ক্রীড়া প্রতিবেদক

১৭ আগস্ট, ২০১৫ ১৩:২২

সিলেটের সাদের সাফ জয়

এখনো ফাইনাল খেলা বাকী আছে। সাফ অনূর্ধ-১৬ ফুটবলের শিরোপা জিততে আরো একটি বাধা টপকাতে বাংলাদেশকে। তবে একজন ইতোমধ্যে ঠিকই জিতে নিয়েছেন। তিনি সাদ উদ্দিন। দুর্দান্ত ক্রীড়ানৈপুণ্য দেখিয়ে প্রতিপক্ষের কোচদের প্রসংশা ও সমীহ, দর্শকদের ভালোবাসা জয় করে নিয়েেন সিলেটের এই কিশোর। সাফ ফুটবলের সাদকে বাংলাদেশের বড় আবিস্কারই বলা যতে পারে।

বয়স এখনো ১৬ পেরোয়নি। এখনো গোঁফ গজায়নি ভালো করে। চোখে মুখে এখনো কৈশরের সারল্য ও চাঞ্চলতা। অথচ মাঠে নামলেই কী ভয়ংকর ক্ষিপ্র হয়ে উঠে কিশোর! চোখের নিমিষেই বল নিয়ে ঢুকে পড়ে প্রতিপক্ষের রক্ষনসীমায়।

মাঠজুড়ে বিচরণ আর গতিশীল ফুটবল দিয়ে প্রথম ম্যাচ থেকেই নজর কেড়েছিল সাদ উদ্দিন। বাংলাদেশি এই কিশোরের বল নিজের দখলে রাখা এবং দ্রুত প্রতিপক্ষের শিবিরে ঢুকে পড়ার দক্ষতায় মুগ্ধ হয়েছেন নেপালের কোচ উপেন্দ্র মান সিং পর্যন্ত। যদিও গ্রুপ পর্বের কোনো ম্যাচেই সাদের পা থেকে গোল আসেনি। রোববার সেমিফাইনালের বৃহৎমঞ্চেই সেই গোলের দেখা পেল সাদ এবং তার একমাত্র গোলে ভর করেই বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো পা রাখল সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ ফুটবলের ফাইনালে।

ষোলো কোটি মানুষকে এমন মুহূর্ত এনে দিল যে, সেই সাদ যে সংবাদ সম্মেলনে হাজির হবে তা ছিল অনুমেয়। সারল্যভরা মুখে হাসি নিয়ে কোচ ও অধিনায়কের সঙ্গে হাজির সাদ। এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে প্রথম গোলটি করার আনন্দ তার প্রতিটি উচ্চারণে, 'আমি অনেক খুশি আজ গোল করতে পারায়। আজকে আমার পরিবারের সবাই, আত্মীয়স্বজনরা খেলা দেখতে মাঠে এসেছেন। তাঁদের সামনে প্রথম গোলটি করতে পেরেছি, সেটা অনেক আনন্দের ব্যাপার।'

শিরোপা জয়ের বিষয়ে দৃঢ় কণ্ঠেই বলল, 'ভারত-নেপালের মধ্যে যে দলই আসুক। শিরোপা জয়ই আমাদের লক্ষ্য।'

সিলেট জেলা বারে আইনজীবীর সহকারী হিসেবে কাজ করেন সাদের বাবা মোহাম্মদ জমির উদ্দিন। ছেলের গোলে বাংলাদেশ ফাইনালে যাওয়ায় আনন্দে প্রায় বাকরুদ্ধ তিনি, 'আমি চেয়েছি ছেলে ফুটবল খেলুক। দেশের জন্য কিছু করুক। আজ সে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে গোল করতে পেরেছে বলে সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।' ছেলেকে ঘিরে তাঁর প্রত্যাশা, 'বাংলাদেশ যদি কোনো দিন বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে পারে আর তাতে যদি ছেলে সামান্য হলেও ভূমিকা রাখতে পারে তাহলেই সার্থক মনে করব নিজেকে।'

আপনার মন্তব্য

আলোচিত