নিজস্ব প্রতিবেদক

১৪ জুন, ২০২০ ১৫:০৯

সিলেটে করোনা চিকিৎসায় প্লাজমা থেরাপি শুরু

সিলেটের করোনা রোগীদের চিকিৎসায় শুরু হয়েছে ‘প্লাজমা থেরাপি’ সেবা। শনিবার মাউন্ট এডোরা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংকে করোনা জয়ী একজনের প্লাজমা গ্রহণ করা হয়। এরপর তা নর্থইস্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনা রোগীর শরীরে প্রয়োগ করা হয়।

রোববার (১৪ জুন) মাউন্ট এডোরা হাসপাতালের এজিএম, এবং বিপনন শাখার প্রধান মো. রাশেদুল ইসলাম এ কথা জানান।

জানা যায়, সিলেট নগরীর আখালিয়া এলাকার মাউন্ট এডোরা হসপিটালের ব্লাড ট্রান্সফিউশন বিভাগে শনিবার করোনাজয়ী একজনের কাছ থেকে প্লাজমা সংগ্রহ করা হয়। পরে সেই প্লাজমা প্রয়োগ করা হয় নর্থ ইস্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক করোনা রোগীর শরীরে। আজও একজন ডোনারের দেয়া প্লাজমা নিয়ে যাবে নর্থ ইস্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

গত ৮ জুন থেকে করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য আলাদা আইসোলেশন ওয়ার্ড চালু করে আখালিয়াস্থ মাউন্ট এডোরা হসপিটাল। প্রথম ধাপে হাসপাতালটি ৪০টি বেড নিয়ে কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা প্রদান শুরু করে। করোনাক্রান্ত রোগীদের জন্য আলাদা আইসোলেশন ওয়ার্ড ও আইসিইউ ইউনিট গঠন করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিজেদের ব্যবস্থাপনায়ই করোনা রোগীদের দিতে শুরু করেছে চিকিৎসাসেবা। সিলেটের আরেক বেসরকারি চিকিৎসা কেন্দ্র নর্থইস্ট হাসপাতালেও করোনারোগীদের চিকিৎসা প্রদান শুরু হয়েছে।

বিজ্ঞাপন



মাউন্ট এডোরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, হাসপাতালটির করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ডে বর্তমানে ৪০টি বেড রয়েছে। এছাড়াও গুরুতর রোগীদের জন্য আলাদা ৪ বেডের আইসিইউ ইউনিট রাখা হয়েছে।

হাসাপাতালে বর্তমানে মোট ১৮ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। তবে এদের শরীরে করোনার উপসর্গ থাকলেও কেউ পজিটিভ নন।

উল্লেখ্য, চিকিৎসা বিজ্ঞানে প্লাজমা থেরাপি বেশ পুরোনো একটি পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে সাধারণত কোন ভাইরাল সংক্রমণ থেকে সেরে ওঠা মানুষের রক্ত সংগ্রহ করা হয়। এরপর সেই রক্ত সঞ্চালিত করা হয় একই ধরনের ভাইরাল সংক্রমণের শিকার রোগীর দেহে। মানুষের রক্তের জলীয় অংশকে বলা হয় প্লাজমা বা রক্তরস। রক্তের মধ্যে প্রায় ৫৫ ভাগই থাকে হলুদাভ রঙের এই প্লাজমা। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পরে যারা পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠেছেন, তাদের শরীরে এক ধরণের অ্যান্টিবডি বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়।

১৯১৫ সালে মানবদেহে প্লাজমা থেরাপির প্রয়োগ সর্বপ্রথম করা হয় স্প্যানিশ ফ্লু এর সময়। সাধারণত আইসিইউ রোগীদের ২০০-৪০০ মিলিলিটার ডোজ দেওয়া হয়। রক্ত থেকে সেন্ট্রিফিউজ করে প্লাজমা ফেরেসিসের মাধ্যমে প্লাজমা আলাদা করা হয়। প্লাজমা দাতা ও গ্রহীতা একই রক্তের গ্রুপ হতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তি পুরোপুরি সুস্থ হওয়ার ১৪ দিন পর তার শরীর থেকে প্লাজমা সংগ্রহ করা হয়।

চিকিৎসকরা এভাবেই করোনাজয়ী একজনের শরীর থেকে প্লাজমা বা রক্তরস সংগ্রহ করে করোনাভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে প্রয়োগ করবেন। ফলে তার শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত