সিলেটটুডে ডেস্ক

১২ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১৫:৪১

শাহ আবদুল করিমের গানের ‘অবিশ্বাস্য’ রয়্যালিটি

প্রায় দেড় হাজারের মতো গানের স্রষ্টা প্রয়াত লোকসাধক শাহ আবদুল করিম। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে তার ৪৭২টি গান সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয় কপিরাইট অফিস। মাত্র ছয় মাসে সেই গানগুলো থেকে যে পরিমাণ রয়্যালিটি জমা হয়েছে, সেটি ‘অবিশ্বাস্য’ বলে মন্তব্য করেছেন জুয়েল মোর্শেদ। তবে টাকার অঙ্কটি জানাতে চাননি তিনি।

শাহ আবদুল করিমের পরিবারের পক্ষ থেকে গানগুলোর কপিরাইট সুরক্ষা নিয়ে কাজ করছে জুয়েল মোর্শেদের প্রতিষ্ঠান জেডএম স্টুডিও।

জুয়েল মোর্শেদ রোববার বলেন, ‘টাকার অঙ্কটি এখনই বলতে পারব না। সেটি কপিরাইট অফিসে সংরক্ষিত হচ্ছে। শিগগিরই একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে হয়ত কপিরাইট অফিস টাকার অঙ্কটি জানাবে এবং শাহ আবদুল করিমের পরিবারের কাছে চেক হস্তান্তর করবে।

‘শুধু এটকু বলব, গত ডিসেম্বর থেকে এই জুন পর্যন্ত মাত্র ছয় মাসে যে পরিমাণ ‘রেভিনিউ’ জমা হয়েছে, সেটি এক কথায় অবিশ্বাস্য।’

’জাফর রাজা চৌধুরী কপিরাইট অফিসের রেজিস্ট্রারের দায়িত্বে থাকাকালীন শাহ আবদুল করিমের গানগুলোর রয়্যালিটি নিয়ে কাজ করার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয় জুয়েল মোর্শেদের প্রতিষ্ঠানকে।

জুয়েল বলেন, ‘শাহ আবদুল করিম দেড় হাজারেরও বেশি গান সৃষ্টি করেছেন। আমরা সকল গানগুলোকে কপিরাইটের আওতায় আনার জন্য কাজ করছি। অনেক গান উনার শিষ্যদের কাছে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। আমরা চেষ্টা করছি সবগুলো গান কপিরাইটের আওতায়। ’

জীবদ্দশায় যদি শাহ আবদুল করিম রয়্যালিটির টাকা পেতেন, তবে আলিশান জীবনযাপন করতে পারতেন বলে মন্তব্য করেন জুয়েল মোর্শেদ।

‘উনার গান বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেল এবং বাণিজ্যিক প্লাটফর্মে ব্যবহার হয়েছে। তখন যদি রয়্যালিটি পেতেন তবে তিনি আলিশান জীবনযাপন করতে পারতেন। অর্থ-কষ্টে থাকতে হত না।’

শাহ আবদুল করিমের গানের রয়্যালিটি কত টাকা জমা হয়েছে- জানতে চাইলে কপিরাইট অফিসের ডেপুটি রেজিস্ট্রার প্রিয়াংকা দেবী পাল বলেন, ‘টাকার অঙ্কটি এখন আমি বলতে পারব না। কপিরাইট অফিস শিগগিরই এই বিষয়ে জানাবে।’

২০০৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর মারা যান শাহ আবদুল করিম।

জুয়েল মোর্শেদ বলেন, শাহ আবদুল করিমের ৪৭২টি গানের কপিরাইট সংরক্ষণ করা হয়েছে। এই গানগুলো এখন কেউ বিনা অনুমতিতে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করতে পারবে না।

এদিকে গত জুলাইয়ে শুধু বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) থেকেই ৩ লাখ টাকার একটি চেক গ্রহণ করেছে শাহ আবদুল করিমের পরিবার।

করিমের ছেলে শাহ নূর জালাল বলেন, ‘প্রথম দফায় আমাকে ৩ লাখ টাকার একটি চেক দিয়েছে। বিটিভি থেকে আমাকে জানিয়েছে, এখন থেকে নিয়মিত পাব।’

প্রথমবার রয়্যালিটি পেয়ে উচ্ছ্বসিত করিমের একমাত্র ছেলে বলেন, ‘বেশ আগে থেকেই আমি বাবার গানের রয়্যালিটির বিষয় নিয়ে ঘোরাঘুরি করছিলাম। কিন্তু কোনোভাবেই সুফল পাইনি। পরে বিটিভির জি এম সাহেবের সাথে যোগাযোগ করে আন্তরিকতার সহিত সাহায্য করেছেন কপিরাইট অফিসের তৎকালীন রেজিস্ট্রার জাফর রাজা চৌধুরী স্যার। যারা এই রয়্যালিটি পাওয়ার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করছেন, তাদের কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই।’

এর আগে ২০২০ সালে ১৮ অক্টোবর থেকে কপিরাইট অফিসের ব্যবস্থাপনায় আইয়ুব বাচ্চুর ২৭২টি গান সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। সেটাই ছিল কপিরাইট অফিসের ব্যবস্থাপনায় কপিরাইট সংরক্ষণের প্রথম উদ্যোগ। এর পর শাহ আবদুল করিমের ৪৭২টি গান সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

আপনার মন্তব্য

আলোচিত