তাহিরপুর প্রতিনিধি

১৪ এপ্রিল, ২০২১ ২০:০৪

তাহিরপুরে মাটি কাটার জেরে হামলা, আহত ৮

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বড়দল দক্ষিণ ইউনিয়নের টাকাটুকিয়া গ্রামে মাটি কাটার জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় এক পরিবারের নারী পুরুষসহ ৮ জন আহত হয়েছেন।

বুধবার (১৪ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলা দক্ষিণ বড়দল ইউনিয়ন রসুলপুর টুকেরগাও গ্রামে বাছিন্দ্র বর্মণের বাড়িতে এ হামলার ঘটনাটি ঘটে।

আহতরা হলেন,টাকাটুকিয়া গ্রামের বাছিন্দ্র বর্মণ(৪৪),তার সহধর্মিণী বিউটি বর্মণ(৪০),তাদের ছেলে তাহিরপুর সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্র বাবলু বর্মণ(১৬),তাদের মেয়ে সরকারী বালিকা বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী পপি বর্মণ, একই বিদ্যালয়ে বাছিন্দ্র বর্মণের ভাতিজী পলি বর্মণ(১৪), লজিন বর্মণ, সত্যন্দ্র বর্মণ প্রমুখ।

স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার রসুলপুর টুকেরগাওঁ গ্রামের শিপলু বর্মণ,সঞ্জিত বর্মণ সকালে তাদের বাড়ির সামনে মাটি কাটতে গেলে টুকেরগাওয়ের মো. মুক্তারের ছেলে কাশেম মিয়া, বিল্লালের ছেলে মুসা মিয়া ও পাভেল তাদের বাধা দেয় ও কথা কাটাকাটি হয়। এরপর টুকেরগাও গ্রামের মো. মুক্তার হোসেন, তার ছেলে কাশেম মিয়া, বিল্লাল হোসেন, তার ছেলে মুসা মিয়া, পাভেল মিয়া শহীদ মিয়া, রুহিত, ফালু মিয়ার নেতৃত্বে তাদের সহযোগিরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শিপলু বর্মণ, সঞ্জিতের উপর হামলা চালায়। পরে তারা বাছিন্দ্র বর্মণের বাড়িতে হামলা চালায়। এসময় তাদেরকে বাধা দিলে ঐ পরিবারের ৮ জন সদস্যকে গুরুতর আহত করা হয়। আহতদেরকে তাৎক্ষনিক তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাছিন্দ্র বর্মণ, তার সহধর্মিণী বিউটি বর্মণ ও ছেলে বাবলু বর্মণের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় এই তিনজনকে সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে আহতরা সবাই চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

সত্যেন্দ্র বর্মণ জানান, টুকেরগাও গ্রামের বখাটেরা দীর্ঘদিন ধরে আমার ভাতিজিদের (দুটি কিশোরীকে) স্কুলে আসা যাওয়ার পথে মোটরসাইকেল চালিয়ে তাদের গতিরোধ করে। বাড়িতে এসে টুকেরগাও গ্রামের মো. মুক্তার হোসেন, তার বখাটে ছেলে কাশেম মিয়া, বিল্লাল হোসেন, তার ছেলে মুসা মিয়া, পাভেল মিয়া শহীদ মিয়া, রুহিত, ফালু মিয়া বিরক্ত করে আসছিল। এ নিয়ে এলাকায় সালিশ বৈঠক হলেও কোনধরনের সুরাহা হয়নি। এর জের ধরেই আজ মাটি কাটতে গেলেই ঐসব বখাটেরা আমার পরিবারের উপর হামলা করে।

খবর পেয়ে তাহিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আব্দুল লতিফ তরফদার ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এছাড়া সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুল ও তাহিরপুর উপজেলা আ. লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আলমগীর খোকন ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও হাসপাতালে আহতের দেখতে আসেন।
এদিকে খবর পেয়ে জেলা সদর হাসপাতালে ছুটে আসেন তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল ও জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট বিমান কান্তি রায়।

এ ব্যাপারে তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল বলেন, হিন্দু পরিবারের বাড়িঘরে হামলা খুবই দুঃখজনক। তিনি তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও থানার অফিসার ইনচার্জকে তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন।

এ ব্যাপারে তাহিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আব্দুল লতিফ তরফদার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান অভিযোগ পেলে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত