সিলেটটুডে স্পোর্টস ডেস্ক

০৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ১৫:৪৩

সিরিজ ড্র করতে অস্ট্রেলিয়ার টার্গেট ৮৬ রান

ঢাকায় প্রথম টেস্টে অস্ট্রেলিয়াকে ২০ রানে হারিয়ে উড়তে থাকা বাংলাদেশ চট্টগ্রামে এসে খেই হারিয়ে ফেলল। দ্বিতীয় ইনিংসে ১৫৭ রানে গুটিয়ে গিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে মাত্র ৮৬ রানের টার্গেট দিতে পেরেছে মুশফিকুর রহীমের দল। বাংলাদেশের ইনিংস ধসিয়ে দিয়ে নায়ক অফ স্পিনার ন্যাথান লায়ন। ৬০ রানে ৬ উইকেট পেয়েছেন তিনি। দুই ইনিংস মিলিয়ে তুলেছেন ১৩ উইকেট।

এর আগে ব্যাটিংয়ে নেমে দ্রুত সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে নিজেদের প্রথম তিন ব্যাটসম্যানকে হারায়। বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতেই বিদায় নেন ওপেনার সৌম্য সরকার। ৯ রান করে অজি পেসার প্যাট কামিন্সের বলে স্লিপে ক্যাচ দেন তিনি। ঢাকা টেস্টের পর চট্টগ্রামেও ব্যর্থতার পরিচয় দেন সৌম্য। এদিকে সৌম্যর বিদায়ের পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি আরেক ওপেনার তামিম ইকবাল। নাথান লায়নের বলে ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে গিয়ে স্ট্যাম্পিং হন তিনি। ১২ রান আসে তার ব্যাট থেকে।

তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে বিদায় নেন ইমরুল কায়েস। নাথান লায়নের বলে শটে থাকা গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে ক্যাচ দিয়ে ১৫ রানে ফেরেন এ বাঁহাতি। ইমরুলের বিদায়ের ঠিক পরই প্যাভিলিওনমুখী হন সাকিব আল হাসান। মাত্র ২ রান করে নাথান লায়নের তৃতীয় শিকার হন তিনি। স্টিভ ও’কিফের বলে ৫ রানে আউট হন নাসির হোসেন। মধ্যাহ্ন বিরতি থেকে ফিরে বেশিক্ষণ উইকেটে টিকতে পারেননি সাব্বির রহমান। মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে ৫৪ রানের জুটি গড়ে নাথান লায়নের শিকার হন তিনি। ৫৯ বলে ব্যক্তিগত ২৪ করে স্ট্যাম্পিং হন সাব্বির।

মুশফিক আর মুমিনুলের ব্যাটের দিকে তাকিয়ে ছিল বাংলাদেশ। টপঅর্ডারের ছয় উইকেট হারিয়ে ব্যাট করছিলেন স্বাগতিক দুই ব্যাটসম্যান। তবে, ইনিংসের ৫৩তম ওভারে প্যাট কামিন্সের বলে খোঁচা দিতে গিয়ে উইকেটরক্ষক ম্যাথু ওয়েডের গ্লাভসবন্দি হন মুশফিক। বিদায়ের আগে ১০৩ বলে ৩১ রান করেন স্বাগতিক দলপতি। মুমিনুলের সঙ্গে স্কোরবোর্ডে আরও ৩২ রান যোগ করেন মুশফিক। দলীয় ১২৯ রানের মাথায় সপ্তম উইকেটের পতন ঘটে বাংলাদেশের। ইনিংসের ৬০তম ওভারে বিদায় নেন মুমিনুল হক। ৬১ বলে ২৯ রান করে লায়নের বলে প্যাট কামিন্সের তালুবন্দি হন তিনি। দলীয় ১৪৯ রানের মাথায় বাংলাদেশ তাদের অষ্টম উইকেট হারায়।

৩২ বলে মাত্র ৪ রান করে লায়নের ষষ্ঠ শিকারে সাজঘরে ফেরেন বোল্ড হওয়া তাইজুল। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে বিদায় নেন মোস্তাফিজ। ও’কিফের বলে বোল্ড হওয়ার আগে মোস্তাফিজ কোনো রান করতে পারেননি। মিরাজ ৫৪ বলে ১৪ রান করে অপরাজিত থাকেন। নাথান লায়ন ৬টি, ও’কিফ ২টি উইকেট দখল করেন।

এর আগে চতুর্থ দিন কোনো রানই যোগ করতে পারেনি অজিরা। দ্বিতীয় ওভারে বোলিংয়ে এসে নাথান লায়নকে তুলে নেন মোস্তাফিজুর রহমান। এরই সঙ্গে বাংলাদেশ ইনিংসে সর্বোচ্চ ৪টি উইকেট লাভ করেন তিনি। স্লিপে থাকা ইমরুল কায়েসের ক্যাচে বিদায় নেন লায়ন। ফলে ৭২ রানের লিড পায় অস্ট্রেলিয়া।

সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের তৃতীয় দিন শেষ বিকেলে বাংলাদেশি বোলারদের দাপুটে বোলিংয়ে ম্যাচে ফেরে টাইগাররা। ৩৭৭ রানে ৯ উইকেট হারিয়ে অজিরা দিন শেষ করে। তবে ৭২ রানের লিড নেয় সফরকারীরা। বাংলাদেশ নিজেদের প্রথম ইনিংসে সবকটি উইকেট হারিয়ে ৩০৫ রান করেছিল।

অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসে সেঞ্চুরির দেখা পান ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার। ২৩৪ বল মোকাবেলায় ৭টি চারের সাহায্যে ১২৩ করে মোস্তাফিজের বলে আউট হন তিনি। চলতি সিরিজে ওয়ার্নারের এটি ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরি। দলের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৮২ রান করেন পিটার হ্যান্ডসকম্ব।

টাইগার বোলারদের মধ্যে দারুণভাবে ফিরে আসেন কাটার মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমান। টাইগার এই পেসার নেন ৪টি উইকেট। ৩ উইকেট পান স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ। একটি করে উইকেট লাভ করেন সাকিব আল হাসান ও তাইজুল ইসলাম।

এর আগে স্বাগতিক অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম ও সাব্বির রহমানের হাফসেঞ্চুরিতে ৩শ’ রানের গন্ডি পার হয় বাংলাদেশ। মুশফিক ৬৮ ও সাব্বির ৬৬ রান করেন। নাসির হোসেনের ব্যাট থেকে আসে ৪৫ রান। অজি বোলারদের মধ্যে একাই ৭ উইকেট তুলে নেন স্পিনার নাথান লায়ন। ২টি উইকেট লাভ করেন আরেক স্পিনার অ্যাস্টন অ্যাগার।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত