নিজস্ব প্রতিবেদক

১৬ এপ্রিল, ২০২১ ২৩:১৬

লকডাউনে সরকারের বরাদ্দ পৌঁছেনি কর্মহীনদের হাতে

গতবছরের লকডাউনে কর্মহীনদের মধ্যে সরকারি উদ্যোগে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয় (ফাইল ছবি)

করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় গত ১৪ এপ্রিল থেকে সারাদেশে সরকারি বিধিনিষেধের নামে ‘কঠোর লকডাউন’ চলছে। লকডাউনে জরুরি সেবা ও শিল্পকারখানা ছাড়া বন্ধ রয়েছে সবকিছু। এতে বিপাকে পড়েছেন নিম্নবিত্তরা। বিশেষত দিনমজুর শ্রেণির মানুষেরা লকডাউনের কারণে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন।

কর্মহীন হয়ে পড়া এসব মানুষদের সহায়তার জন্য ৫৭২ কোটি লাখ ২৭ হাজার টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। গত ৮ এপ্রিল তথ্য অধিদপ্তরের এক তথ্য বিবরণীতে এই বরাদ্দের তথ্য জানানো হয়। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দকৃত এই টাকা দেশের ১ কোটি ২৪ লাখ ৪১ হাজার ৯০০ পরিবারের মধ্যে বিতরণ করা হবে বলেও তথ্য বিরণীতে জানানো হয়।

তবে সরকারের বরাদ্দকৃত এই অর্থ এখন পর্যন্ত কর্মহীনদের হাতে পৌঁছেনি। ‘লকডাউন’ আর ‘কঠোর লকডাউন’ মিলিয়ে ১১ দিন পেরুতে চললেও শুক্রবার পর্যন্ত কারো হাতেই পৌঁছেনি সরকারি সহায়তা।

সিলেটের জেলার জেলা প্রশাসকসহ জানিয়েছেন, সরকারি অর্থ বরাদ্দ পেয়েছেন। এখন সুবিধাভোগীদের তালিকা যাচাইবাছাই চলছে। সরকারি নির্দেশনা পেলে বন্টন শুরু হবে।

৮ এপ্রিল সরকারি বরাদ্দ প্রদান সংক্রান্ত তথ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিবরণীতে জানানো হয়- ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় সারাদেশের ৬৪টি জেলার ৪৯২টি উপজেলার জন্য ৮৭ লক্ষ ৭৯ হাজার ২০৩টি কার্ড এবং ৩২৮টি পৌরসভার জন্য ১২ লাখ ৩০ হাজার ৭৪৬টি কার্ডসহ মোট ১ কোটি ৯হাজার ৯৪৯ টি ভিজিএফ কার্ডের বিপরীতে ৪৫০ কোটি ৪৪ লাখ ৭৭ হাজার ৫০ টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়। পরিবার প্রতি ১০ কেজি চালের সমমূল্য অর্থাৎ কার্ড প্রতি ৪৫০ টাকা হারে আর্থিক সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে উপজেলাসমূহের জন্য ৩৯৫ কোটি ৬ লাখ ৪১ হাজার ৩৫০ টাকা এবং পৌরসভাগুলোর জন্য ৫৫ কোটি ৩৮ লাখ ৩৫ হাজার ৭ শ’ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।

এতে উল্লেখ করা হয়- কোভিড পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত অসহায় পরিবারকে তাৎক্ষণিকভাবে খাদ্য সহায়তার জন্য ১২১ কোটি ৬৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। দেশের ৬৪ জেলার ৪ হাজার ৫৬৮টি ইউনিয়নে প্রতিটিতে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা হারে মোট ১১৪ কোটি ২০ লাখ টাকা মানবিক সহায়তা হিসেবে প্রদানের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়। এছাড়া সারাদেশের ৩২৮টি পৌরসভার অনুকূলে ৫ কোটি ৬৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এছাড়া ঢাকা দক্ষিণ, উত্তর, গাজীপুর ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরশেনের জন্য ৭ লাখ টাকা করে এবং ময়মনসিংহ, কুমিল্লা, রাজশাহী, নারায়ণগঞ্জ, রংপুর খুলনা বরিশাল ও সিলেট সিটি করপোরেশনকে ৫ লাখ টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

সরকারি বরাদ্দ পেয়েছেন জানিয়ে সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম বলেন, লকডাউনের কারণে এই বরাদ্দ কিনা তা আলাদাভাবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়নি। তবে সম্প্রতি ভিজিএফের কার্ডের অনুপাতে সরকারি বরাদ্দ এসেছে। এছাড়া প্রতি ইউনিয়নে গরীবদের সহায়তার জন্য আড়াই লাখ টাকা করে বরাদ্দ এসেছে।

তিনি বলেন, ভিজিএফ কার্ডধারী বা সহায়তাপ্রাপ্তদের তালিকা আগেই করা আছে। আগেও আমরা সহায়তা বিতরণ করেছি। এই তালিকা আবার যাচাইবাছাই করে নেওয়া হচ্ছে। সরকারি নির্দেশনা পেলেই বিতরণ শুরু হবে।

তবে এখন পর্যন্ত এরকম কোনো বরাদ্দ বা নির্দেশনা পাননি বলে জানিয়েছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিধায়ক রায় চৌধুরী।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত