শায়েস্তাগঞ্জ প্রতিনিধি

০১ জুন, ২০২০ ১৫:২৬

স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে শায়েস্তাগঞ্জের মহাসড়কে যানবাহন

করোনাভাইরাসের সংক্রমণের মধ্যেও দীর্ঘ ৬৭ দিন পর সড়কে নেমেছে গণপরিবহন। তবে বাসের ভেতর শারীরিক দূরত্ব কিছুটা থাকলেও বাস টার্মিনালে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি।

সোমবার (১ জুন) সকাল থেকে সারাদেশের ন্যায় শায়েস্তাগঞ্জেও গণপরিবহন চলাচল শুরু হয়।

সকালে শায়েস্তাগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, শারীরিক দূরত্ব তো দূরের কথা, মানুষের ব্যাপক ভিড় লক্ষ্য করা যায়। প্রথম দিন হওয়ায় অনেক গণপরিবহনই শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে যাত্রী তুলছে। তবে গাড়ির ভেতর অনেক যাত্রীরই মাস্ক ও হ্যান্ড গ্লাভস নেই। স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই গাড়িতে উঠছে যাত্রীরা।

শায়েস্তাগঞ্জে হানিফ, শ্যামলী, এনা, মডার্ন পরিবহন, দিগন্ত, হবিগঞ্জ-সিলেট বিরতিহীন এক্সপ্রেসসহ অনেক বাসই ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে চলতে দেখা গেছে। দীর্ঘদিন পর সড়কে গণপরিবহন নামলেও দেখা যায়নি কোনো শৃঙ্খলা। ফের এলোমেলো ও পাল্লা দিয়ে বাস চালাতেও দেখা যায়।

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের শায়েস্তাগঞ্জের নতুন ব্রিজ বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, মানুষের উপচেপড়া ভিড়। কাউন্টারের বাইরে শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিতের দায়িত্ব যেন কারো নেই। অনেক যাত্রীই মাস্ক ব্যবহার করছেন না। নেই হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা।

নতুন ব্রিজ থেকে ভোর থেকেই বিভিন্ন গন্তব্যে বাস ছেড়ে যায়। শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করেই অনেক বাসকে চলতে দেখা যায়।

কাউন্টার সংশ্লিষ্টরা স্বাস্থ্যবিধি মানলেও যাত্রীদের সুরক্ষায় কাউন্টার ও বাসে নেই হ্যান্ড স্যানিটাইজার। ফলে কতোটা স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাস চালাতে পারবে, সেই শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

শায়েস্তাগঞ্জের অলিপুর দিগন্ত কাউন্টারের নাইম মিয়া বলেন, আমরা চেষ্টা করছি আসন ফাঁকা রেখে যাত্রী নিতে। কিন্তু যাত্রীরা তা না মেনে জোর করে ওঠার চেষ্টা করছেন।

হবিগঞ্জ-সিলেট বিরতিহীন এক্সপ্রেসের কাউন্টারের কর্মী কামাল আহমেদ বলেন, আমাদের বাসগুলো ৪৬/৪৮ সিটের। তাই আমরা সরকারি নিয়ম মেনে ২২ জন যাত্রী উঠাচ্ছি। ২২ জন যাত্রী হয়ে গেলেই বাসের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।

তবে মহাসড়কে চলাচলকারী অন্যান্য বাসগুলো কোনও রকম নিয়ম মানছে না। যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়ের সুবাদে তারা গাদাগাদি করে তাদের বসাচ্ছে।

ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেওয়া উজ্জল মিয়া নামের এক যাত্রী বলেন, বাসে স্বাস্থ্যবিধি বলতে শুধু শারীরিক দূরত্ব। এখানে অনেকেই মাস্ক ব্যবহার করছেন না।

এ বিষয়ে হবিগঞ্জ বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শুভ্র শঙ্ক রায় বলেন, আমরা মালিক সমিতির পক্ষ থেকে স্প্রে ও স্যানিটাইজার কিনে দিছি। পুরো বাসে জীবাণুনাশক স্প্রে করিয়েছি। বর্ধিত ভাড়ার তালিকা প্রতি বাসে কপি করে দিয়েছি, কোন অবস্থাতেই একটি বাসে ২২ জনের বেশি যাত্রী কেউ বহন করতে পারবে না। যদি কেউ অতিরিক্ত যাত্রী বহন করে নেই গাড়িকে সাসপেন্ড করা হবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা আজকে প্রথম দিনেই তিনটি গাড়িকে ৭ দিনের জন্য সাসপেন্ড করেছি।

শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তৌফিকুল ইসলাম তৌফিক বলেন, সকাল থেকে মহাসড়কে আছি। যাত্রী ও গাড়ির স্টাফদের সচেতন করার জন্য অনেক কিছু করছি। তারপরও গণপরিবহন ও যাত্রীরা স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা করছেন না। পুলিশ দেখলেই সবাই নিয়ম মানে। সরে গেলেই আবার শুরু। আমাদের টহল অব্যাহত আছে। প্রয়োজনে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত