নিজস্ব প্রতিবেদক

২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০২:৩১

অগ্নিদগ্ধ হয়ে পাউবোকর্মীর মৃত্যু: আত্মসমর্পণের পর কারাগারে স্বামী

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিলেট কার্যালয়ের কম্পিউটার ডেটা অপারেটর লাকি রানী পালের (৩০) অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় স্বামী হিমাদ্রি পাল আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। বুধবার দুপুরে সিলেটের জ্যেষ্ঠ জেলা ও দায়রা জজ মো. বজলুর রহমানের আদালতে তিনি আত্মসমর্পণ করেন। আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

সিলেটের দক্ষিণ সুরমার সেনগ্রামে স্বামীর বাড়ি থেকে গত ৯ আগস্ট রাতে লাকিকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরের দিন মারা যান তিনি। শ্বশুরবাড়ির লোকজন এ ঘটনাকে রান্না করতে গিয়ে কুপির আগুনে দগ্ধ বলে প্রচার করলেও ১৭ আগস্ট লাকির ছোট বোন প্রিয়াঙ্কা পাল বাদী হয়ে সিলেটের মোগলাবাজার থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় লাকির স্বামী হিমাদ্রি পাল, দেবর হিমেল পাল, শ্বশুর হলধর চন্দ্র পাল ও শাশুড়ি শিখা রানী পালকে আসামি করা হয়।

বাদীপক্ষের আইনজীবী জসিম উদ্দিন বলেন, নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করার শর্তে উচ্চ আদালত থেকে জামিনে ছিলেন হিমাদ্রি পাল। ২৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশনা ছিল। বুধবার বেলা দুইটার দিকে আদালতে হাজির হলে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এজাহারের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, লাকিকে তার স্বামী হিমাদ্রি পাল বাবার বাড়ি থেকে ৫০ হাজার টাকা এনে দিতে বলেছিলেন। এই টাকা এনে দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় ৯ আগস্ট রাতে রান্নাঘরে নিয়ে লাকির শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন দেওয়া হয়। পরে ঘটনাটিকে রান্না করতে গিয়ে কুপির আগুনে দগ্ধ বলে প্রচার করা হয়।

এদিকে ৬ সেপ্টেম্বর লাকির শ্বশুরবাড়ির লোকজন সংবাদ সম্মেলন করে লাকির মৃত্যু নিছক একটি দুর্ঘটনা বলে দাবি করেন। তবে ১০ সেপ্টেম্বর পাল্টা একটি সংবাদ সম্মেলন করে লাকির বোন প্রিয়াঙ্কা পাল জানিয়েছিলেন, মামলা হওয়ায় ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে তারা (লাকির শ্বশুরবাড়ির লোকজন) নানা অপপ্রচার চালাচ্ছেন। পাল্টাপাল্টি দুটি সংবাদ সম্মেলন করার দুই সপ্তাহ পর হিমাদ্রি পাল আদালতে আত্মসমর্পণ করলেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও মোগলাবাজার থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সমীরণ সিংহ বলেন, হিমাদ্রি পাল স্থানীয় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। মামলার পর থেকে তিনি এলাকাছাড়া ছিলেন। পরে তিনিসহ সব আসামি উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে এসেছিলেন বলে পুলিশকে জানানো হয়েছিল। এবার হিমাদ্রি পাল নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করলেন। মামলায় অন্য আসামিদের ব্যাপারে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত