নবীগঞ্জ প্রতিনিধি

০৯ আগস্ট, ২০২০ ০১:২৯

নবীগঞ্জের বিদ্যালয়ের নাম ‘ঋণকারীপাড়া’ ও ‘গনজা’, বিব্রত স্থানীয়রা

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার কুর্শি ইউনিয়নের একটি গ্রামের নাম খনকারিপাড়া। গ্রামের নামে সেখানকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নামকরণ হওয়ার কথা থাকলেও এই গ্রামের বিদ্যালয়ের নাম- ‘ঋণকারীপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়’। বিদ্যালয়টি ১৯৭৯ সালে স্থাপিত হয়। এরপর থেকেই এ নামেই চলছে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম।

একই হাল নবীগঞ্জ পৌর এলাকার গন্ধা গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়েও। ১৯৮১ সালে স্থাপিত এই বিদ্যালয়টি নামকরণের সময় ভূলবশত গন্ধার স্থলে লেখা হয় গনজা। সরকারিভাবে বিদ্যালয়টি নামকরণ করা হয়- গনজা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। বারবার চেষ্টা করেও নাম পরিবর্তন করতে পারেননি স্থানীয়রা।

বিদ্যালয় দুটির এমন উদ্ভট নামের কারণে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হচ্ছে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের।

নাম পরিবর্তনের জন্য দীর্ঘদিন চেষ্টা করে ব্যর্থ হলেও এবার নতুন আশা দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। সম্প্রতি সরকার শ্রুতিমধূর নয় এমন বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছে। এতে নবীগঞ্জের এই দুটি বিদ্যালয়েরও নাম পরিবর্ত হবে বলে আশা স্থানীয়দের।

নাম পরিবর্তন বিষয়ে গত বৃহস্পতিবার (৬ আগস্ট) প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (পলিসি ও অপারেশন) খালিদ আহমেদ স্বাক্ষরিত এক নির্দেশনায় বলা হয়েছে- সারা দেশে এমন কিছু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম আছে যা শ্রুতিমধুর নয় এবং ভাষা ও সংস্কৃতির সঙ্গে সুশোভন নয়। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে হাস্যরসের সৃষ্টি হচ্ছে। এরূপ বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে দেশের ভাষা ও সংস্কৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে শোভনীয় নাম প্রস্তাবের নির্দেশনা দিয়েছে।

বিজ্ঞাপন



এ প্রসঙ্গে গনজা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহিনুর আক্তার চৌধুরী পান্না জানান, “গ্রামের নামে স্কুল, কিন্তু টাইপিং এ যুক্তবর্ণ লিখতে এই ভুল হয়েছে, গনজা শব্দের কোন ভিত্তি নেই। কিন্তু গন্ধা ওই গ্রামের নাম। প্রত্যেক জায়গায় গ্রামের নামে স্কুল হয়। এমন নাম নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বিব্রতবোধ করে।
 
এ প্রসঙ্গে ঋণকারীপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লিটন দাশ জানান, মূলত গ্রামের নামেই বিদ্যালয়ের নাম হওয়ার কথা ছিলো কিন্তু ভূলবশত খনকারীপাড়া না লেখে লেখা হয়েছে- ঋণকারীপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। এনিয়ে অনেকে হাসাহাসি করে। নাম পরিবর্তনের জন্য গত বছর একটি আবেদনও করা হয়েছিল কিন্তু কোন সমাধান হয়নি।

এ প্রসঙ্গে নবীগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. রুবেল মিয়া বলেন, বিদ্যালয়ের শ্রুতিকটু নামগুলি পরিবর্তন, সংশোধনের যে উদ্যোগটি সরকারিভাবে নেওয়া হয়েছে তা অত্যন্ত সময়োপযোগী। এর ধারাবাহিকতায় আমাদের নবীগঞ্জেও যে দু একটি স্কুলের নামে ভুল রয়েছে তা সংশোধিত হবে এই প্রত্যাশা করছি।

এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মহিউদ্দিন বলেন- শ্রুতিমধুর নয় এমন বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন প্রসঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে চিঠি এসেছে শিক্ষা অফিসে। এ নিয়ে আমরা উপজেলা শিক্ষা কমিটির মিটিং করবো। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নিকট যে তালিকা রয়েছে এটা যাচাই বাচাই করে যদি দেখা যায় কোন বিদ্যালয়ের নাম শ্রুতিমধুর নয় বা টাইপিং মিস্টেক রয়েছে সেক্ষেত্রে আমরা নাম পরিবর্তন করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেব।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত