তাহিরপুর প্রতিনিধি

১৭ মে, ২০২১ ২১:১০

তাহিরপুরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষে আহত ১০

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার আনোয়ারপুর বাজারে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১০ জন আহত হয়েছে। ঘটনার পর থেকেই এলাকায় পুলিশের উপস্থিতি থাকলেও এখনো পর্যন্ত উত্তেজনা বিরাজ করছে।

রোববার (১৬ মে) রাত ৮টায় উপজেলার বালিজুড়ী ইউনিয়নের আনোয়ারপুর বাজারে সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটে।

অপরদিকে সংঘর্ষে আহত ফয়সাল আহমেদের লোকজন দেশীয় অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে আনোয়ারপুর বাজারে অবস্থান করায় ব্যবসায়ীরা আতংকে রয়েছেন। যে কোন সময় আবারও সংঘর্ষ ঘটার আশংকা রয়েছে।

বাজার ব্যবসায়ীরা জানান, উপজেলার বালিজুড়ী ইউনিয়নের আনোয়ারপুর এলাকায় দীর্ঘ দিন ধরে আধিপত্য বিস্তার করে আসছে ফয়সালের ছেলে তার আট ভাই ও তাদের সহযোগীরা।

অভিযোগ রয়েছে ফয়সল গংরা নানান ভাবে সাধারণ মানুষদের হয়রানি ও মারপিট করে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় আনোয়ারপুর বাজারের রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী মনবুল মিয়া ও মুদি দোকানি ইছাক মিয়াকে বালিজুড়ি ইউনিয়নের সম্ভাব্য ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থী ফয়সল আহমদ তার সাথে নির্বাচনী প্রচারণায় যেতে বলেন। মনবুল মিয়া ও ইছাক মিয়া এতে অনিচ্ছা প্রকাশ করলে ফয়সাল তার আট ভাই, তাদের বাহিনীসহ সুফিয়ান(৩০), আলীনুর(৫০),হবিব মিয়া(২৮), মাহবুব মিয়া(২৫), আলীনুর, খোকন, অনিক, ফয়সলের আপন ভাই আবুল কাশেম, সেলিম, রহমগীর, আলমগীর, সুজন ও দক্ষিণক‚ল গ্রামের আজির উদ্দিন ও বাহাউদ্দিনসহ ২০-২৫ জন মিলে আনোয়ারপুর বাজারে বাজারে ২৫-৩০টি দোকানে হামলা ও লুটপাট চালায়।

এসময় বাজার ব্যবসায়ীসহ সাধারন মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ করতে গেলেই হাতাহাতি ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় ব্যবসায়ী মনবুল মিয়া, ইছাক মিয়া ও ফয়সল আহত হয়। গুরুতর আহত মনবুল মিয়া, ইছাক মিয়া ফয়সল আহমদ তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বর্তমানে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

স্থানীয় ব্যবসায়ী ইসমাইলসহ এলাকাবাসী জানান, ফয়সাল বিএনপি রাজনীতির সাথে জড়িত থাকলেও আওয়ামী লীগের লোকজনের সাথে রয়েছে তার সখ্যতা। তার মা বাবা ও তার আট ভাই ছিল পাথর ভাঙ্গার মেশিনে, বালু পাথর উত্তোলনে দিন মজুর শ্রমিক। পূর্বে তার কোন সম্পত্তি না থাকলেও চাঁদাবাজিসহ নানান অপকর্ম করে এখন কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন।

সম্প্রতি উপজেলার বালিজুরি ইউনিয়নের আনোয়ারপুর বাজার বণিক সমিতির সভাপতির দায়িত্ব নিয়ে ফয়সলের নির্দেশে তার সহযোগীরা আরও বেপরোয়া হয়ে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে ও ভয় পায় সাধারণ মানুষ। কথা বললেই মামলা মামলা ও হয়রানীর শিকার হতে হবে।

ফেরদৌস, সাবিবসহ উপজেলার সচেতন মহল বলছেন,ফাজিলপুরে চাদাঁবাজিসহ ফয়সাল নিজের আধিপত্য বিস্তার করতে তার আট ভাইসহ তার সন্ত্রাসী বাহিনী দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এলাকায় সাধারণ মানুষের মাঝে আতংক সৃষ্টি করে আসছিল দীর্ঘদিন ধরেই। প্রশাসন কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা না নেওয়ায় দিন দিন বাড়ছে তাদের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের মাত্রা। এর একটা বিহিত করা প্রয়োজন। এই এলাকায় যত ঘটনা ঘটেছে সব কিছু ফয়সাল ও তার বাহিনীর মাধ্যমে।

আহত ফয়সলের বড়ভাই জাহাঙ্গির আলম জানান, আনোয়ার পুর বাজারে বৃষ্টির পানিতে জমে থাকা কাদা নিয়ে কথা কাটাকাটির জের ধরে একটি চক্র আমার ভাইয়ের উপর হামলা চালিয়েছে।

বালিজুরি ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও আ,লীগ নেতা বাবুল মিয়া জানান, রাতের মারামারির বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা আমি পরে শুনেছি বাজারে একটি মারামারির ঘটনা হয়েছে। ফয়সালের বিরুদ্ধে কথা বলায় তার ও তার আত্মীয় স্বজনের উপর এর পূর্বেও একাধিক বার বিভিন্ন ভাবে হামলা চালিয়ে আহত করলেও কোন বিচার পায়নি।

তাহিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল লতিফর তরফদার জানান, সংঘর্ষের খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করি। এখনও পুলিশ বাজারে টহল দিচ্ছে। এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখনো পর্যন্ত কোন অভিযোগ দায়ের করেনি কোন পক্ষ।

 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত