সিলেটটুডে ডেস্ক:

০৯ এপ্রিল, ২০২২ ২০:৫১

হৃদয় মন্ডলের মুক্তির দাবি বাকবিশিস সিলেটের

ধর্ম ও বিজ্ঞানের পার্থক্য নিয়ে ক্লাসরুমে আলোচনায় 'ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত' করার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া মুন্সীগঞ্জের স্কুল শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মন্ডলের অবিলম্বে ও নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (বাকবিশিস) সিলেট জেলা ও মহানগর শাখার নেতৃবৃন্দ।

বাকবিশিস এর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২২ মার্চ মুন্সীগঞ্জ উপজেলা সদরের পঞ্চসার ইউনিয়নের বিনোদপুর রামকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ও গণিতের সহকারী শিক্ষক হৃদয় মন্ডলকে ‘ধর্ম অবমাননা’র অভিযোগে পুলিশ আটক করে।

বাকবিশিস মনে করে, বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য গভীর ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। মৌলবাদী আগ্রাসন এখন এমনভাবে গ্রাস করেছে যে, মুক্তচিন্তাকে বাধাগ্রস্ত করছে। শিক্ষক হৃদয় মন্ডলকে হেনস্তার ঘটনা পরিকল্পিত ও সাজানো এবং প্রতিহিংসামূলক ভাবে অযৌক্তক কারণে গ্রেপ্তার করে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।

ইতোমধ্যে তা বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। শ্রেণি কক্ষের আলোচনাকে মোবাইলে ধারণ করার পাশাপাশি কয়েকজন ছাত্রের উস্কানিমূলক প্রশ্ন করার বিষয়টি পর্যালোচনা করলে বুঝা যায় ঘটনাটি কতটা পরিকল্পিত, সাজানো ও ষড়যন্ত্রমূলক। বাকবিশিস মনেকরে দেশে সাম্প্রদায়িকতাবাদী ষড়যন্ত্রকারীরা সর্বক্ষেত্রে কতটা শিকড় ছড়িয়েছে তা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোমলমতি ছাত্রদের ব্যবহার করার মধ্যদিয়ে প্রমাণিত হয়েছে। এই কুচক্রী মহল তাদের হীনস্বার্থ হাসিল করা, দেশের স্থিতিশীলতাকে বিপন্ন করা ও বিজ্ঞান শিক্ষাকে বিমুখ করার চক্রান্তে লিপ্ত । বাকবিশিস এই জঘন্য ঘটনার দ্রুত তদন্ত এবং ঘটনার সাথে জড়িত সাম্প্রদায়িক অপশক্তি সমূহের মূখোশ উন্মোচন ও দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করছে, একইসাথে হৃদয় মন্ডলের নিঃশর্ত মুক্তি ও তার পরিবারের নিরাপত্তা বিধানের দাবি জানিয়েছে।

বাংলাদেশ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (বাকবিশিস) সিলেট জেলা ও মহানগর শাখার বিবৃতি প্রদানকারী নেতৃবৃন্দরা হলেন বাকবিশিস কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যক্ষ ভাস্কর রঞ্জন দাশ, সিলেট জেলা শাখার সভাপতি অধ্যক্ষ মো. শামসুল ইসলাম, সিলেট মহানগর শাখার সভাপতি অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) অজয় কুমার রায়, জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক পৃথ্বিশ কান্তি ঘোষ, মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. সাখাওয়াত হোসেন আজাদ, জেলা সহ সভাপতি অধ্যক্ষ আবিদুর রহমান, জেলা সহ সভাপতি অধ্যাপক হিমাংশু রঞ্জন দাশ, মহানগর সহ সভাপতি অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) সাব্বির আহমদ, জেলা সহ সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক কাশমির রেজা, জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ এনামুল হক, মহানগর সাংগঠনিক সম্পাদক শিক্ষক ফারুক আহমদ।

উল্লেখ্য, গত ২২ মার্চ রাত সাড়ে ১০টায় হৃদয় মন্ডলের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃতভাবে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত, ধর্মীয় বিশ্বাসকে অপমান করা ও ধর্মীয় গ্রন্থের অবমাননার অভিযোগ এনে মামলা করেন একই স্কুলের অফিস সহকারী মো. আসাদ মিয়াঁ। এরপর শিক্ষক হৃদয় মন্ডলকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত