সাব্বির এ. চৌধুরী, লন্ডন থেকে

৩১ মে, ২০১৭ ১৭:৫৬

লন্ডনে ক্রিকেট উন্মাদনা, গ্যালারি মাত করতে প্রস্তুত বাংলাদেশিরা

ছবি: আইসিসি

দেশের মাঠে খেলা হলে গ্যালারি থাকে লাল-সুবজময়। টাইগার সমর্থকদের চিৎকারে প্রতিপক্ষের বুকে ধরে কাঁপন। আর মাশরাফিরা পান আরও তেতে উঠার জ্বালানি। কিন্তু বিদেশের মাঠে সে সুবিধা কি পাওয়া যায়? এবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ঘটতে যাচ্ছে ব্যতিক্রম। বাংলাদেশের বাইরে আরেকটা বাংলাদেশের ছবি দেখা যেতে পারে লন্ডনে।ওভালের গ্যালারিতে যে জন্মভূমির জন্য গলা ফাটাবেন প্রবাসী্রা।

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির উদ্বোধনী ম্যাচে বৃহস্পতিবার (১ জুন) বাংলাদেশ সময় বিকেল পৌনে চারটায় মাঠে নামবে বাংলাদেশ আর ইংল্যান্ড। এই ম্যাচকে ঘিরে লন্ডনে চলছে সাজ সাজ রব। উৎসব, উম্মাদনার বেশিরভাগটাই অবশ্য মাতিয়ে রেখেছেন বাংলাদেশিরা। কি অফিস কি রেস্টুরেন্ট সব জায়গায় এক কথা , খেলা দেখতে যাচ্ছো? কোন স্ট্যান্ডে বসছো ? পূর্ব লন্ডলের বিভিন্ন  জায়গায় পড়ছে প্রিয় দলের জার্সি কেনার ধুম । সেই সুযোগে মুনাফা হাতিয়ে নিচ্ছে মৌসুমি জার্সি ব্যবসায়ী'রা । প্রায় একমাস আগেই প্রথম ম্যাচের সব টিকেট বিক্রি হয়ে গেছে। অনেকে অবশ্য এখনো চেষ্টা করছেন টিকেট বাগানোর। ব্রিকলেন আর ইস্ট লন্ডনে নাকি টিকেটের কালোবাজারিও শুরু হয়ে গেছে! বৃহস্পতিবার লন্ডনে স্কুল হলিডে থাকায় প্রবাসীদের তৃতীয় প্রজন্মরাও যাবে খেলা দেখতে। বাবা-মায়েরা চান তাদের ফেলে আসা দেশের জন্য চিৎকার করুক সন্তানরাও।

আবু সাইদ যাচ্ছেন বসবাস করেন পূর্ব লন্ডনের এসেক্সে । স্বপরিবারে  যাচ্ছেন খেলা দেখেতে। তাঁর স্ত্রী সাউলের জন্ম লন্ডনেই। তবু ইংল্যান্ড নয় সাপোর্ট করবেন বাংলাদেশকে। জানতে চাইলে এক কথায় বললেন, 'বাংলাদেশ আমার শেকড়, বাবা মায়ের জন্ম তো ওখানেই।'



খেলা শুরু হবে স্থানীয় সময়  সকাল সাড়ে ১০টায়। টিকেট ম্যানেজ করে অনেকে তাই ছুটছেন ছুটি ভাগাতে। শিফটে যারা কাজ করেন, তারা সারারাত কাজ করে মাঠে আসবেন প্রিয় দলকে সমর্থন করতে। কেউ কেউ আসবেন যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন এলাকা থেকে। বাড়তি ছুটি জোগাড় করে আগেবাগেই রওয়ানা দিয়েছেন তারা। গাড়িতে লাগিয়ে রেখেছেন বাংলাদেশের পতাকা, পরনে লাল সবুজ জার্সি। আর সাথে মশরাফি-সাকিবদের পোস্টার।

স্কটল্যান্ড থেকে খেলা দেখতে আসছেন দিলওয়ার মিয়া। জীবন প্রথম কোন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ দেখতে রোমাঞ্চিত তিনি। মুঠোফোনে জানালেন, 'বাংলাদেশের খেলা হলেই টিভিতে বসে যাই, মিস করিনা। এই প্রথম আমার দেশের খেলা সরাসরি দেখব। খুব এক্সাইটেড লাগছে। দেশের মাটিতে পা রাখলে যেমন লাগে ঠিক তেমন।'


জানা গেছে, ২৫ হাজার দর্শক ধারন করা ঐতিহ্যবাহী ওভাল স্টেডিয়ামের বড় একটা অংশই থাকবে টাইগার সমর্থকদের দখলে। হোস্ট হয়েও তাই একপেশে গ্যালারি সাপোর্ট পাচ্ছে না ইংল্যান্ড। বরং বাংলাদেশিদের আওয়াজই থাকতে পারে চড়া।  মাশরাফিরা পরের মাঠে খেলতে যাওয়ার অস্বস্তি ভুলতেই পারেন। গ্যালারিতেই যে থাকবে ঘরের আমেজ, নিজ দেশ। থাকবে চেনা আওয়াজ 'বাংলাদেশ' 'বাংলাদেশ'। গ্যালারির মতো মাঠেও দাদাগিরি দেখাতে পারলে ঘটতে পারে নতুন ইতিহাস।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত