের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ ও ৭ মার্চ সম্পর্কিত করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। ১৯৭১ এর অগ্নিঝরা উত্তাল সময়ে ৭ মার্চের ভাষণ ছিল স্বাধীনতা সংগ্রামের এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক; যা মুক্তিসংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ায় দেশের জনগণকে উদ্বুদ্ধ করেছিল, জনগণকে রাজনৈতিক দিশা দিয়েছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘সংবেদনশীল ও জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কোনো রাজনৈতিক অবস্থান ঘোষণা ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে দেশের যে মানুষ, রাজনৈতিক দল ও সামাজিক অংশসমূহ অন্তর্বর্তী সরকারকে একাট্টা সমর্থন জুগিয়ে আসছে তাদের মনোভাব, আকাঙ্ক্ষা ও আবেগ বিবেচনায় নেওয়া দরকার।’
সাইফুল হক বলেন, ‘৫ আগস্ট ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যুত্থান যে অসাধারণ গণঐক্য তৈরি করেছে এবং নতুন এক অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র ও সমাজ প্রতিষ্ঠার অসীম সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে, রাজনৈতিক ইতিহাসের ভুল ও পক্ষপাতদুষ্ট ব্যাখ্যায় তা নষ্ট করা আত্মঘাতী হতে পারে।’
‘আমাদের ইতিহাসের যেমন অনেক অসাধারণ গৌরবজনক উত্তরাধিকার রয়েছে, তেমনি রয়েছে অনেক নির্মম নেতিবাচক উত্তরাধিকার। সবটাই আবার ইতিহাসের অংশ। ইতিহাসের নির্মোহ পর্যালোচনার ভিত্তিতেই স্বাধীন সার্বভৌম জাতিরাষ্ট্র হিসেবে গণতান্ত্রিক ধারায় বাংলাদেশকে তার আগামীর পথ চলা নিশ্চিত করতে হবে,’ যোগ করেন সাইফুল হক।
উল্লেখ্য, গত বুধবার (১৬ অক্টোবর) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক আদেশে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ ও ১৫ আগস্ট জাতীয় শোকসহ আটটি দিবস বাতিল করে অন্তর্বর্তী সরকার। বাতিল হওয়া আটটি দিবসের মধ্যে পাঁচটিই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবার সংশ্লিষ্ট। এর মধ্যে ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম দিবস ও জাতীয় শিশু দিবস, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার ভাই শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের জন্মবার্ষিকী, ৮ আগস্ট শেখ হাসিনার মা বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী, ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস, ১৮ অক্টোবর শেখ হাসিনার ছোট ভাই শেখ রাসেল দিবস। এ ছাড়া বাতিলের তালিকায় রয়েছে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ, ৪ নভেম্বর জাতীয় সংবিধান দিবস, ১২ ডিসেম্বর স্মার্ট বাংলাদেশ দিবস।
আপনার মন্তব্য