নিজস্ব প্রতিবেদক

১০ মার্চ, ২০২১ ১৭:৫৭

অনন্ত হত্যা মামলায় সাক্ষ্য দিলেন বোন জামাই

বিজ্ঞান লেখক ও ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশ (৩২) হত্যা মামলার সাক্ষ্য প্রদান করেছেন আরেক সাক্ষী। বুধবার (১০ মার্চ) সিলেটের সন্ত্রাস বিরোধী ট্রাইব্যুনাল সাক্ষ্য প্রদান করেন অনন্তের বড় বোনের স্বামী আইনজীবী সমর বিজয় সী শেখর। তিনি মামলার ১৯তম সাক্ষী হিসবে আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেন।

সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. নুরুল আমিন বিপ্লব ২৩ মার্চ মামলাটির পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী প্যানেলের প্রধান এমাদ উল্লাহ শহিদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আলোচিত এ মামলায় এ পর্যন্ত ২৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ হয়েছে। আরও ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য দেওয়া বাকি রয়েছে।

এরআগে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি নির্ধারিত তারিখে সাক্ষীরা না আসায় চাঞ্চল্যকর এই মামলার সাক্ষগ্রহণ পিছিয়ে গিয়েছিলো।

এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)-এর পরিদর্শক আরমান আলী ২০১৭ সালের ৯ মে সম্পূরক অভিযোগপত্র প্রদান করেন। এতে সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার আবুল হোসেন (২৫), খালপাড় তালবাড়ির ফয়সাল আহমদ (২৭), সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের বিরেন্দ্রনগরের (বাগলী) মামুনুর রশীদ (২৫), কানাইঘাটের পূর্ব ফালজুর গ্রামের মান্নান ইয়াইয়া ওরফে মান্নান রাহী ওরফে এ বি মান্নান ইয়াইয়া ওরফে ইবনে মঈন (২৪), কানাইঘাটের ফালজুর গ্রামের আবুল খায়ের রশীদ আহমদ (২৫) ও সিলেট নগরের রিকাবীবাজার এলাকার সাফিউর রহমান ফারাবী ওরফে ফারাবী সাফিউর রহমান (৩০) কে অভিযুক্ত করা হয়। এদের মধ্যে মান্নান ইয়াহিয়া কারাগারে আটক অবস্থায় মারা যান। বর্তমানে আবুল খয়ের রশিদ আহমদ ও শফিউর রহমান ফারাবী কারাগারে আটক এবং বাকী আসামিরা শুরু থেকেই পলাতক রয়েছেন। আসামি ফারাবীকে আরেক ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যা মামলাল যাবজ্জীবন দণ্ড প্রদান করা হয়েছে।

বুধবার সাক্ষ্যগ্রহণকালে আবুল খায়ের রশিদ আহমদকে সিলেট কারাগার থেকে এবং শফিউর রহমান ফারাবী ঢাকা কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা করা হয়।

বুধবার বাদীপক্ষের মামলা পরিচালনায় আজ অংশ নেন এমাদ উল্লাহ শহিদুল ইসলাম শাহিন ও মোহাম্মদ মনির উদ্দিন। আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন আব্দুল আহাদ এবং জাকিয়া তাহমিনা রিপা।

২০১৫ সালের ১২ মে সিলেট নগরের সুবিদবাজারে নুরানি আবাসিক এলাকার নিজ বাসার সামনে খুন হন অনন্ত। বিজ্ঞান নিয়ে লেখালেখির পাশাপাশি তিনি ‘যুক্তি’ নামে বিজ্ঞানবিষয়ক একটি পত্রিকা সম্পাদনা করতেন। এ ছাড়া বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন অনন্ত। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজকর্ম বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে অনন্ত সুনামগঞ্জের জাউয়াবাজারে পূবালী ব্যাংকের ডেভেলপমেন্ট অফিসার পদে কর্মরত ছিলেন।

হত্যাকাণ্ডের দিন রাতে অনন্তের বড় ভাই রত্নেশ্বর দাশ বাদী হয়ে সিলেট মহানগর পুলিশের বিমানবন্দর থানায় অজ্ঞাতনামা চারজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। এতে বিজ্ঞান বিষয়ে লেখালেখির কারণে অনন্তকে ‘উগ্র ধর্মান্ধ গোষ্ঠী’ পরিকল্পিতভাবে খুন করেছে বলে অভিযোগ করা হয়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত