নিজস্ব প্রতিাবেদক

২৩ ফেব্রুয়ারি , ২০২১ ০১:১৭

বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনের পেছনে বিশেষ গোষ্ঠি, দাবি শাবি উপাচার্যের

হল খুলে দেওয়ার দাবিতে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনে নেমেছে শিক্ষার্থীরা। সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়েও এই দাবিতে আন্দোলন করছে শিক্ষার্থীরা।

তবে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমদ মনে করেন, ক্যাম্পাসকে উত্তপ্ত ও সরকারকে বেকায়দায় ফেলতেই গুটিকয়েক শিক্ষার্থী এই আন্দোলন করছে। এর পেছনে অন্য কোনো গোষ্টি কলকাঠি নাড়ছে বলেও মনে করেন তিনি।

হল খোলা নিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দােলন চলাকালীন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর হল আগামী ১৭ মে থেকে খুলে দেয়ার কথা জানিয়েছে সরকার। আর ক্লাস শুরু হবে ২৪ মে থেকে। সরকারের এই সিদ্ধান্তের পর পরীক্ষা স্থগিতের সিদ্ধান্ত জানায় শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

এরপর সোমবার বিকেলে অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোরকে বলেন, হল বন্ধ রেখে পরীক্ষা শুরু করায় শিক্ষার্থীদের কিছুটা দুর্ভোগ পোহাতে হবে। এটা আমরা অনুভব করি। কিন্তু করোনার কারণে তো দুনিয়ার সবাইকেই ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে। এটি তো মানবসৃষ্ট নয়, একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এখানে আমাদের কারো কোনো হাত নেই। এই বিষয়টা তো শিক্ষার্থীদের অনুধাবন করতে হবে। তাদেরও ছাড় দেওয়ার মানসিকতা থাকতে হবে।

শাবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন

তিনি বলেন, উপাচার্য চাইলেই একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের হল খোলে দিতে পারেন না। এজন্য তাকে সংশ্লিস্টদের সাথে আলাপ করে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। সরকারের অনুমতিরও প্রয়োজন হয়। সরকার হল খোলার সিদ্ধান্ত দেয়নি। এখন আমরা কিভাবে হল খুল দেবো?

ফরিদ উদ্দিন বলেন, বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই এই আন্দোলনের সাথে যুক্ত নয়। আমাদের এখানে গোটা পঞ্চাশেক শিক্ষার্থী এমন দাবি জানিয়েছে। তারা জোর করে দাবি আদায় করে নিতে চাইছে। তাদের উদ্দেশ্য কি আমি জানি না। এটা ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করার কোনো ষড়যন্ত্র হতে পারে। এর পেছনেও অন্য কোনো গোষ্ঠিও থাকতে পারে।
 
এখন আমি যদি তাদের দাবির মুখে হল খুলে দেই এবং কোনো দুর্ঘটনা ঘটে তখন সবাই বলকে সরকারে সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপাচার্য হল খুলে দেওয়ায় এমনটি ঘটেছে- যুক্ত করেন শাবিপ্রবির এই উপাচার্য।

শাবি উপাচার্য বলেন, সরকারি সিদ্ধান্তে এখন আমরা পরীক্ষা স্থগিত করেছি। এতেও অনেক শিক্ষার্থী দুর্ভোগে পড়বে। অনেক শিক্ষার্থী পরীক্ষা দেওয়ার জন্য চলে এসেছে। এখন তাদের ফিরে যেতে হবে। এদের জন্য খারাপ লাগছে।

এরআগে দুপুরে পরীক্ষা স্থগিতের ঘোষণা দেয় শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আগামী ২৪ মে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর দ্বিতীয় ধাপের ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হবে বলে জানান উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, আগামী ১ মার্চ থেকে স্নাতক ১ম, ২য় ও ৩য় বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিলো। বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৮ টি বিভাগের মধ্যে ৮টি বিভাগ ১ মার্চ থেকে পরীক্ষা শুরুর রুটিনও প্রকাশ করে। তবে পরীক্ষা শুরুর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছেন শিক্ষার্থীরা। এই দাবিতে আন্দোলনেও নেমেছেন তারা। ২৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে হল খুলে দেওয়ার জন্য সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান স্নাতক চতুর্থ বর্ষ ও স্নাতকোত্তরের পরীক্ষা প্রসঙ্গে উপাচার্য বলেন, আমরা গত ১৭ জানুয়ারি থেকে এ পরীক্ষা শুরু করেছি তা ১৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ করার কথা ছিলো। তবে কিছু বিভাগের এখনো দু-একটি পরীক্ষা বাকি আছে। বাকি পরীক্ষাগুলো সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী নেওয়া হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত