বানিয়াচং প্রতিনিধি

২৪ অক্টোবর, ২০২০ ২১:৩৮

বানিয়াচং-হবিগঞ্জ রাস্তার পাশ থেকে নারীর মৃত দেহ উদ্ধার, আটক ১

বানিয়াচং-হবিগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের শুটকি ব্রিজের কাছ থেকে জোনাকি আক্তার (২৫) নামে এক নারীর মৃত দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শনিবার (২৪ অক্টোবর) বিকাল চারটায় এই মৃত দেহ উদ্ধার করা হয়। সে বানিয়াচং ২নং উত্তর-পূর্ব ইউনিয়নের অপু মিয়ার স্ত্রী। এ ঘটনায় ঘটনাস্থল থেকে অনিক পান্ডে নামের (৩০) এক যুবককে আটক করা হয়েছে। সে বানিয়াচং ৪নং দক্ষিণ-পশ্চিম ইউনিয়নের মাদারিটুলা মহল্লার মৃত মানিক পান্ডের পুত্র।

প্রত্যক্ষদর্শী সুত্রে জানা যায়, বানিয়াচং-হবিগঞ্জ রোডের শুটকি ব্রিজের কাছে একটি সাদা অ্যাম্বুলেন্স থেকে মৃত দেহটি রাস্তার পাশে ফেলে পালিয়ে যাওয়ার সময় পথচারীরা দেখতে পান। এসময় পথচারীরা শোর চিৎকার দিলে হাওরে মাছ ধরতে আসা জেলেরা পালিয়ে যাওয়া যুবক অনিক পান্ডেকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন।

খবর পেয়ে বানিয়াচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমরান হোসেন নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃত দেহ উদ্ধার করেন। অনিক পান্ডেকেও আটক করে থানায় নিয়ে আসেন। পাশাপাশি মৃত জোনাকির মরদেহের পাশ থেকে দেড় বছরের মেয়েকেও উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়। এই মেয়েকে পরবর্তীতে সাংবাদিক এবং ৪নং ইউপির চেয়ারম্যান রেখাছ মিয়ার উপস্থিতিতে জোনাকির মা-ভাইদের কাছে সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে হস্তান্তর করা হয়।

নিহত জোনাকির মা হেনা আক্তার সাংবাদিকদের জানান, জোনাকির স্বামী কর্ম সূত্রে চিটাগাং থাকায় স্বামীর অগোচরে অনিক পান্ডের সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে সে। একপর্যায়ে গত দেড় মাস আগে অনিক পান্ডের হাত ধরে তার দেড় বছরের একটি মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে যায় জোনাকি। পালিয়ে যাওয়ার পনের দিন পরে অনিক পান্ডে জোনাকির মাকে ফোন দিয়ে জানায় আমি আপনার মেয়েকে নিয়ে এসেছি। জোনাকির স্বামী অপুকে ডিভোর্স দিয়ে আমাকে আদালতের মাধ্যমে বিয়ে করেছে। ঘটনার দিন বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে অনিক পান্ডে আমাকে ফোন দিয়ে জানায় আপনার মেয়ে কিছুক্ষণ আগে বসত ঘরের সিলিং ফ্যানের আঘাতে আপনার মেয়ে মারা গেছে। অ্যাম্বুলেন্সে করে তার লাশ বাড়িতে পাঠিয়ে দিচ্ছি। পুলিশের মাধ্যমে জানতে পারি একটি লাশ বানিয়াচং-হবিগঞ্জ রাস্তার শুটকি ব্রিজের সন্নিকটে পড়ে রয়েছে। থানায় এসে দেখতে পাই এটা আমার মেয়ে জোনাকির লাশ। আমি আমার মেয়ের হত্যাকান্ডের বিচার চাই।

এ বিষয়ে বানিয়াচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমরান হোসেন জানান, খবর পেয়ে মহিলার মৃত দেহটি উদ্ধার করে বানিয়াচং থানায় নিয়ে এসে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করে ময়নাতদন্তের জন্য হবিগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। অনিক পান্ডেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় রাখা হয়েছে। এবং পালিয়ে যাওয়া অ্যাম্বুলেন্সটি মাধবপুর থানা পুলিশের সহায়তায় নোয়াপাড়া নামক স্থান থেকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা দায়ের করা হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে জোনাকিকে অন্যত্র হত্যা করে এই রাস্তার পাশে ফেলে রাখা হয়েছে। তার শরীরে এবং গলায় আঘাতে চিহ্ন পাওয়া গেছে। তবে বিস্তারিত জানতে হলে ময়নাতদন্তের রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত