নিজস্ব প্রতিবেদক

০৩ অক্টোবর, ২০২০ ১৫:১৫

গাড়িতেই চারবার ধর্ষণ করা হয় সেই তরুণীকে

এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে ধর্ষণ

সিলেটের এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে প্রাইভেটকারের ভেতরে চারজন চারবার ধর্ষণ করে সেই তরুণীকে। এরপর আলামত মুছতে প্রাইভেটকারকটি ধুয়ে ফেলার চেষ্টা চালায় অভিযুক্তরা। তবে পুলিশ টের পেয়ে যাওয়ায় সে চেষ্টায় সফল হয়নি তারা।

চাঞ্চল্যকর এই ধর্ষণের ঘটনায় আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে একাধিক আসামি এমনটি বলেছে। গত শুক্রবার (২ অক্টোবর) এই মামলার প্রধান আসামি সাইফুর রহমান ও আরও দুই আসামি অর্জুন লস্কর ও রবিউল ইসলাম আদালতে জবানবন্দি প্রদান করে। এরআগের শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে এমসি কলেজের ছাত্রাবাষে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন এক তরুণী।

শুক্রবার রাতে সিলেটের অতিরিক্ত মূখ্য মহানগর হাকিম আদালতে জবানবন্দি দেন ৩ আসামি। জবানবন্দিতে সাইফুর ও অর্জুন জানান, তারা দুজনসহ চারজন তরুণীকে ছাত্রাবাসের ভেতরে গাড়িতেই চারবার ধর্ষণ করেন। জবানবন্দিতে তারা আরও বলেন, ধর্ষণের ঘটনা আড়াল করার জন্য গাড়ি থেকে ধর্ষণের আলামত মুছতে চেয়েছিলেন তারা। কিন্তু পুলিশ দেখে ফেলায় তারা গাড়ি ফেলে পালিয়ে যান।

বিজ্ঞাপন



শুক্রবার রা্তে অপর আসামি রবিউল জবানবন্দিতে বলেছেন, তিনি ধর্ষণ করেননি তবে ধর্ষকদের সহযোগিতা করেছেন।

এই মামলায় শনিবার দুপুরে আরও তিন আসামিকে জবানবন্দি দেওয়ার জন্য আদালতে তোলা হয়েছে।

আদালতে জবানবন্দিতে মামলার প্রধান আসামি সাইফুর বলেন, প্রাইভেট কারটি টিলাগড় মোড়ে দাঁড়িয়ে ছিল, সেখান থেকে তারেক কারটি চালিয়ে ছাত্রাবাসে নিয়ে আসেন। এ সময় সাইফুর ও অর্জুন গাড়িতে ছিলেন। পরে মোটরসাইকেল চালিয়ে শাহ রনি তাদের সঙ্গে যোগ দেন। গাড়িতে তারা তরুণীকে নিয়ে নানা রকম খিস্তি করেন। গাড়িটি নিয়ে তারা এমসি কলেজের ছাত্রাবাসের ১০৫ নম্বর কক্ষের সামনে আসেন। স্বামীকে গাড়ি থেকে নামিয়ে সেখানেই তরুণীকে ধর্ষণ করা হয়। ১০৫ নম্বর কক্ষটি মাহফুজুর রহমানের (এজাহারে ৬ নম্বর আসামি) নামে বরাদ্দ থাকলেও কক্ষটি ব্যবহার করতেন সাইফুর। কক্ষ থেকে উদ্ধার হওয়া পাইপগানসহ অস্ত্রগুলো তার ছিল বলে জবানবন্দিতে বলেছেন।

আসামিদের জবানবন্দি থেকে জানা যায়, ধর্ষষকরা আলামত নষ্ট করার চেষ্টা করছে এমন খবর পেয়ে দ্রুত ছাত্রাবাসের ভেতরে প্রবেশ করেন শাহপরান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সোহেল রানা। অন্য পুলিশ কর্মকর্তারা তখন ছাত্রাবাসের প্রধান ফটকে কলেজ কর্তৃপক্ষের অনুমতির অপেক্ষায় ছিলেন।

এ ব্যাপারে এসআই সোহেল রানা বলেন, ওই সময় ঘটনাস্থলে না গেলে শুধু ধর্ষণের আলামত নষ্ট নয়, সাইফুরের দখল করা ছাত্রাবাস কক্ষ থেকে একটি পাইপগান, চারটি রামদাসহ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধারও হতো না। জব্দ তালিকা করতে গিয়ে তিনি দেখেছেন, গাড়িটি ধুয়ে মুছে ফেলার সব প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন করেছিলেন ধর্ষণকারীরা। মিনিট দশেক সময় পেলেই সব আলামত নষ্ট করে ফেলতেন তারা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত