মঙ্গলবার বিকেলে চেম্বার কনফারেন্স হলে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব এগ্রিকালচার (ইউএসডিএ) থেকে আগত প্রতিনিধিবৃন্দের সাথে সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন সেক্টরের উদ্যোক্তাবৃন্দের এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সিলেট চেম্বারের সভাপতি আবু তাহের মো. শোয়েব।

সভায় প্রতিনিধিদলের প্রধান টাইলর ব্যাবকক বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি বর্তমানে বিশ্বের দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতিগুলোর অন্যতম। এদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় দ্রুত গতিতে বেড়ে চলেছে।

তিনি বলেন, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সিলেটের সম্ভাবনার ব্যাপারটি উপলব্ধি করে আমরা ৫ দিনের সিলেট সফরে এসেছি এখানকার কৃষি উদ্যোক্তা ও বিজনেস কমিউনিটির সাথে মিলিত হওয়ার জন্য। তিনি উল্লেখ করেন, ইউএসডিএ কৃষি সেক্টর ছাড়াও অন্যান্য সেক্টরের উন্নয়নে কাজ করে থাকে। কারণ সকল ধরণের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সাথে কৃষির যোগসূত্র রয়েছে। তিনি সভায় সিলেটে বিনিয়োগের বিভিন্ন সম্ভবনাময় ক্ষেত্রসমূহ তুলে ধরার জন্য উপস্থিত উদ্যোক্তাবৃন্দকে ধন্যবাদ জানান এবং সম্ভবনাময় ক্ষেত্রগুলোতে বিদেশী বিনিয়োগের ব্যাপারে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগকারীদের সাথে বাংলাদেশী বিনিয়োগকারীদের যোগাযোগ স্থাপনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান।  

সভায় সিলেট চেম্বারের সভাপতি আবু তাহের মোঃ শোয়েব বলেন, সিলেট বিদেশী বিনিয়োগের জন্য একটি আদর্শ স্থান। এখানে শিল্প স্থাপনের প্রয়োজনীয় উপকরণ যেমন- গ্যাস, জ্বালানী তেল, জমি ইত্যাদি বিদ্যমান রয়েছে। বিশেষ করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাতটি রাজ্যের সাথে সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে সিলেটে কৃষিভিত্তিক রপ্তানীমুখী শিল্প স্থাপন অত্যন্ত লাভজনক হবে। কারণ ভারতের ঐসব রাজ্যে বাংলাদেশী পণ্যের চাহিদা রয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, বর্তমান সরকার বিদেশী বিনিয়োগকারীদের জন্য সহযোগিতার হাত প্রসারিত করে দিয়েছেন। সিলেটে সরকারী উদ্যোগে স্পেশাল ইকোনমিক জোন ও বঙ্গবন্ধু হাই-টেক পার্ক গড়ে উঠেছে। যাতে বিনিয়োগের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগকারীগণ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত বিশেষ সুবিধা গ্রহণের পাশাপাশি বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়নে অবদান রাখতে পারবেন।

সভায় ইউএসডিএ এর এগ্রিকালচার স্পেশালিস্ট ড. তানভীর এম বি হোসেন তাদের সিলেট সফরের উদ্দেশ্য ও কার্যক্রম সম্পর্কে অবগত করেন এবং সিলেটের কৃষিখাতের উন্নয়নে সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন। সভায় বক্তাগণ বলেন- পর্যটন, চিকিৎসা ও শিক্ষা সিলেটের সবচেয়ে সম্ভবনাময় খাত। সিলেটের অনেক বিত্তশালীরা উন্নত চিকিৎসা নিতে দেশের বাইরে যান। তাদের জন্য সিলেটে বিশ্বমানের হাসপাতাল স্থাপন করা সম্ভব হলে দেশের বিত্তশালীদের পাশাপাশি পাশ্ববর্তী দেশগুলো থেকেও রোগীরা চিকিৎসা সেবা নিতে সিলেটে আসবেন। এছাড়াও এশিয়ার অন্যান্য দেশের মত সিলেটে যৌথ উদ্যোগে বিশ্বমানের ইউনিভার্সিটি স্থাপন করে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগকারীগণ লাভবান হতে পারেন।   

সভায় বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন সিলেট চেম্বারের সিনিয়র সহ সভাপতি চন্দন সাহা, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ইঞ্জিঃ এম. ইকবাল, সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকী, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি আল-আজাদ, প্রিমিয়াম ফিস এন্ড এগ্রো’র চেয়ারম্যান কল্লোল আহমেদ, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউ সিলেটের প্রধান সাইন্টিফিক অফিসার ডাঃ মাহমুদুল ইসলাম নজরুল, বিশিষ্ট শিল্পোদ্যোক্তা মোঃ মঈনুল ইসলাম চৌধুরী, ফাহিম আহমদ চৌধুরী, মনোজাহান পলি ইসলাম, হেলেন আহমেদ, এম. এ. সায়েম, চিকিৎসা খাতের উদ্যোক্তা ডাঃ নাসিম আহমদ, প্রফেসর ডাঃ মোঃ নজরুল ইসলাম, সিলেট চেম্বারের পরিচালক মোঃ আতিক হোসেন, ওয়াহিদুজ্জামান চৌধুরী (রাজিব), সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি মুহিত চৌধুরী, সাংবাদিক দ্বোহা চৌধুরী, উদ্যোক্তা মোঃ মাহবুবুল আলম চৌধুরী, নুরজাহান বেগম, শহিদুল ইসলাম, সোহেল রানা, সৈয়দ মুমিনুল ইসলাম, আলতাফ হোসেন, জয়দেব চক্রবর্তী প্রমুখ।