সিলেটটুডে ডেস্ক

০৭ জুলাই, ২০১৭ ১৬:১৪

রামপাল প্রকল্প শেখ হাসিনাকে দিয়ে ভারত তৈরি করছে, অভিযোগ রিজভীর

ইউনেস্কো সুন্দরবনের কাছে রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন নিয়ে তাদের আপত্তি তুলে নিয়েছে বলে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হলেও ওই প্রকল্পের বিরোধিতায় অনড় থাকার কথা জানিয়েছে বিএনপি। এই প্রকল্প শেখ হাসিনাকে দিয়ে ভারত তৈরি করছে। অথচ ভারত নিজেদের দেশে এধরণের প্রকল্প নির্মাণ করতে দেয় না। পরিকল্পিতভাবে সুন্দরবন ধ্বংস করতেই ভারত এই প্রকল্প তৈরি করাচ্ছে; মন্তব্য বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর।

রিজভী বলেন, কোন কোন সংগঠন কী বলছে, তাতে আমাদের কিছু যায় আসে না। রামপাল পুরোপুরিই একটি রাষ্ট্রবিরোধী প্রকল্প। বিএনপি এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে।

পোল্যান্ডে চলমান ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটির ৪১তম অধিবেশনে রামপাল নিয়ে ইউনেস্কোর আপত্তি তুলে নেওয়া হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দাবি করে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠায়।

শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, “বাংলাদেশের পরিবেশবিদরা লিখছেন, বলছেন এবং এমনকি ভারতের অনেক পরিবেশবিদরা বলেছেন যে সুন্দরবনের কাছে কয়লা পুড়িয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করলে পরে সুন্দরবন নষ্ট হবে; পরিবেশ, প্রতিবেশ, গাছ-মাছ-পানি ও মানুষ বিপন্ন হবে।

রিজভী বলেন, ‘আমাদের যারা বিশেষজ্ঞ-বুদ্ধিজীবী আছেন তারা এই বিষয়ে হুঁশিয়ার করছেন, আন্দোলন করছেন। বিএনপি সেই আন্দোলনে সমর্থন করেছে। এখন অন্য কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থা বা অর্গানাইজেশন কে কী বলল, না বলল- এটা দেখার বিষয় নয়। আমরা আজো প্রতিবাদ করি- সুন্দরবনের কাছে রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন অন্যায়, অবৈধ ও বাংলাদেশকে ধ্বংস করে দেবার শামিল। ’

ইউনেস্কোর আপত্তি থেকে সরে আসার সিদ্ধান্তের প্রতি ইঙ্গিত করে বিএনপি নেতা রিজভী বলেন, ‘আমার বাড়িতে আগুন লেগেছে, এই আগুনের তীব্রতা কতটুকু সেটা আমরাই বুঝতে পারব। সেখানে আমি বালতিতে করে পানি ঢালব না দমকল বাহিনী নিয়ে এসে আগুন নেভাব- সেটা আমরা ঠিক করব। ’

তিনি আরও বলেন,‘আমার দেশের যারা বুদ্ধিজীবী, পরিবেশ বিশেষজ্ঞ তারা কি লেখাপড়া করেননি; এরা কি বিশ্ববিদ্যালয়ে যাননি, আনু মুহাম্মদ সাহেব থেকে শুরু করে আরো যারা লিখছেন। এমনকি ভারতেও অনেক পরিবেশবিদ বলছেন যে সুন্দরবনের কাছে কয়লা পুড়িয়ে বিদ্যুৎ কেন্দ্র হলে পরে আমাদের সুন্দরবন নষ্ট হবে। ’

এসময় তিনি দেশে গুম-খুন হত্যা নিয়ে হিউম্যান রাইট ওয়াচের তথ্যকে সঠিক বলেও মন্তব্য করে তিনি বলেন, তারা যদি আরো সময় নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করতো, আরো জরিপ চালাতে পারতো, তাহলে আরো ভয়াবহ চিত্র দেখতে পেতো। কারণ, এই প্রতিবেদনের চেয়ে দেশের পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ।

ওবায়দুল কাদেরের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ওবায়দুল কাদের কোন তথ্য-উপাত্ত খুঁজে পান না। কারণ, তিনি কালো সান গ্লাস পরে থাকেন। তিনি এসব দেখতে পাবেন না।

রিজভী আরো বলেন, এই সরকার জাতীয় সংসদকে বিচিত্রা অনুষ্ঠানের ক্লাবে পরিণত করেছে। এই সংসদে জনগণের আলোচনা হয় না। তাই দ্রুত একটি নির্বাচন দরকার দেশে। বিএনপি নির্বাচনে যাবেই। কিন্তু শেখ হাসিনার অধীনে নয়, একটি সহায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু ও সাবেক বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবেদিন ফারুকসহ নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে স্বাধীনতা ফোরাম নামক এই মানববন্ধন আয়োজন করে। এসময় আরো আলোচনা করেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন এ্যানি। সভাপতিত্ব করেন স্বাধীনতা ফোরামের সভাপতি আবু নাসের মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত