তাহিরপুর প্রতিনিধি

০৬ মার্চ, ২০২১ ১৩:৫১

গরু না বাড়লেও বেড়েছে ছাগল

সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে ছাগল ভেড়া ও মুরগির সংখ্যা বেড়েছে। তবে তুলনামূলক ভাবে বাড়েনি গরুর সংখ্যা। উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তাদের মতে, কৃষক পরিবারগুলো আধুনিক পদ্ধতিতে পশু লালন পালন না করে মানধাতা আমলের পদ্ধতি অনুসরণ করায় বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা না পাওয়ায় হাওরাঞ্চলে গরুর সংখ্যা কমছে।

তবে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের মতে, উপজেলার ৭ টি ইউনিয়নে গরুর কোয়ান্টিটি না বাড়লেও বেড়েছে কোয়ালিটি।

উপজেলা প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য মতে, উপজেলায় ২০১৯ সালে মোট গরু ছিল ২৮ হাজার ৬৮৬ টি, ছাগল ছিল ৬ হাজার ১২১, ভেড়ার সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৮৪৯ ও এক লাখ ৩৬ হাজার ৯৭৩ টি মুরগি ছিল।

যা গত বছর ২০২০ সালের তথ্য মতে গরুর সংখ্যা ছিল ৩১ হাজার ৮৭৪ টি, ছাগল ৬ হাজার ৮০২ টি, ভেড়া ২ হাজার ৫৫ টি এবং মুরগির সংখ্যা ১ লাখ ৫২ হাজার ১৯২ টি।

আরও জানা যায়, উপজেলার মোট ৬০ টি ছোট বড় খামারী রয়েছে তবে বেশি ভাগ দেশীর প্রজাতির ও হাওরাঞ্চলে কৃষক পরিবারে লালিত পালিত হয়। হাওর এলাকায় নিয়মিত পরিচর্যা, পুষ্টিকর খাবার না খাওয়া, কৃমি রোগে আক্রান্ত, পুষ্টিহীনতাসহ নানান রোগে আক্রান্ত হওয়ায় পর সঠিক ভাবে চিকিৎসা না পাওয়ায় গরুর শারীরিক বৃদ্ধি ব্যাহত হচ্ছে। জন্ম ও নিচ্ছে অপুষ্টিজনিত বাচ্চা। আর আক্রান্তের দিক দিয়ে গরুর সংখ্যা বেশী। ছাগলের সংখ্যা কম। বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত পশুদের পশু অফিস থেকে সর্বাতœক সহযোগিতা করা হচ্ছে বলে জানায় উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা।
 
উপজেলার বাদাঘাট বাজারের ছাগল বিক্রেতা সাজ্জাদ মিয়া জানান, গত বছরের চেয়ে সরবরাহ বাড়ায় আনুপাতিক হারে ছাগলের দাম আগের তুলনায় কমেছে। করোনার কারণে গরু বিক্রি কমে গেছে। আর এখন কৃষি কাজের সময় তাই কেউ প্রয়োজন ছাড়া বিক্রি করছে না।

কৃষক সাদেক আলী জানান,আমরা আমাদের পূর্বসূরিদের দেখানো পথেই গরুসহ বিভিন্ন প্রাণি লালন পালন করি। তবে গরুর পরিমাণ বেশি। কারণ কৃষি কাজে ব্যবহার করা যায়। আমার বর্তমানে ছোট বড় মিলিয়ে ২০টি গরু আছে কিন্তু পশু অফিস থেকে কোন সুযোগ সুবিধা পাই নি কোন খোঁজ ও কেউ নেয় না।

কৃষাণী শারমিন বেগম বলে, গরু লালন পালন করতে খরচের পরিমাণ বেশী আর ছাগলের ক্ষেত্রে তার অর্ধেকেরও কম তাই হাওরাঞ্চলের গুরুর চেয়ে ছাগলের লালন পালনের সংখ্যা অনেক বেশী।   
ইজারাদার আবু তাহের জানান,বাজারে ছাগল,ভেড়া ও গরুর বেচা-কেনা কম তাই আমাদের আশিলও কম। বছরের একটি উৎসব কোরাবানী ঈদ উপলক্ষে বেচা কেনা বাড়ে না হলে এক বারেই কম। তবে ছাগলের বেচা কেনা বেড়েছে।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. উৎপল বলেন, করোনা মহামারির কারণে পশু পালনে মানুষের আগ্রহ বেড়েছে। আগের তুলনায় গরু, ছাগল, মুরগি পালন বেড়েছে। গরু কোয়ান্টিটি না বাড়লেও কোয়ালিটি বেড়েছে। ছাগলের সংখ্যা বেড়েছে। বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত পশুদের উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হচ্ছে বলে জানান উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত