সিলেটটুডে ডেস্ক

১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ২৩:৫৭

পজিটিভ ঢাকা’র দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠান

সমাজের অসহায় মানুষকে সৃষ্টিশীল কার্যক্রম ও সেবা করার ব্রত নিয়ে কয়েক বছর ধরে কাজ করছে মানবিক সংগঠন ‘পজিটিভ ঢাকা’। হাসপাতালে থাকা অসহায় মানুষদের জন্য বিনামূল্যে রক্তের ব্যবস্থা করা, করোনার সময়ে ঘরে ঘরে ফ্রি অক্সিজেন সেবা পৌঁছে দেওয়া এবং ভিক্ষুকদের জন্য স্বাবলম্বীকরণ প্রকল্প দিয়ে কাজ শুরু করে 'পজিটিভ ঢাকা'।

পাশাপাশি সমাজের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে সংগঠনটি পরিচালনা করছে একটি ব্যতিক্রমী স্কুল। যার নাম 'পজিটিভ স্কুল'। রাজধানী ঢাকার বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের প্রাথমিক ও নৈতিক শিক্ষাদানের পাশাপাশি একবেলার খাবারের ব্যবস্থার মাধ্যমে পরিচালিত হয় এই স্কুলের কার্যক্রম।

বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত হয় মানবিক সংগঠন 'পজিটিভ ঢাকা'র দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। রেলওয়ে স্টেশনে থাকা ৫০ জন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে দিনটি উদযাপন করেছে সংগঠনটি। অনিশ্চিত জীবন নিয়ে পথে পথে বেড়ে ওঠা শিশুদের আনন্দ ও বিনোদন দেয়ার জন্য 'পজিটিভ ঢাকা' দিনটি পালন করেছে সম্পূর্ণ ভিন্ন আঙ্গিকে।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই আয়োজনে ছিল ৫০ জন শিশুর জন্য আনন্দদায়ক ৪টি খেলা। আর খেলাগুলোতে ১ম, ২য় ও ৩য় স্থান বিজয়ীদের পুরস্কৃত করা হয় । আনন্দ বিনোদনদানের পাশাপাশি এসব শিশুদের দেওয়া হয় একবেলার খাবার।

পজিটিভ স্কুলের কো-অর্ডিনেটর শাহিনা নদী এ প্রসঙ্গে বলেন, ''পজিটিভ স্কুল' ভালোবাসা, নৈতিকতা ও সুশিক্ষা ছড়িয়ে দেওয়ার একটি মানবিক প্লাটফর্ম। সমাজের উপেক্ষায় থাকা বড় একটি অংশ এই সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা। পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন শিশুগুলো খুব সহজেই আসক্ত হচ্ছে নানা ধরনের মাদকে। খাদ্যের অভাব ও মাদকের যোগান দিতে প্রতিনিয়তই জড়িয়ে যাচ্ছে চুরি, ছিনতাইয়ের মতো অপরাধের সাথে। তাই স্কুলে পাঠদানের পাশাপাশি আমরা চেষ্টা করছি এসব শিশুদের তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে। সেই সাথে আমরা নিশ্চিত করতে চাই এসব শিশুদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ।"

'ঢাকা পজিটিভ' মানবিক সংগঠনটি এপর্যন্ত অসহায় রোগীদের জন্য ২০০০ ব্যাগ রক্তের ব্যবস্থা করেছে। করোনা মহামারীর সময়ে ১০০টি পরিবারকে ফ্রি অক্সিজেন সেবা দিয়েছে। ভিক্ষুকদের মধ্যে বিতরণ করেছে ওজন মাপার মেশিন। এছাড়া অসহায় মানুষদের ভ্রাম্যমাণ চায়ের দোকানের জন্য সকল ধরনের সরঞ্জামের ব্যবস্থা করেছে। পাশাপাশি মার্জিয়া, সুলতানা হাসান, দিদার, আহাদ, মৌসুমি'র মায়ের মতো অসহায় মানুষদের চিকিৎসার জন্য দিয়েছে আর্থিক সহায়তা।

চলতি বছর মার্চ মাসে জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালে অনুষ্ঠিত হয় 'পজিটিভ ঢাকা'র এক ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠান। 'ভালো থাকুক ফুলগুলো' শিরোনামের ওই অনুষ্ঠানে ছিল ৪০ জন ক্যান্সার আক্রান্ত বাচ্চাদের ইচ্ছে পূরণের লক্ষ্যে নানারকম বিনোদন ও খাবারের আয়োজন। উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালের পরিচালক ডা. স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়, পেডিয়াট্রিল অনকোলোজি ডিপার্টমেন্টের সহযোগী অধ্যাপক ডা. রাশেদ জাহাঙ্গীর কবীরসহ ৩০ জন ডাক্তার ও নার্স এবং এসব শিশুদের অভিভাবক।

সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা এম.এম. আরিফুল ইসলাম বলেন, "পজিটিভ ঢাকা একটি অরাজনৈতিক, ইতিবাচক, সামাজিক ও মানবিক প্লাটফর্ম। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, প্রত্যেক শ্রেণি-পেশার মানুষেরই নিজ নিজ অবস্থান থেকে দেশ, সমাজ ও মানুষের জন্য ইতিবাচক অবদান রাখার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। এ লক্ষ্যেই কাজ করছে পজিটিভ ঢাকা। 'মানবতার কল্যাণে জেগে উঠুক প্রতিটি প্রাণ' মূলমন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে স্বপ্নের দেশ গড়ার লক্ষ্যে আন্তরিকভাবে সদা ন্যায়ের পক্ষে, নিঃস্বার্থভাবে কাজ করবে পজিটিভ ঢাকা। আর আমরা এমন কিছু স্বেচ্ছাসেবী পেয়েছি যারা আসলেই অসাধারণ। যে কোন পজিটিভ কাজের জন্য তারা সদা প্রস্তুত।"

আপনার মন্তব্য

আলোচিত