স্পোর্টস ডেস্ক

২৩ জুলাই, ২০১৭ ১৭:৫০

মোনাকোর ডায়মন্ড লিগে সোনা জিতলেন বোল্ট

আর বড়জোর দিন বিশেক। তারপর উসাইন বোল্ট অতীত হয়ে যাবেন, নামের আগে ‘সাবেক’ বসবে, আর কখনো ট্র্যাকে দেখা যাবে না ধরণির দ্রুততম মানবকে! ভাবতেই কী অবিশ্বাস্য লাগছে, তাই না? আগেই বলে রেখেছেন আগামী মাসে লন্ডন বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ দিয়ে ক্যারিয়ারের ইতি টানবেন।

শেষটা যত ঘনিয়ে আসছে, অ্যাথলেটিকস বিশ্বে ততই জোরেশোরে বাজতে শুরু করেছে বোল্টের বিদায়-রাগিণী। পরশু মোনাকোতে নিজের বছর-সেরা টাইমিং গড়ে ১০০ মিটার জেতার পর বোল্ট নিজেও তাই কিছুটা আবেগাপ্লুত।

বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের আগে এটাই তাঁর শেষ টুর্নামেন্ট। মোনাকোর ডায়মন্ড লিগে তাই বোল্টকে দেখতে কানায় কানায় পূর্ণ ছিল ১৭ হাজার ধারণক্ষমতার গ্যালারি। এ গ্রহের দ্রুততম মানবও হতাশ করেননি তাঁর ভক্তদের। ৯.৯৫ সেকেন্ড সময় নিয়ে পেছনে ফেলেছেন আমেরিকার আইসিয়া ইয়ংকে (৯.৯৮)। দক্ষিণ আফ্রিকার আকানি সিম্বিনে (১০.০২ সেকেন্ড) হয়েছেন তৃতীয়।

এই মৌসুমে এ নিয়ে তিনবার ১০০ মিটার দৌড়ালেন ৩০ বছর বয়সী বোল্ট। ১০ সেকেন্ডের নিচে টাইমিং এই প্রথম। এমনিতে বড় আসরে সেরাটা দিতে তাঁর জুড়ি নেই। ২০১২ লন্ডন অলিম্পিক বা ২০১৬ রিও অলিম্পিকের আগে তাঁকে ঘিরে যে অল্পবিস্তর দ্বিধাদ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছিল, সেগুলো দূর করে দিয়েছেন আসল সময়ে। এবার অবশ্য লন্ডন চ্যাম্পিয়নশিপের আগেই পাওয়া গেল বোল্টের স্বরূপে ফেরার আভাস। তবে জ্যামাইকান কিংবদন্তি এখনো নিজেকে নিয়ে পুরোপুরি সন্তুষ্ট নন, ‘আমি সঠিক পথেই আছি। তবে এখনো অনেক উন্নতি করতে হবে। ১০ সেকেন্ডের নিচে টাইমিং করতে পারা দারুণ ব্যাপার। কিন্তু লন্ডনের জন্য আমাকে আরও পরিশ্রম করতে হবে।’

অলিম্পিকে ৮টি সোনা, বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে ১১টি। সর্বশেষ তিনটি অলিম্পিকেই ১০০ মিটার, ২০০ মিটার ও ১০০ মিটার রিলেতে সোনা জিতেছেন। তবে ২০০৮ বেইজিং অলিম্পিকে সোনাজয়ী জ্যামাইকা দলে তাঁর সতীর্থ নেস্টা কার্টারের ডোপ নেওয়ার বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় একটি সোনা ফিরিয়ে দিতে হয়েছে বোল্টকে। ২০১১ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের ১০০ মিটারে ডিসকোয়ালিফাইড হয়েছিলেন। এর বাইরে ২০০৯ থেকে সব কটি বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপেই ১০০ মিটার, ২০০ মিটার ও ১০০ মিটার রিলেতে সোনা জিতেছেন।

তবে এবার লন্ডন বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে ২০০ মিটারে অংশ নেবেন না, শুধু ১০০ মিটার স্প্রিন্ট আর রিলেই তাঁর ইভেন্ট। আগামী ৫ আগস্ট ছেলেদের ১০০ মিটারের ফাইনাল। সব ঠিক থাকলে ১২ আগস্ট রিলের ফাইনালে শেষবারের মতো ট্র্যাকে নামতে পারেন বোল্ট। বিদায়বেলাটা ঘনিয়ে আসছে দেখে বোল্ট নিজেও আবেগাপ্লুত। মোনাকোর ডায়মন্ড লিগ আয়োজকদের দেওয়া আজীবন সম্মাননা ট্রফিটা হাতে নিয়ে বললেন, ‘একধরনের মিশ্র অনুভূতি হচ্ছে। আমার ক্যারিয়ারের কথা ভেবে আনন্দিত। আর দুঃখ লাগছে যে এটা শেষ হয়ে যাচ্ছে।’

ট্র্যাকের সঙ্গে এত দিনের সম্পর্ক শেষ হয়ে যাওয়ার পর কী করবেন? হাসিমুখেই বললেন, ‘পরিবার নিয়ে লন্ডনে কিছুদিন ঘুরে বেড়াব। মৌসুম শেষের পর কী করব, সেটা অবশ্য এখনো ভাবিনি।’
সূত্র: এএফপি, রয়টার্স

আপনার মন্তব্য

আলোচিত