স্পোর্টস ডেস্ক

১৭ জুন, ২০১৫ ০৮:৩৮

উরুগুয়েকে হারাল আর্জেন্টিনা

: কোপা আমেরিকার ৪৪তম আসরে গ্রুপ ‘বি’র হাইভোল্টেজ ম্যাচে মাঠে নেমেছিল ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন উরুগুয়ে এবং গত বিশ্বকাপের রানার্সআপ আর্জেন্টিনা। সার্জিও আগুয়েরোর দুরন্ত হেডে করা একমাত্র গোলে জয় পেয়েছে মেসি বাহিনী।

গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে আর্জেন্টিনা ২-২ গোলে ড্র করে প্যারাগুয়ের বিপক্ষে। আর নিজেদের প্রথম ম্যাচে জয় পায় উরুগুয়ে। ১-০ গোলে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা হারায় জ্যামাইকাকে।

এ ম্যাচের শুরুর একাদশে আর্জেন্টাইন কোচ জেরার্ড টাটা মার্টিনো ৪-৩-৩ ফরমেশনে তার শিষ্যদের খেলান। শুরুর একাদশে মাঠে নামেন রোমেরো, জাবালেতা, ইজিকুয়েল গ্যারে, অতামেন্ডি, মার্কোস রোহো, লুকাস বিগলিয়া, মাসচেরানো, পাস্তোর, লিওনেল মেসি, সার্জিও আগুয়েরো এবং অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া। উরুগুয়ের কোচ অস্কার তারাবেজ ৪-৪-২ ফরমেশনে শুরুর একাদশে মাঠে পাঠান মুসলেরা, পেরেইরা, জিমিনেজ, দিয়েগো গডিন, গঞ্জালেস, ক্রিস্টিয়ান রদ্রিগুয়েজ, দিয়েগো রোলান আর এডিনসন কাভানির মতো তারকাদের। নিষেধাজ্ঞা থাকায় আর্জেন্টাইন অধিনায়ক মেসির ক্লাব সতীর্থ লুইস সুয়ারেজ এ ম্যাচে মাঠে নামতে পারেন নি।

ম্যাচের শুরু থেকেই নিজেদের নিয়ন্ত্রণে বল রেখে খেলতে থাকে ১৯৯৩ সালে শেষবারের মতো শিরোপা জেতা আর্জেন্টিনা। ৯ মিনিটের মাথায় উরুগুয়ের জাল লক্ষ্য করে প্রথম শট নেয় মার্টিনোর শিষ্যরা। গোলবারের ডানপাশ দিয়ে পাস্তোরের কাছ থেকে বল পেয়ে শট নেন সাবেক রিয়াল তারকা ডি মারিয়া। তার মাটি কামড়ানো শটটি প্রথম প্রচেষ্টায় না পারলেও দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে নেন উরুগুয়ের গোলরক্ষক মুসলেরা। দুই মিনিট পরেই ডি মারিয়ার কোনাকুনি একটি শট গোলবারের উপর দিয়ে বাইরে চলে যায়।

খেলার ২২ মিনিটের মাথায় গোলের সুযোগ পেয়েছিল টুর্নামেন্টের সবথেকে বেশি (১৫ বার) শিরোপা জেতা উরুগুয়ে। লোদেরোর শটে কর্নার থেকে উড়ে আসা বলে হেড করেন দলের অধিনায়ক দিয়েগো গডিন। তবে, গোলবারের কিছুটা বাইরে দিয়ে চলে যায় বল।

২৪ মিনিটের মাথায় মেসির বাড়িয়ে দেওয়া বল পান আগুয়েরো। ফাঁকা জায়গায় থেকে হেড করেন ম্যানচেস্টার সিটির তারকা। তবে, আর্জেন্টিনায় জন্ম নেওয়া উরুগুয়ের গোলরক্ষক মুসলেরা কর্নারের বিনিময়ে দারুণভাবে প্রতিহত করেন। ৩০ মিনিটে উরুগুয়ের ম্যাক্সি পেরেইরার হেড আর্জেন্টিনার গোলবারের পাশ দিয়ে চলে যায়।

২২ বছরের শিরোপা খরা কাটানোর স্বপ্ন দেখতে থাকা আর্জেন্টিনাকে ম্যাচের প্রথমার্ধে রুখে দিয়ে বিরতিতে যায় টুর্নামেন্টের সবথেকে সফল দল উরুগুয়ে।

বিরতির পর আবারো একই গতিতে ম্যাচ গড়ায়। ৫৪ মিনিটের মাথায় প্রায় মাঝমাঠ থেকে বল পান কাভানি। পিএসজির তারকা কাভানি বল নিয়ে আর্জেন্টিনার ফাঁকা ডি-বক্সে ঢোকার আগেই রোমেরো গোলবারের নিচ থেকে দৌড়ে এসে বল ক্লিয়ার করেন।

ম্যাচের ৫৬ মিনিটে খেলায় লিড নেয় ২০১১ সালের কোপা আমেরিকার কোয়ার্টার ফাইনালে এই উরুগুয়ের বিপেক্ষ হেরে ছিটকে পড়া আর্জেন্টিনা। দারুণ ছন্দে থাকা ম্যানসিটি তারকা আগুয়েরোর গোলে ১-০তে এগিয়ে যায় মার্টিনোর শিষ্যরা। মেসির থেকে বল পেয়ে জাবালেতা বল বাড়িয়ে দেন আগুয়েরোকে। উড়ন্ত বলে ছুটে আসা আগুয়েরো হেড করে গোলটি করেন।

৫ মিনিট পরেই ব্যবধান দ্বিগুন করার সুযোগ পেয়েছিলেন আগুয়েরো। উরুগুয়ের ফাঁকা ডি-বক্সে বল নিয়ে ঢোকার আগেই তিনি যে দুর্বল শটটি নিয়েছিলেন তা মুসলেরার নিয়ন্ত্রণে নিতে এতটুকু বেগ পেতে হয়নি।

খেলার ৭৫ মিনিটে সমতায় ফেরার সুযোগ এসেছিল উরুগুয়ের। ম্যাক্সি পেরেইরার জোরালো শট প্রতিহত করনে আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক রোমেরো। তবে, পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে বল না থাকায় ফিরতি বলে শট নেন উরুগুয়ের আরেক তারকা রোনাল। আর ফাঁকা জায়গা থেকে নেওয়া তার শটটি গোলবারের উপর দিয়ে চলে গেলে সমতায় ফেরা হয়নি ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের।

৭৮ মিনিটে একবার আর ৮৪ মিনিটে আরেকবার মেসি উরুগুয়ের জালে শট নেন। কিন্তু গোলবারের নিচে থাকা মুসলেরা মেসিকে গোলবঞ্চিত করেন। আর্জেন্টাইন কোচ মার্টিনো ৮২ মিনিটে আগুয়েরোকে তুলে নিয়ে বদলি হিসেবে মাঠে নামান জুভেন্টাস তারকা কার্লোস তেভেজকে।

৮৯ মিনিটের মাথায় হার্নান্দেজের জোরালো শট রুখে দলকে বিপদ মুক্ত করেন আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক রোমেরো। ম্যাক্সি পেরেইরার বাড়ানো বলে মাটি কামড়ানো শট নেন হার্নান্দেজ। বামদিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে তা প্রতিহত করেন রোমেরো।

ম্যাচের বাকি সময়ে আর কোনো গোল না হলে আগুয়েরোর একমাত্র গোলে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে আর্জেন্টিনা। এ জয়ের পর ‘বি’ গ্রুপে থাকা মেসিরা পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠল। দুই নম্বরে থাকা প্যারাগুয়ের পয়েন্ট চার । আর উরুগুয়ের এক জয়ে তিন পয়েন্ট।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত