সিলেটটুডে ডেস্ক

১১ মে, ২০১৮ ২১:২৬

ছাত্রলীগকে ক্যাম্পাসে ফুলের গাছ লাগানোর পরামর্শ প্রধানমন্ত্রীর

ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিভিন্ন ক্যাম্পাসে ফুলের গাছ লাগানোর পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।

এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে ছাত্রলীগকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকার পরামর্শ দেন। যেখানে-সেখানে ময়লা না ফেলতে এবং ট্রাফিক নিয়ম মেনে রাস্তা চলতে বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ট্রাফিক আইন না মেনে কেউ বাসের বাইরে হাত, মাথা ঝুলিয়ে রাখবে আর দুর্ঘটনা ঘটলে বিআরটিসির দোষ হবে, এটা মানা যায় না। তাই ট্রাফিক নিয়ম সম্পর্কে জানতে হবে। হুট করে রাস্তা পার হওয়া যাবে না।

শুক্রবার ছাত্রলীগের ২৯তম সম্মেলনের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব পরামর্শ দেন। সম্মেলন শুরু হয় বিকেল চারটায়। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় সংগীত এবং ছাত্রলীগের দলীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে সম্মেলন শুরু হয়। এরপর আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেয় ছাত্রলীগ।

ছাত্রলীগের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব নিয়ে কথা বলতে গিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি চাই তোমরা সমঝোতার মাধ্যমে তোমাদের নেতৃত্ব নির্বাচন কর।’ তিনি বলেন, ছাত্রলীগে নেতৃত্ব দেওয়ার বয়স ২৭ বছর করা হয়েছিল। এই কমিটি নয় মাস বেশি সময় থাকায় বয়স এক বছর বাড়িয়ে দেওয়া হলো।

আওয়ামী লীগের দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ছাত্রলীগ তাদের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন। ২০১১ সালে ছাত্রলীগের ২৭তম সম্মেলনের মাধ্যমে বদিউজ্জামান সোহাগকে সভাপতি ও সিদ্দিকী নাজমুল আলমকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি ঘোষণা করা হয়। এই কমিটি চার বছর পর দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার কারণে ২৮তম সম্মেলনে ছাত্রলীগের নেতৃত্ব নির্বাচনের জন্য দুই বছর বাড়িয়ে বয়সসীমা ২৯ বছর করে দেন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এবার ২৯তম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে নির্ধারিত সময়ের নয় মাস পর। কেউ যেন বঞ্চিত না হন, এ কারণে এবার ছাত্রলীগের নেতৃত্বের বয়স ২৭ থেকে বাড়িয়ে ২৮ বছর করে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শেখ হাসিনা বলেন, ২৩ থেকে ২৪ বছরের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর শেষ হয়ে যায়। এরপর কেউ চাইলে ‘ডাবল মাস্টার্স’ করতে পারেন। তিনি বলেন, ‘এই কমিটি দুই বছরের জন্য দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু নয় মাস বেশি হয়ে গেছে। আমি চাই না কেউ বঞ্চিত হোক। এ কারণে এবার এক বছর বাড়িয়ে ২৮ বছর করা হোক। এখন কোনো সেশনজট নেই। কাজেই আমি চাই, তোমরা এমন নেতৃত্ব খুঁজবে, যে নেতৃত্ব তোমাদের সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করতে পারে।’

এ সময় প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে নেতৃত্ব দেওয়ায় ছাত্রলীগের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, এক–এগারোর সময় তাঁকে যখন গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, তখন ছাত্রলীগ ও দলের অন্যান্য অঙ্গসংগঠন এর প্রতিবাদ করেছিল। মাত্র ১৫ দিনে ২৫ লাখ গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করেছিল ছাত্রলীগ। তাঁর দেশে আসার সময়ও ছাত্রলীগ অগ্রণী ভূমিকা পালন করে বলে তিনি ছাত্রলীগকে ধন্যবাদ দেন।

বিএনপি-জামায়াতের আমলের শিক্ষাব্যবস্থার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা অবৈধভাবে ক্ষমতা লাভ করে, তারা ছাত্রদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছিল। শিক্ষাব্যবস্থায় সেশনজট তৈরি করে দিয়েছিল। এমন কোনো রাত নেই সে সময়ে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অস্ত্রের ঝনঝনানি হয়নি। তিনি আরও বলেন, এসব দৃশ্য বদলে গেছে। আওয়ামী লীগের আমলে সেশনজট বন্ধ হয়েছে। নতুন নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বিভাগ খোলা হয়েছে। সেমিস্টার পদ্ধতি আওয়ামী লীগের আমলে হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা করার পরামর্শ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ছাত্ররা পড়ালেখা করবে। তাদের ভালো কীসে হবে, সেটা আমাদের জানা আছে। শিক্ষার্থীদের প্রথম কাজ পড়ালেখা করা। কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করা ছাত্রদের কাজ নয়।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে হামলার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, উপাচার্যের বাসভবনে হামলা, লুটপাট করা এবং তার গায়ে হাত দেওয়ার মতো ঘটনা ইতিহাসে কখনো ঘটেনি। এ ঘটনা যারা ঘটিয়েছে, তাদের ছাড় দেওয়া হবে না। ইতিমধ্যে কয়েকজন ধরা পড়েছে। আরও ধরা পড়বে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাউকে ছাড় দেবে না, এ বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া আছে।

পরে দলের পক্ষ থেকে শোকপ্রস্তাব পাঠ করেন ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক দেলওয়ার শাহজাদা। সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ। সম্মেলনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ছাত্রলীগের সহসভাপতি আরিফুর রহমান।

সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য এবং ছাত্রলীগের কয়েকটি কমিটির সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকেরা উপস্থিত ছিলেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত