সিলেটটুডে ডেস্ক

০৮ আগস্ট, ২০২২ ১২:৩৭

এমসি কলেজে ধর্ষণ: মামলা ট্রাইব্যুনালে কি না জানতে চায় হাইকোর্ট

এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে তরুণীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলার অভিযুক্তরা

সিলেটের মুরারিচাঁদ কলেজের (এমসি কলেজ) ছাত্রাবাসে এক তরুণীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়েছে কি না, রাষ্ট্রপক্ষকে তা জানাতে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।

সোমবার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। একই সঙ্গে আগামী ১৪ আগস্ট এ নিয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য তারিখ নির্ধারণ করে আদালত।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সাবরিনা জেরিন ও ব্যারিস্টার এম. আব্দুল কাইয়ুম লিটন।

সাবরিনা জেরিন বলেন, যেহেতু সরকারি সিদ্ধান্ত হয়েছে মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের স্থানান্তরের। সেটি বাস্তবায়ন করা হয়েছে কি না তা আদালতের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাসকে আগামী ১৪ আগস্টের মধ্যে বিষয়টি জানাতে বলা হয়েছে। ওই দিন এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য রাখা হয়েছে।

এর আগে গত ১ আগস্ট মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন নির্যাতনের শিকার তরুণীর স্বামী।

রিটের পক্ষে ওইদিন আইনজীবী এম আব্দুল কাইয়ুম লিটন জানান, ঘটনার প্রায় দুই বছর হয়ে যাচ্ছে কিন্তু আলোচিত এ মামলার বিচারে এখনও সাক্ষ্যগ্রহণ না হওয়ায় আদালত পরিবর্তন চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে।

কেন আদালত পরিবর্তন করতে চাচ্ছেন এমন প্রশ্নের জবাবে এ আইনজীবী বলেন, সরকার একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে, চাঞ্চল্যকর মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে হবে। সেটা কিন্তু সিদ্ধান্ত নিয়েই সরকার বসে আছে। সেটি আর বাস্তবায়ন করছে না। এ কারণে চাঞ্চল্যকর এই মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরের নির্দেশনা চেয়ে আবেদন করি।

মামলা থেকে জানা যায়, ২০২০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৯টার দিকে টিলাগড় এলাকার এমসি কলেজে স্বামীর সাথে বেড়াতে আসা ওই গৃহবধূকে ক্যাম্পাস থেকে তুলে ছাত্রাবাসে নিয়ে ধর্ষণ করেন কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী।

এ ঘটনায় পরদিন সকালে নির্যাতিতা গৃহবধূর স্বামী বাদী হয়ে শাহপরাণ থানায় ছাত্রলীগ কর্মী সাইফুর রহমানকে প্রধান আসামি করে ছয়জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ২-৩ জনকে আসামি করে মামলা করেন।

২০২০ সালের ৩ ডিসেম্বর  ৮ জনকে আসামি করে দুটি মামলায় অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। আসামিরা হলেন- সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার চান্দাইপাড়ার সাইফুর রহমান (২৮), হবিগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার বাগুনীপাড়ার শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রনি (২৫) , দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার উমেদনগরের তারেকুল ইসলাম তারেক (২৮), জকিগঞ্জের আটগ্রামের অর্জুন লস্কর (২৬), দিরাই উপজেলার বড়নগদীপুরের রবিউল ইসলাম (২৫) , কানাইঘাট উপজেলার লামা দলইকান্দির মাহফুজুর রহমান মাসুম (২৫) , সিলেট নগরীর গোলাপবাগ আবাসিক এলাকার  আইনুদ্দিন ওরফে আইনুল (২৬) ও বিয়ানীবাজার উপজেলার নটেশ্বর গ্রামের মিজবাউল ইসলাম রাজনকে (২৭)।
 
গ্রেপ্তারকৃত এই ৮ আসামির সকলেই আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দেন।

বহুল আলোচিত এ মামলায় ৫১ জনকে সাক্ষী রাখা হয়েছে।

এ মামলায় আটজনকে অভিযুক্ত করে নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনে একই বছরের ৩ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।

গত বছরের ১৭ জনুয়ারি মামলায় অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মোহিতুল হক চৌধুরী।

এছাড়া এ ঘটনায় চাঁদাবাজির অভিযোগে আদালতে পৃথক চার্জশিট দেয়া হয়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত