সিলেটটুডে ডেস্ক

২৬ এপ্রিল, ২০১৫ ১৮:১৪

মানুষ পুড়িয়ে মানুষকে প্রতিশোধ নিতে বলা হাস্যকর : সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী

মানুষ খুন করে এখন মানুষকেই যখন প্রতিশোধ নিতে বলেন, মানুষকে পুড়িয়ে মানুষকেই প্রতিশোধ নিতে বলেন এর চেয়ে হাস্যকর আর কিছুই নেই। দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার কারণে যদি দেশের মানুষ ‘প্রতিশোধ’ নেয়, তিনি কোথায় যাবেন, সেটা তাঁর ভেবে দেখা উচিত।

গণভবনে রোববার ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় আফ্রো-এশিয় সম্মেলনে অংশগ্রহণের ওপর সংবাদ সম্মেলনকালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কথাগুলো বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সংবাদ সম্মেলন সদ্য সমাপ্ত ইন্দোনেশিয়া সফরের ওপর হলেও বেশিরভাগ অংশ জুড়েই ছিল বিএনপি, বেগম খালেদার ৫ জানুয়ারির নির্বাচন-পরবর্তী পেট্রলবোমায় মানুষ মারা, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন, খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলা, ভূমিকম্প এবং দেশের রাজনীতি ইস্যু।  বেশিরভাগ সাংবাদিকই এসব ইস্যুতে প্রশ্ন রাখেন।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন- আমরা বিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে রোল মডেল করেছি। ২০০১ সালে খালেদা জিয়া যখন সরকারে ছিল, তখন মানুষ হত্যা ও রেপ হয়েছে। অপারেশন ক্লিনহার্টের মাধ্যমে মানুষ হত্যা করেছে। তখন দুর্নীতি ও জঙ্গিবাদের দেশ হয়েছিল বাংলাদেশ। অথচ খালেদা জিয়া এখন সংবাদ সম্মেলনে মিথ্যার ফুলঝুরি দিয়ে যাচ্ছেন।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন-  সজীব ওয়াজেদ জয়কে ‘হত্যা’ ও ‘ক্ষতির’ জন্য যুক্তরাষ্ট্রের এফবিআইকে ঘুষ দিয়েছে বিএনপি নেতা, এটা ওই দেশে প্রমাণিত হয়েছে। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের এক বছর পূর্তিতে পেট্রলবোমা মেরে ও বাসে আগুন দিয়ে তারা মানুষ মেরেছে। বোমা মারতে গিয়ে তাদের দলের নেতা-কর্মীরা সাধারণ মানুষের হাতে গণধোলাই খেয়েছে। বোমা বানাতে গিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীরা আহত হয়েছে। দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করেও উনি (খালেদা জিয়া) ‘প্রতিশোধ’ নেওয়ার কথা বলছেন। এর প্রতিশোধ যদি জনগণ নেয়, তিনি কোথায় যাবেন তাও ভেবে দেখা উচিত।

সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ করে বলেন- তিনি বলেছেন সিটি নির্বাচনে কেউ টাকা দিলে নেবেন, তবে ভোট দেবেন অন্য জায়গায়। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী বলেন- অর্থ নেওয়াটা উনি (খালেদা জিয়া) ভালো বোঝেন, অর্থ নেওয়া ও বেইমানি করা তাদের স্বভাব। বিএনপি যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখনই দেশকে ‘নরক’ বানিয়েছে।

জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত হরতাল-অবরোধে নাশকতায় মানুষ হত্যার ঘটনাগুলো তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “খালেদা জিয়া আন্দোলনের নামে মানুষ যেভাবে পোড়াল, যে জঘন্য কাজ, বিশ্বে কোথাও কি কেউ দেখেছে? উনি যে মানুষকে পোড়ালেন তিনি আবার মানুষের কাছে ভোট চান কিভাবে? কোন মুখে ভোট চান? লজ্জাও তো লাগে। বাস পুড়িয়ে বাস মার্কায় ভোট চাওয়ার তীব্র সমালোচনাও করেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা আরও বলেন- আমরা যখন ঢাকা সিটি কর্পোরেশনকে দুইভাগে ভাগ করলাম এর প্রতিবাদে তারা দুই দিন হরতাল ডাকলেন এখন আবার সে নির্বাচন করতে এসেছেন। এটাকে খালেদা জিয়ার দ্বিমুখি চরিত্র বলে উল্লেখ করেন তিনি।

খালেদা জিয়া নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে প্রচার চালালেও তা গণমাধ্যমে আসেনি বলে সমালোচনাও করেন তিনি।

নির্বাচনী প্রচারে আক্রান্ত খালেদা জিয়ার ছবি সংবাদ মাধ্যমে এলেও বিএনপি চেয়ারপারসনের নিরাপত্তাকর্মীদের গাড়ির নিচে চাপা পড়া এক তরুণের ছবি সংবাদ সম্মেলনে দেখিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এই ছবি তো আপনারা দেখাননি।”

প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ওপর আক্রমণের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, খালেদা জিয়া জনতার রুদ্ররোষেই পড়েছিলেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত