
২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ০৪:০৬
এশিয়া কাপের ফাইনালের যেতে বাংলাদেশের দরকার ছিল ১৩৬ রান। কিন্তু পারলেন না ব্যাটাররা। পাকিস্তানি বোলারদের কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ করে ফাইনালে যাওয়া হলো না টাইগারদের।
সেমি-ফাইনালে রূপ নেওয়া সুপার ফোর পর্বের ম্যাচে ১১ রানের জয়ে বাংলাদেশকে টপকে ফাইনালে ঠিকানা পেয়ে গেল পাকিস্তান।
দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াাম বৃহস্পতিবার পাকিস্তানকে ১৩৫ রানে বেঁধে রেখে বাংলাদেশ আটকে যায় ১২৪ রানে।
বাংলাদেশের হয়ে দারুণ বোলিংয়ের ধারা ধরে রেখে তিন উইকেট শিকার করেন তাসকিন আহমেদ, রিশাদ আহমেদ ও শেখ মেহেদি হাসান নেন দুটি করে।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ওভারেই সাহিবজাদা ফারহানকে হারায় পাকিস্তান। তাকে বিদায় করেন তাসকিন আহমেদ। বাংলাদেশের তৃতীয় বোলার হিসেবে টি-টোয়েন্টি উইকেটের সেঞ্চুরি স্পর্শ করেন ৩০ বছর বয়সী পেসার।
পরের ওভারে শেখ মেহেদি হাসানের বল মিড অনে তুলে দেন সাইম আইয়ুব।
প্রথম দুটি উইকেটে ক্যাচ নেওয়া রিশাদ হোসেন বোলিংয়ে এসে আউট করেন আরও দুজনকে। জায়গা বানিয়ে খেলার চেষ্টায় লং অফ সীমানায় ধরা পড়েন ফাখার জামান (২০ বলে ১৩)। রিশাদের পরের শিকার আগের ম্যাচের ম্যাচ-সেরা হুসেইন তালাত।
দ্বিতীয় স্পেলে আক্রমণে ফিরে কাটারে সালমান (২৩ বলে ১৯) বিদায় করেন মুস্তাফিজ। পাকিস্তানের রান তখন ৫ উইকেটে ৪৯। পঞ্চাশ ছুঁতেই প্রায় ১১ ওভার লেগে যায় তাদের।
ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন পাওয়া শাহিন শাহ আফ্রিদি ১ রানে সোহানের কাছে জীবন পেয়ে বিশাল দুটি ছক্কা মারেন তানজিম ও তাসকিনকে। তবে তাসকিনের ফুল টস আকাশে তুলে তিনি বিদায় নেন ১৩ বলে ১৯ করে।
মোহাম্মাদ নাওয়াজ শূন্য রানেই রক্ষা পান পারভেজ হোসেন ইমন ক্যাচ নিতে না পারায়। সেটির খেসারত কিছুটা দিতে হয় দলকে। দুটি ছক্কায় ১৫ বলে ২৫ রানের ইনিংস খেলেন এই বাঁহাতি। ইনিংসের সেরা ৩৮ রানের জুটি গড়েন তিনি মোহাম্মাদ হারিসের সঙ্গে।
দলের সর্বোচ্চ ৩১ রান (২৩ বলে) আসে হারিসের ব্যাট থেকে। নিজের বলে দারুণ রিফ্লেক্স ক্যাচ নিয়ে তাকে থামান শেখ মেহেদি। শেষ দিকে ৯ বলে ১৪ রানে অপরাজিত থাকেন ফাহিম আশরাফ। প্রথম ১৩ ওভারে ৬৫ রান করা পাকিস্তান পরের ৭ ওভারে তোলে ৭০।
রান তাড়ায় বাংলাদেশ প্রথম ওভারেই হারায় পারভেজ হোসেন ইমনকে। এই সংস্করণে প্রথম ওভারে উইকেট প্রাপ্তির রেকর্ডকে ২২ শিকারে নিয়ে যান আফ্রিদি।আগের দুই ম্যাচে ফিফটি করা সাইফ হাসান চেষ্টা করেন পাল্টা আক্রমণের। ফাহিম আশরাফের বলে ছক্কার পর হারিস রউফের ওভারে ছক্কা ও চার মারেন তিনি দারুণ শটে।
পঞ্চম ওভারে দুই ব্যাটসম্যান প্রায় এক প্রান্তে চলে গেলেও রান আউট করতে পারেনি পাকিস্তান। তবে আফসোসও করতে হয়নি। দুই ব্যাটসম্যান উইকেট উপহার দিয়ে বিদায় নেন। আফ্রিদিকে উড়িয়ে মারার চেষ্টায় আউট জন হৃদয় (১০ বলে ৫)। রউফের বলে পয়েন্টে ধরা পড়েন সাইফ (১৫ বলে ১৮)। আফ্রিদির একটি আলগা ডেলিভারি পেয়ে ছক্কায় উড়িয়ে দেন চারে নামা শেখ মেহেদি। ক্রিজে গিয়েই রউফের গতির কারণে ব্যাটের কানায় লেগে ছক্কা পেয়ে যান সোহান। উইকেট বিলিয়ে দেওয়ার মিছিলে সঙ্গী হন পরে শেখ মেহেদিও (১০ বলে ১১)।
সোহানের ইনিংসের সমাপ্তি হয় ২১ বলে ১৬ রান করে। দলের বিপদ আরও বাড়িয় বাজে শটে উইকেট হারান অধিনায়ক জাকেরও (৯ বলে ৫)।
তার পরও বাংলাদেশের আশা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন শামীম হোসেন। দুটি ছক্কা মারা ছাড়াও দারুণ খেলছিলেন তিনি। কিন্তু আফ্রিদির স্লোয়ারে রিভার্স ল্যাপ খেলে তার ২৫ বলে ৩০ রানের ইনিংস শেষ হওয়ায় বাংলাদেশের সম্ভাবনাও কার্যত শেষ হয়ে যায়।
ফাইনালে রোববার লড়বে ভারত-পাকিস্তান। এর আগে শুক্রবার মুখোমুখি হবে ভারত-শ্রীলঙ্কা।
স্কোর:
পাকিস্তান: ২০ ওভারে ১৩৫/৮ (ফারহান ৪, ফাখার ১৩, সাইম ০, সালমান ১৯, তালাত ৩, হারিস ৩১, আফ্রিদি ১৯, নাওয়াজ ২৫, ফাহিম ১৪*, রউফ ৩*; তাসকিন ৪-০-২৮-৩, মেহেদি ৪-০-২৮-২, তানজিম ৪-০-২৮-০, মুস্তাফিজ ৪-০-৩৩-১, রিশাদ ৪-০-১৮-২)।
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১২৪/৯ (সাইফ ১৮, পারভেজ ০, হৃদয় ৫, শেখ মেহেদি ১১, সোহান ১৬, শামীম ৩০, জাকের ৪, তানজিম ১০, রিশাদ , তাসকিন ৪, মুস্তাফিজ ৬; আফ্রিদি ৪-০-১৭-৩, ফাহিম ২-০-১৮-০, রউফ , আবরার ৩-০-১৩-০, সাইম ৪-০-১৬-২, নাওয়াজ ৩-০-১৪-১)
ফল: পাকিস্তান ১১ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: শাহিন শাহ আফ্রিদি।
আপনার মন্তব্য