নিজস্ব প্রতিবেদক

১৫ মার্চ, ২০১৫ ২২:৩৪

'নিখোঁজ' সালাউদ্দিনের নামে বিবৃতি, অনলাইনে আলোচনার ঝড়

দলীয় প্যাডে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিনের নামে একটি বিবৃতি নিয়ে অনলাইনে আলোচনার ঝড় উঠেছে। যদিও এ বিবৃতির বিশ্বাসযোগ্যতা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে বিএনপির কোনো নেতার সাথেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

দলীয় প্যাডে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিনের নামে একটি বিবৃতি নিয়ে অনলাইনে আলোচনার ঝড় উঠেছে। যদিও এ বিবৃতির বিশ্বাসযোগ্যতা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে বিএনপির কোনো নেতার সাথেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

গত পাঁচ দিন ধরে বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে সালাহউদ্দিনকে ডিবি পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। সালাউদ্দিনের পরিবারও একই দাবি করছে। এমন অবস্থায় এই বিবৃতি নিয়ে কৌতুহল দেখা দিয়েছে। বিবৃতিটির সত্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

সালাহউদ্দিনের নিখোঁজ সংবাদটি কেবল গণমাধ্যম ও বিএনপির বিবৃতিতেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর পক্ষে একটি জবাব উচ্চ আদালতে দাখিল করা হয়েছে যেখানে সালাহউদ্দিনের কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি বলে জানানো হয়েছে।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সালাহউদ্দিন আহমেদের নামে বিবৃতি নিয়ে নামা মহলে সন্দেহ দেখা দিয়েছে, একই সঙ্গে ব্যাপক আলোচনার অনুষঙ্গ হয়ে সোশ্যাল সাইটগুলোতেও। ‘নিখোঁজ’ বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিনের নামে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়েছে- টানা ৭২ ঘণ্টা হরতালের ঘোষণা দিয়ে গণমাধ্যমে আসা বিএনপির যুগ্মমহাসচিব বরকতউল্লাহ বুলুর বিবৃতিটি বিএনপি কর্তৃক অনুমোদিত নয়।

শনিবার(১৪ মার্চ) বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব বরকতউল্লাহ বুলু এক বিবৃতিতে রবিবার ভোর ৬টা থেকে বুধবার ভোর ৬টা পর্যন্ত টানা হরতালের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। উক্ত বিবৃতিটি বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া কর্তৃক অনুমোদিত নয় দাবি করে রবিবার (১৫ মার্চ) বিকেলে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ নতুন একটি প্রেস রিলিজ পাঠানো হয়। যেখানে তিনি স্পষ্ট উল্লেখ করেন যে তিনিই একমাত্র ব্যক্তি যাকে খালেদা জিয়া সকল প্রকার প্রেস রিলিজের দ্বায়িত্ব দিয়েছেন এবং তিনি ছাড়া বিএনপির অপর কোন ব্যক্তি (তিনি যেই হোন না কেন) গণমাধ্যমে কোন প্রকার বিবৃতি দিলে সেটি বিএনপির অফিসিয়াল বিবৃতি বলে গণ্য হবেনা এবং এর দায় বিএনপি নিবে না।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সালাহউদ্দিনের নামে বলা হয়- “ক্ষমতাসীন অবৈধ সরকারকে উৎখাতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল, বিএনপি-এর চলমান আন্দোলন কর্মসূচির অংশ হিসেবে সারা দেশে অবরোধ চলছে। বিএনপির এই আন্দোলনে জনগণের স্বতঃস্ফুর্ত অংশগ্রহণই প্রমাণ করে দেশের মানুষ আর এই অবৈধ সরকারকে চায়না। বিগত বছরগুলোতে সরকার দেশব্যাপী যে গুম, হত্যা, নির্যাতন, অপহরণ ও দুঃশাসন চালিয়েছে, বিএনপি নেতাকর্মীদের যেভাবে জেল-জুলুম ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে, তার প্রতিবাদে রবিবার ভোর ৬টা থেকে আগামী বুধবার ভোর ৬টা পর্যন্ত সারাদেশে ৭২ ঘণ্টার লাগাতার হরতাল পালনের জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানানো হচ্ছে।

উল্লেখ্য, আমি সালাহ উদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম মহাসচিব, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল, এই মর্মে ঘোষণা করছি যে, বিএনপির চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কেবলমাত্র আমাকেই মনোনীত করেছেন দলের পক্ষ থেকে যেকোন বিবৃতি দেয়ার জন্য। সুতরাং, আমার পরিবর্তে অন্য কেউ যদি দলের পক্ষে কোন বিবৃতি দিয়ে থাকেন তবে তার দায় বিএনপির নয়। আমাকে নিয়ে কিছু মিডিয়াতে বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রচার করা হচ্ছে যার কোনটিই সত্য নয়। তাই আমার দেয়া বিবৃতি ব্যতীত অন্য কোন ব্যক্তি (তিনি যেই হোন না কেন) কর্তৃক প্রদত্ত বিবৃতি বিএনপির অফিসিয়াল বিবৃতি বলে কখনোই বিবেচিত হবে না।গণতন্ত্র উদ্ধারে বিএনপির চলমান আন্দোলনে শরিক হওয়ার জন্য দেশবাসীকে উদাত্ত আহ্বান জানানো হচ্ছে।

এর আগে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব বরকতউল্লাহ বুলু এক বিবৃতিতে বলেন “চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে দেশব্যাপী অবরোধ পালনের পাশাপাশি গুম, খুন, অত্যাচার, নির্যাতন, অপহরণ, জেল-জুলুম, অন্যায়ভাবে রিমান্ডে নেওয়া ও বিএনপি নেতা সালাহ উদ্দিন আহমেদকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে এবং তার আশু মুক্তির দাবিতে রোববার ভোর ৬টা থেকে আগামী বুধবার ভোর ৬টা পর্যন্ত সারাদেশে ৭২ ঘণ্টার অবিরাম হরতাল পালনের জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানানো হচ্ছে।” সালাহউদ্দিনের নামে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়েছে- তার সম্পর্কে গণমাধ্যমে মিথ্যা সংবাদ প্রচার করা হচ্ছে।

এদিকে বিএনপির দুই যুগ্ম মহাসচিবের দুই রকম বিবৃতিতে এবং সালাহউদ্দিনের বিবৃতিতে সরাসরি নাম উল্লেখ না করে বরকতউল্লাহ বুলুকে ইঙ্গিত করে যে বক্তব্য দেয়া হয়েছে তাতে বিএনপিসহ দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে।

নতুন এ প্রেস বিজ্ঞপ্তির পর সালাহউদ্দিনের নিখোঁজ কিংবা গ্রেফতার অথবা বিবৃতির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত