ইতালীয় নাগরিক তাভেলা সিজার হত‌্যাকাণ্ড নিয়ে র‌্যাব ও পুলিশের পরস্পরবিরোধী বক্তব্য এই মামলায় বিএনপি নেতা এম এ কাইয়ুমকে ‘ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ফাঁসানোর’ প্রমাণ বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ভিআইপি লাউঞ্জে ইয়ুথ ফোরামের উদ্যোগে ‘রক্তাক্ত ২৮ অক্টোবর: আজকের প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে রিজভী বলেন, “আজকে র‌্যাবের ডিজি বলছেন, তাভেলা হত্যার সাথে নিউ জেএমবির নেতারা জড়িত। আর তারপরেই সংবাদ সম্মেলন করে ডিবির জয়েন্ট কমিশনার বলছেন, না আমরা তদন্ত করে দেখেছি, এটা সঙ্গে কাইয়ুম সাহেব ও তার ভাইরা জড়িত। বাহ্!

“আজকে এরাই তাদের বির্তক তৈরি করেছে। এই যে প্রকাশ হয়ে পড়লো, ফাঁস হয়ে গেলো যে, এটা একটা ষড়যন্ত্র। তাভেলা হত্যাকাণ্ডে বিএনপি নেতা কাইয়ুম-মতিনকে জড়িত করা- এটা হচ্ছে একটা ষড়যন্ত্র। আজকে তাদের বির্তকের মধ্য দিয়ে প্রমাণ হয়ে গেল।”

গত বছর ২৮ সেপ্টেম্বর কূটনৈতিক পাড়া গুলশানে ইতালীয় নাগরিক তাভেলাকে (৫১) গুলি করে হত্যার প্রায় এক মাস পর ঢাকা মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার এম এ কাইয়ুমের ভাই আব্দুল মতিন, তামজিদ আহম্মেদ রুবেল ওরফে শুটার রুবেল, রাসেল চৌধুরী ওরফে চাকতি রাসেল, মিনহাজুল আরেফিন রাসেল ওরফে ভাগ্নে রাসেল ও সাখাওয়াত হোসেন ওরফে শরীফকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত ইতালির নাগরিক সিজার তাভেলা হত্যা মামলায় বিএনপি নেতা এম এ কাইয়ুমসহ সাত জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছে। বিচারক মো. কামরুল হোসেন মোল্লা আলোচিত এই মামলায় ২৪ নভেম্বর সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করেছেন।

রিজভী বলেন, “এটা এখন সুস্পষ্ট- এই যে তাভেলা হত্যা মামলার চার্জশিট টাইপ করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অথবা সুধাসদন ভবনে, অন্য কোথাও নয়। অর্থাৎ সরকার যা বলেছেন, সেইভাবেই চার্জসিট সাজানো হয়েছে।

“তাদের মনের মাধুরী মিশিয়ে এই কাজটি তৈরি করা হয়েছে শুধুমাত্র বিএনপির নেতাদের এই ঘটনার সাথে জড়িত করার জন্য।”

দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা পুরোপুরি ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করে এজন্য সরকারের ‘তল্পিবাহক’ নির্বাচন কমিশনকে দায়ী করেন রিজভী।

“কাজী রকিবউদ্দিনের নির্বাচন কমিশন এতো ন্যক্বারজনক দালালি করছে, বিশ্বের অন্য কোনো দেশে যার দৃষ্টান্ত নেই। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, নির্বাচন কমিশন, জনপ্রশাসন ও সংসদ এই সরকারের সিলমোহরের কাজ করছে। এ সমস্ত জায়গাগুলো সরকারের অপকর্ম-অপরাধকে ন্যায্যতা দিয়ে সিল দেয়। সেখানে সরকারের দলের লোকজন বসিয়ে এটা করা হয়েছে।”

দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে জনগণকে মতভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বানও জানান বিএনপির এ যুগ্ম মহাসচিব।