স্পোর্টস ডেস্ক

০৩ ডিসেম্বর, ২০১৫ ২৩:১৪

চিটাগাং ভাইকিংসকে হারাল মাশরাফির কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স

সিলেট সুপারস্টারসের মুখোমুখি হয়ে দুই বার ম্যাচ জিতেছিল চিটাগাং ভাইকিংস, এর বাইরে তাদের আর কোন জয় নেই। কেবল ঢাকাই নয় ঘরের মাঠেও হারতে হারতে সেমিফাইনালের রেস থেকে একপ্রকার বাদই পড়ে গেল চিটাগাং ভাইকিংস।

বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় পর্বের শেষ ম্যাচে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের কাছে ৫ উইকেটে হেরেছে তারা। জয়ের জন্য ১৩৭ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে কুমিল্লা দুই বল হাতে রেখেই ৫ উইকেটে ম্যাচ জিতে নিয়েছে।

কেবল অধিনায়কত্ব করার জন্যেই খেলেছেন মাশরাফি। বোলিং করেন নি। কুমিল্লার মালিকপক্ষও মাশরাফিকে জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি শুধু অধিনায়ক হিসেবে দলে থাকতে পারলেই চলবে। বোলিং করার প্রয়োজন নেই। আগের ম্যাচেও মাশরাফি বোলিং করুক, তা চাননি মালিকপক্ষ। মাশরাফি নিজেই সেটা জানিয়েছিলেন। বলেছেন, ‘উনি (কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের উপদেষ্টা আ হ ম মুস্তফা কামাল) আমাকে আগেই বলে দিয়েছেন, তুমি শুধু অধিনায়কত্ব করার জন্য খেল। বোলিং করা লাগবে না।’

সেই সঙ্গে বরিশালকে সরিয়ে পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষে উঠে আসল মাশরাফির কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। সাত ম্যাচে পাঁচ জয় নিয়ে তাদের পয়েন্ট ১০।

এই ম্যাচের মধ্য দিয়ে শেষ হল বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) চট্টগ্রাম পর্ব। দুদিন বিরতি দিয়ে আগামী রবিবার ঢাকায় শুরু হবে তৃতীয় পর্বের খেলা। ঢাকায় ফিরে আগামী ১০ ডিসেম্বর শেষ হবে প্রথম রাউন্ড। আর ফাইনাল ম্যাচের মধ্য দিয়ে টুর্নামেন্টের পর্দা নামবে ১৫ ডিসেম্বর।

ঢাকায় মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ৪ ম্যাচ খেলে মাত্র একটিতে জয় পেয়েছে চিটাগং ভাইকিংস। আর চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামেও ৪ ম্যাচ খেলে জিতেছে মাত্র একটিতে। তাই ৮ ম্যাচ খেলে মাত্র দুই জয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে থাকা চিটাগংয়ের জন্য পরবর্তী রাউন্ডে যাওয়ার আশা অনেকটা ফিকেই হয়ে গেছে।

বৃহস্পতিবার জয়ের জন্য ১৩৭ রানে লক্ষ্যে খেলতে নেমে কুমিল্লার ওপেনার লিটন দাস দলীয় ও ব্যক্তিগত ৩ রানে আউট হয়ে যান। তাসকিনের বলে জিয়াউর রহমানের হাতে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। শুরুতেই উইকেট হারিয়ে খানিকটা চাপে পড়ে কুমিল্লা। তবে অপর ওপেনার ইমরুল কায়েস আহমেদ শেহজাদকে সঙ্গে নিয়ে দ্বিতীয় উইকেটে ৪৮ রান তোলেন।

এতে চাপ খানিকটা কাটিয়ে ওঠে মাশরাফির দল। যদিও তখনই দিলশানের বলে উইকেটের পেছনে এনামুল হক বিজয়ের হাতে ধরা পড়েন ইমরুল। আউট হওয়ার আগে ২৮ বলে ৫ চারে তিনি করেছেন ৩৫ রান। পরে শেহজাদের সঙ্গে জুটি বাঁধেন আরেক পাকিস্তানী শোয়েব মালিক। এরপর বিলাওয়াল ভাট্টির বলে দলীয় ৯৪ রানে আউট হন শেহজাদ। কিছুটা শ্লথ গতিতে খেলা শেহজাদ ৪১ বল থেকে চারটি চারের মারে করেছেন ৩৭ রান।

শেহজাদ আউট হওয়ার স্বল্প সময়ের মধ্যেই এসার জাইদি ও শুভাগত হোম ফিরেন সাজঘরে। ১৭তম ওভারে দুজন ব্যাটসম্যানকেই আউট করেন মোহাম্মদ আমির। ৫ উইকেট হারালেও ষষ্ঠ উইকেটে শোয়েব মালিক ও অলক কাপালি ম্যাচ জিতেই মাঠ ছাড়েন। মালিক ২৩ বলে ৩৪ ও কাপালি ৯ বলে ১০ রান করে অপরাজিত থাকেন।

এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে নির্ধারিত ২০ ওভারে পাঁচ উইকেটে ১৩৬ রান সংগ্রহ করে চিটাগং ভাইকিংস। দলের হয়ে প্রথম ম্যাচে এক রান করে সমালোচিত হওয়া উমর আকমল এদিন ইনিংস সর্বোচ্চ ৪৯ রানে অপরাজিত থাকেন।

আগের ম্যাচের মতো ওপেনিং জুটিতে বৃহস্পতিবারও বড় কিছুর আভাস দিচ্ছিলেন তামিম-দিলশান। তবে বেশিদূর যেতে পারেননি। ৫১ রানে ভেঙেছে ওপেনিং জুটি। ২৩ বলে ২৭ রান করা তামিমকে সাজঘরে পাঠিয়েছেন কুমিল্লার শুভাগত হোম। আর জাইদির বলে বোল্ড হওয়ার আগে দিলশান করেছেন ৩৯ রানে।

এর আগেই ওয়ান ডাউনে নেমে খাতা খোলার আগেই রান আউট হয়ে ফেরেন এনামুল হক বিজয়। পরে দলকে শেষ পর্যন্ত টেনেছেন একাই উমর আকমল। অপর প্রান্তে থাকা মোহাম্মদ আমির (৮) ও জিয়াউর রহমান (২) ফেরেন দ্রুতই।

তাই শেষ পর্যন্ত পাঁচ উইকেটে ১৩৬ রানে শেষ হয় চিটাগাংয়ের ইনিংস। ৩৪ বলে চারটি চার ও দুটি ছক্কার মারে ৪৯ রান করে অপরাজিত থাকেন উমর আকমল। কুমিল্লার বোলারদের মধ্যে একটি করে উইকেট পান শুভাগত হোম, আবু হায়দার ও এসার জাইদি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত