স্পোর্টস ডেস্ক

২০ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:৩৫

বাংলাদেশ-বাধা সহজেই টপকাল ভারত

ব্যাটিং-স্বর্গে ২৫৭ রানের লক্ষ্য তেমন কিছুই নয়। এটা আরও সহজ হয়ে যায় যখন বিরাট কোহলি তার নামের প্রতি সুবিচার করেন। ফলে ভারত খুব সহজেই বাংলাদেশ-বাধা টপকে টানা চার ম্যাচ জিতেছে বিশ্বকাপে। 

সারা ম্যাচে নিরুত্তাপ থাকা ম্যাচটা জমে উঠল শেষভাগে গিয়ে। ক্যারিয়ারের ৪৮তম সেঞ্চুরি পেতে কোহলির দরকার ২ রান, দলের জয়ের জন্যও দরকার ঠিক ২। ৪২তম ওভারের প্রথম বলটি ডাউন দ্য লেগে করেছিলেন নাসুম। তবে আম্পায়ার দেননি ওয়াইড।

ওয়াইড হয়ে গেলে সেঞ্চুরি পাওয়া কঠিনই হতো কোহলির। আম্পায়ারের বদান্যতায় নাসুমকে ছয় মেরে সেঞ্চুরি কোহলির। তাঁর সেঞ্চুরিতে ভারতও ৭ উইকেটের জয় পেয়েছে। ঘরের মাঠের বিশ্বকাপের ৪ ম্যাচের প্রতিটিতেই জিতল ভারত। আর বাংলাদেশ পেল টানা তিন ম্যাচ হারার তিক্ত স্বাদ।

ভারতকে ২৫৭ রানে আটকাতে হলে শুরুতেই উইকেট প্রয়োজন ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু শুরুতে প্রতিপক্ষের উইকেট তুলে নিতে ব্যর্থ হয়েছেন শরীফুল ইসলাম–মোস্তাফিজুর রহমানরা। উল্টো বাংলাদেশের বোলাররা বেধড়ক পিটুনি খেয়েছেন।

ওপেনিংয়ে নেমে রোহিত শর্মা ও শুবমান গিল কোনো সুযোগই দিচ্ছিল না বাংলাদেশকে ম্যাচে ফিরতে। তবে ১৩ তম ওভারে এসে বাংলাদেশ ম্যাচে ফেরার সুযোগ পায়। ওভারের তৃতীয় বলে রোহিত ছক্কা মারলেও ফিরতি বলেই প্রতিশোধ নেন হাসান মাহমুদ। ভারতীয় অধিনায়ককে তাওহীদ হৃদয়ের হাতে ক্যাচ তুলতে বাধ্য করেন উদীয়মান পেসার।

৪৮ রানে আউট হলে গিলের সঙ্গে রোহিতের উদ্বোধনী জুটি ৮৮ রানে থামে। ভারতীয় অধিনায়ক ২ রানের জন্য না পেলেও বিশ্বকাপে প্রথম ফিফটি পেয়েছেন গিল। তবে ফিফটি করার পরেই ৫৩ রানে মেহেদী হাসান মিরাজের বলে আউট হন তিনি। দুই সতীর্থ আউট হলেও অন্যদের নিয়ে বাকি কাজটুকু সাড়েন বিরাট কোহলি। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৪৮ তম সেঞ্চুরি করে ভারতকে ৭ উইকেটের জয় এনে দিয়েছেন সাবেক অধিনায়ক। তাঁর অপরাজিত ১০৩ রানের বিপরীতে ৩৪ রানে ব্যাটিংয়ে থাকেন লোকেশ রাহুলও।

এর আগে পুনেতে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে দুর্দান্ত শুরু পায় বাংলাদেশ। গত কয়েক মাস ধরেই বাংলাদেশের ওপেনিং জুটি নিয়ে যে চিন্তা সেই জুটি আজ ভারতের বিপক্ষে দুর্দান্ত শুরু এনে দিয়েছে। তানজিদ হাসান তামিম ও লিটন দাস উদ্বোধনী জুটিতে ৯৩ রান করেন। যা বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ওপেনিং জুটিতে সর্বোচ্চ। আগের সর্বোচ্চ রান ছিল ৬৯। ১৯৯৯ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে এই কীর্তি গড়েছিলেন মেহরাব হোসেন ও শাহরিয়ার হোসেন।

দুর্দান্ত শুরুটাতে একটা সময় তিন শ রানের স্বপ্নও দেখছিল বাংলাদেশ। কিন্তু তানজিদের বিদায়ে উল্টো চিত্রের দেখা মিলেছে। ক্যারিয়ারে প্রথম ফিফটি করে উদীয়মান ব্যাটার ৫১ রানে আউট হলে নিয়মিত উইকেট হারাতে থাকে। একসময় স্কোরকার্ড দাঁড়ায় ১৩৭ রানে ৪ উইকেট। এ সময় বিশ্বকাপে দ্বিতীয় ফিফটি করে চতুর্থ ব্যাটার হিসেবে আউট হন লিটনও। ৬৬ রানে রবীন্দ্র জাদেজাকে লং অফে বড় শট খেলতে গিয়ে জীবন দিয়ে আসেন শুবমান গিলের হাতে।

সেখান থেকে ম্যাচের হাল ধরার চেষ্টা করেন মুশফিকুর রহিম ও তাওহীদ হৃদয়। ধাক্কা সামলিয়ে বেশ ভালোই খেলছিলেন বগুড়ার দুই কীর্তি ব্যাটার। লিটনের মতো হঠাৎ বড় শট খেলতে গিয়ে আউট হন হৃদয়ও। তাঁর আউটের মধ্যে দিয়ে দুজনের ৪২ রানের জুটিও ভেঙে যায়। পরে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে নিয়ে ফিনিশিংয়ের চেষ্টা করেন মুশফিক। কিন্তু নিজে ৩৮ রানে আউটে হয়ে ভায়রা ভাই রিয়াদকে একা রেখে যান উইকেটরক্ষক ব্যাটার।
৪৬ বলে ৩৮ রানের ইনিংস খেলার পথে একটি মাইলফলক ছুঁয়েছেন মুশফিক। দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে এক হাজার রানের কীর্তি। তাঁর আগে এই কীর্তি গড়েছেন সাকিব আল হাসান। সাকিবের ১২০১ রানের বিপরীতে ১০৩৪ রান মুশফিকের।

ফিনিশার হিসেবে পরিচিত মাহমুদউল্লাহ আজ আরেকবার নিজের দক্ষতার প্রমাণ দিয়েছেন। নাসুম আহমেদের সঙ্গে সপ্তম উইকেটে ৩২ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশকে চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ এনে দিয়েছেন তিনি। ৪৬ রানের ইনিংস খেলে বাংলাদেশকে ৮ উইকেটে ২৫৬ রান এনে দিয়েছেন তিনি। ৩৬ বলের ইনিংসে সমান ৩টি করে চার ও ছক্কা হাঁকিয়েছেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। ইনিংসের শেষ বলে ছক্কা হাঁকিয়ে আড়াইশোর ওপর স্কোর দাঁড় করান পেসার শরীফুল ইসলাম।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত