ক্রীড়া প্রতিবেদক

০৪ নভেম্বর, ২০১৮ ১৭:০৫

১৪৩-এ গুটিয়ে গেলো বাংলাদেশ

ওয়ানডে সিরিজে দুর্দান্ত খেলা ইমরুল কায়েস জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে পুরোপুরি ব্যর্থ। দলকে ভরসা দিতে পারেননি লিটন দাস। নাজমুল শান্ত-মাহমুদুল্লাহরা এসেই ফিরে যান। মুমিনুলও আশা দিতে পারেননি। সেট হয়ে ফিরে যান মুশফিকুর রহিম। ব্যাটসম্যানদের এই ব্যর্থতায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ১৪৩ রানে অলআউট হয়ে গেছে বাংলাদেশ।

প্রথম ইনিংসে ১৩৯ রানের বড় লিড নিয়ে সফরকারীরা দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ২ ওভারে সংগ্রহ করে ১ রান। পরে আলোক স্বল্পতার কারণে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ ঘোষণা করেন ম্যাচ রেফারি।

এর আগে জিম্বাবুয়ের প্রথম ইনিংস শেষ হওয়ার পরে ব্যাটে নেমে ২ রান করে  মধ্যাহ্ন বিরতিতে যায় দু'দল। এরপর বিরতির পরেই দলের ৮ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ৫ রানে সাতারার বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন ইমরুল কায়েস। তার আউটের পরে নিজের ৯ রানে ও দলের ১৪ রানে ফেরেন লিটন দাস। এরপর দলের ১৯ রানের মাথায় ফেরেন নাজমুল হোসেন ও মাহমুদুল্লাহ। নাজমুল হোসেন করেন ৫ রান। অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ কোন রান করতে পারেননি।

এরপর মুমিনুল ও মুশফিক গড়েন ৩০ রানের জুটি। দলের ৪৯ রানের মাথায় ফেরেন মুমিনুল হক। এরপর মুশফিক নিজের ৩১ রানের মাথায় দলের ৭৮ রানে ফিরে যান। ছয় উইকেট হারিয়ে কাঁপছে তখন দল। সেখান থেকে ফলোঅন পার করান আরিফুল হক ও মেহেদি মিরাজ। কিন্তু তারা দলের রান খুব বেশি দুর নিয়ে যেতে পারেননি। আরিফুল ইসলাম দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪১ রান করে অপরাজিত থাকেন। মিরাজ-তাইজুলরা পরে আর তাকে সঙ্গ দিতে পারেননি।

এর আগে প্রথম দিন শেষে জিম্বাবুয়ে ৯১ ওভার ব্যাট করে ৫ উইকেট হারিয়ে তোলে ২৩৬ রান। দ্বিতীয় দিন প্রথম সেশনে গুটিয়ে যাওয়ার আগে জিম্বাবুয়ে তোলে ২৮২ রান। স্পিনার তাইজুল ইসলাম একাই ৬টি উইকেট তুলে নেন। নাজমুল ইসলাম অপু দুটি উইকেট পান। একটি করে উইকেট তুলে নেন আবু জায়েদ রাহি এবং মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। প্রথম ইনিংসে উইকেট শূন্য থাকেন আরিফুল হক এবং মেহেদি হাসান মিরাজ।

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক হ্যামিলটন মাসাকাদজা। সফরকারীদের হয়ে ওপেনিংয়ে নামেন অধিনায়ক হ্যামিলটন মাসাকাদজা এবং ব্রায়ান চারি। ইনিংসের ১১তম ওভারে তাইজুলের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন ব্রায়ান চারি। বিদায়ের আগে তিনি করেন ৩১ বলে ১৩ রান। দলীয় ৩৫ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। দলীয় ৪৭ রানের মাথায় আবারো আঘাত হানেন তাইজুল। ব্যক্তিগত ৬ রানে শর্টে দাঁড়ানো নাজমুল হোসেন শান্তর হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ব্রেন্ডন টেইলর। প্রথম দিনের প্রথম সেশনে ৩১ ওভার শেষে জিম্বাবুয়ে দুই উইকেট হারিয়ে তোলে ৮৫ রান।

দ্বিতীয় সেশনের শুরুতেই আঘাত হানেন আবু জায়েদ রাহি। ওপেনার হ্যামিলটন মাসাকাদজাকে এলবির ফাঁদে ফেলে ফিরিয়ে দেন এই ডানহাতি পেসার। দলীয় ৮৫ রানের মাথায় জিম্বাবুয়ে তাদের তৃতীয় উইকেট হারায়। মাসাকাদজা দুটি ছক্কা আর চারটি বাউন্ডারিতে ১০৫ বলে ৫২ রান করে বিদায় নেন। ৪৮তম ওভারে নিজের অভিষেক উইকেট তুলে নেন নাজমুল ইসলাম অপু। ৫২ বলে ১৯ রান করা সিকান্দার রাজাকে সরাসরি বোল্ড করেন এই স্পিনার। দলীয় ১২৯ রানের মাথায় সফরকারীরা চতুর্থ উইকেট হারায়। এরপর জিম্বাবুয়েকে চেপে ধরে টাইগাররা। টানা ৬ ওভার মেডেন পান নাজমুল অপু এবং মেহেদি মিরাজ। দ্বিতীয় সেশন শেষে ৬২ ওভারে জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৪৯/৪।

এরপর জুটি গড়েন শেন উইলিয়ামস এবং পিটার মুর। ইনিংসের ৭৭তম ওভারে উইলিয়ামসকে ফিরিয়ে দেন বাংলাদেশের দলপতি মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। মিরাজের হাতে ধরা পড়ার আগে উইলিয়ামস ১৭৩ বলে ৯টি বাউন্ডারিতে করেন ৮৮ রান। দলীয় ২০১ রানের মাথায় জিম্বাবুয়ে পঞ্চম উইকেট হারায়।

দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনে আঘাত হানেন তাইজুল। ফিরিয়ে দেন ২৮ রান করা রেগিস চাকাভাকে। দলীয় ২৬১ রানের মাথায় সফরকারীরা ষষ্ঠ উইকেট হারায়। দলীয় ২৬৯ রানের মাথায় সপ্তম উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। তাইজুল এবার ফিরিয়ে দেন ব্যক্তিগত ৪ রান করা ওয়েলিংটন মাসাকাদজাকে। উইকেটের পেছনে মুশফিকের গ্লাভসবন্দি হন তিনি। এরপর শিকারে যোগ দেন নাজমুল অপু। ৩ রান করা ব্রেন্ডন মাভুতাকে এলবির ফাঁদে ফেলেন তিনি। টেস্ট ক্যারিয়ারে চতুর্থবারের মতো পাঁচ উইকেট তুলে নিতে এরপর তাইজুল ফিরিয়ে দেন কাইল জারভিসকে (৪)। পরের বলেই তাইজুল ফিরিয়ে দেন তেন্দাই চাতারাকে। পিটার মুর ৬৩ রান করে অপরাজিত থাকেন। দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশন শেষ হওয়ার কিছু আগেই জিম্বাবুয়ে অলআউট হয় ২৮২ রান তুলে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত