সিলেটটুডে ডেস্ক

০৬ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০১:৫৬

কান্তজিউ মন্দিরে হামলা জঙ্গীদের কিনা তদন্ত করছে পুলিশ

বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে দিনাজপুরে হিন্দুদের একটি প্রাচীন স্থাপনা, কান্তজিউ মন্দির প্রাঙ্গনে আয়োজিত শতবছরের পুরোনো এক মেলা অনুষ্ঠানে বোমা বিষ্ফোরণের ঘটনায় জঙ্গি যোগশাজশ রয়েছে কি না, তাই এখন খতিয়ে দেখছে পুলিশ। খবর বিবিসির।

মেলা উপলক্ষ্যে চলা এক যাত্রাপালার প্যান্ডেলে গতকাল মধ্যরাতে এই বিষ্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে ছজন আহত হয়।

পুলিশ বলছে, একটি মোবাইল ফোনের ভেতরে বিষ্ফোরক পুরে সেটাকে বোমায় রূপান্তর করা হয়েছিল, তবে এটি খুব শক্তিশালী ছিল না।

দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলার কান্তজিউ মন্দিরটি তিনশো বছরের পুরোনো। বাংলাদেশের খুব গুরুত্বপূর্ণ এবং ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন স্থাপনা হিসেবেই এটিকে বিবেচনা করা হয়।

এই মন্দির প্রাঙ্গনে গত একশো বছরের বেশী সময় ধরে আয়োজিত হয়ে আসছে বার্ষিক রাশ মেলা। মাসব্যাপি এই মেলায় প্রতি বছর যাত্রা, সার্কাস-সহ বিনোদনের নানা আয়োজন থাকে। এবারও এই উৎসব শুরু হয়েছে দিন দশেক আগে।

এখানে যাত্রা প্রদর্শন করছিল ভোলানাথ অপেরা নামে একটি যাত্রাদল। গতরাতের প্রদর্শনীটিতে ছিল দর্শকে পূর্ণ। যাত্রানুষ্ঠান শুরু হবার কিছুক্ষণ পরেই সেখানে ঘটে বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে জানান সাংবাদিক আসাদুল্লাহ সরকার।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, আহতদের মধ্যে একজন বাদে বাকী সবাই আশঙ্কামুক্ত। পুলিশ বলছে, একটি মোবাইল ফোনের ভেতরে বিষ্ফোরক পুরে সেটিকে বোমায় পরিণত করা হয়েছিল। কাহারোল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল মজিদ জানান, ঘটনাস্থল ও আহতদের অবস্থা বিবেচনা করে তাদের মনে হয়েছে এটি তেমন শক্তিশালী কোনও বোমা ছিল না।

এই হামলার মোটিভ এখনো স্পষ্ট নয়। পুলিশ যে কয়েকটি সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে তারমধ্যে রয়েছে জঙ্গি হামলা, ধর্মীয় সম্প্রীতি ক্ষুন্ন করবার ষড়যন্ত্র এবং মেলা আয়োজনকে কেন্দ্র করে ব্যক্তিগত বিরোধ। তবে কারণ যেটাই হোক এই হামলা ছিল পরিকল্পিত, বলছেন দিনাজপুরের পুলিশ সুপার রুহুল আমিন।

কান্তজিউ মন্দিরটি যে ট্রাস্টি বোর্ড পরিচালনা করে, সেটির একজন সদস্য সুব্রত মজুমদার বলছিলেন, দিনাজপুরে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ক্ষুন্ন করবার চেষ্টার বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে, ফলে এটাও যে সেগুলোরই ধারাবাহিতায় ঘটতে পারে, সেই সম্ভাবনা তিনি উড়িয়ে দিচ্ছেন না।

এদিকে এই হামলার পর পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কয়েকজনকে আটক করেছে বলে জানা যাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট কোনও অভিযোগ আনা হয়নি। ওদিকে, হামলার পর প্রশাসন মেলা প্রাঙ্গণে থাকা যাত্রা, সার্কাস ও র‍্যাফেল ড্রয়ের প্যান্ডেল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দিয়েছে। তবে সেখানে রাসমেলা চলমান থাকবে বলে জানিয়েছে দিনাজপুর জেলা প্রশাসন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত