সিলেটটুডে ডেস্ক

০৪ নভেম্বর, ২০১৬ ২১:২২

নাসিরনগরে হামলাকারীদের শাস্তি পেতেই হবে : ওবায়দুল কাদের

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির ও বাড়িঘরে হামলাকারীদের শাস্তি পেতেই হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, সরকার সংখ্যালঘুদের পাশেই আছে।

এসব হামলার ঘটনায় উদ্বেগের কোনো কারণ নেই উল্লেখ করে তিনি ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মানুষের উদ্দেশে বলেন, আপনারা নিজেদের মাইনরিটি ভাববেন না। মাথা উঁচু করে বাঁচবেন, মাথা নিচু করে নয়।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা নির্বিকার নই। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঘটনায় সরকার, শেখ হাসিনার সরকার অত্যন্ত কঠোর অবস্থানে। যারা এই অপরাধ সংগঠিত করেছে, শাস্তি তাদের পেতেই হবে।’

পাহাড়ি জুমচাষকে কেন্দ্র করে গারো সম্প্রদায়ের নবান্ন উৎসব ‘ওয়ানগালা’ উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসব কথা বলেন। রাজধানীর বনানী মডেল হাইস্কুল প্রাঙ্গণে শুক্রবার (৪ নভেম্বর) এ উৎসব আয়োজন করা হয়।

ওবায়দুল কাদের বলেন, এ দেশে সব সম্প্রদায়ের অধিকার সমান। সংখ্যালঘুদের তিনি ভয় না পাওয়ার আহ্বান জানান।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বাংলাদেশে আপনাদেরও সমান অধিকার। হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান মুসলমান আমাদের সকলের সমান অধিকার। এখানে কেউ মেজরিটি মাইনরিটি বলে অধিকার, সমান অধিকার পাচ্ছে না। সমান অধিকার পাচ্ছে এই দেশের নাগরিক হিসেবে। নিজেদের মাইনরিটি ভাববেন না। মাথা উঁচু করে বাঁচবেন। মাথা নিচু করবেন না।’

গত ২৮ অক্টোবর (শুক্রবার) নাসিরনগর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের হরিণবেড় গ্রামের রসরাজ দাস নামের এক যুবক পবিত্র কাবাঘরের ছবি সম্পাদনা করে ফেসবুকে পোস্ট করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এরপর স্থানীয় লোকজন তাকে পুলিশে সোপর্দ করে। এ ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে শনিবার দিনভর নাসিরনগর সদর উত্তাল হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় পরদিন রোববার উপজেলা সদরের কলেজ মোড়ে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ হয়। সমাবেশ চলাকালে সদরের কয়েকটি মন্দির ও হিন্দুদের বাড়িতে হামলা হয়।

ভাঙচুরের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত কাজল দত্ত ও নির্মল দত্ত বাদী হয়ে গত সোমবার নাসিরনগর থানায় দুটি মামলা করেন। স্থানীয় জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও পুলিশ সদর দপ্তরের উদ্যোগে তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

ঘটনার তিনদিন পর এলাকায় যান স্থানীয় সংসদ সদস্য ও মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মোহাম্মদ ছায়েদুল হক। চারদিনের মাথায় বৃহস্পতিবার তিনি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন।

এদিকে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতেই নাসিরনগর উপজেলার পশ্চিমপাড়ার দুটি ঘর ও দক্ষিণপাড়ার তিনটি ঘরে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। রাত আড়াইটা থেকে ৩টার দিকে দুটি পাড়ার গোয়ালঘর ও রান্নাঘরে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। তবে এতে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

শুক্রবার বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে দলের একটি প্রতিনিধিদল নাসিরনগরের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে। প্রতিনিধিদল এ ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করে। এর আগে কয়েকটি মানবাধিকার সংস্থা ও হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদও একই দাবি জানিয়েছে।

 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত