নিজস্ব প্রতিবেদক

২৬ জুন, ২০১৫ ০১:৫৫

‘বিবাহিতদের দিয়ে’ সিলেট ল’ কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি, নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ

সিলেট ল’ কলেজ ছাত্রলীগের সদ্য মনোনীত সভাপতি মোস্তাক আহমদের বিয়েতে মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক

সিলেট ল' কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। রাতের আধাঁরে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে। নবগঠিত কমিটির সভাপতি অছাত্র ও বিবাহিত বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে।

বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) সিলেট মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি রাহাত তরফদার ও সাধারণ সম্পাদক এমরুল হাসান ল' কলেজসহ বেশ কয়েকটি কলেজ', থানা ও ওয়ার্ড ছাত্রলীগের কমিটি অনুমোদন করেন।

বৃহস্পতিবার রাতে সিলেট মহানগর ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক তানভির কবির চৌধুরী সুমন স্বাক্ষরিত এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে ছাত্রলীগের কমিটি গঠন সম্পর্কিত তথ্য জানানো হয়। প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে নবগঠিত কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছাড়া আর কারও নাম প্রকাশ করা হয়নি।

অনুমোদিত কমিটিতে সিলেট ল’ কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি পদে আগের সভাপতি এম মোস্তাক আহমদকে বহাল রাখা হয়। সাধারণ সম্পাদক পদে আগের সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান আজিজকে অব্যাহতি দিয়ে মো. হাফিজুল হককে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

এর আগে ২০১২ সালে মোস্তাককে সভাপতি ও আজিজকে সাধারণ সম্পাদক করে গঠন করা হয় একবছর মেয়াদী সিলেট ল' কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি।

বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে ল' কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি অনুমোদনের সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন এ কলেজ ছাত্রলীগের অনেক নেতা। অনেকে ফেসবুকে কমিটিকে প্রত্যাখান করে কমিটি গঠন প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চান।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিলেট ল' কলেজ ছাত্রলীগের একাধিক নেতা বলেন, রাতের আঁধারে মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নিজেদের অনুসারীদের দিয়ে এই কমিটি গঠন করেছেন। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা কমিটি গঠনের ব্যাপারে কিছুই জনে না। ল' কলেজ ছাত্রলীগ নেতারা এই কমিটি প্রত্যাখ্যান করবে বলে মন্তব্য করেন তারা।

ছাত্রলীগ নেতারা জানান, অনুমোদিত কমিটির সভাপতি মোস্তাক আহমদ বিবাহিত ও অছাত্র। ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রে কমিটিতে ঠাঁই পেতে অবিবাহিত হওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকলে মহানগর ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতারা গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করেছেন।

সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও ল' কলেজ ছাত্রলীগের নেতা রাশেদ ইসলাম নিজের ফেসবুক টাইমলাইনে ল' কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাক আহমদের বিয়ের একটি ছবি আপলোড করে লিখেছেন:

'সিলেট ল' কলেজের নতুন কমিটির সভাপতি নিচের ছবির এই বরটি। ডানপাশে সিলেট মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি ও বামপাশে মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এমরুল হাসান। এই ছবির বর মাসখানেক আগে আমেরিকা প্রবাসী এক নারীর সাথে বিবাহ বন্দনে আবদ্ধ হন। জানতে ইচ্ছা করে একজন বিবাহিত ও সদ্য এলএলবি পাস করা মোস্তাক কিভাবে সভাপতি হলো??? ছাত্রলীগের সংবিধান কি কলাপাতা নাকি।  না রাহাত ও এমরুল হাসান যা বলে তাই ছাত্রলীগের সংবিধান??'

এ ব্যাপারে সিলেট ল' কলেজ ছাত্রলীগের সদ্যবিদায়ী কমিটির সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান আজিজ বলেন, কমিটি মেয়াদোত্তীর্ন হয়ে পড়ায় আমরা গত ফেব্রুয়ারিতে সম্মেলনের আয়োজন করেছিলাম, কিন্তু কিছু সমস্যার কারণে সে সম্মেলন পন্ড হয়ে যায়। পরবর্তীতে ঈদের পর আমরা সম্মেলন করে কমিটি গঠনের পরিকল্পনা করেছিলাম। কিন্তু আমাদের কিছু না জানিয়েই রাতের আঁধারে মহানগর নেতারা কমিটি গঠন করে ফেলেছেন।

তিনি বলেন, মহানগর ছাত্রলীগের কমিটিই মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে পড়েছে। তারা নিজেরাই এখন অবৈধ। তারা ইউনিট কমিটি গঠন করে কিভাবে?

এ ব্যাপারে সিলেট মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি রাহাত তরফদারের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত