নিজস্ব প্রতিবেদক, মৌলভীবাজার:

১৮ নভেম্বর, ২০২২ ১৮:০৪

পরিবহন শ্রমিকদের ডাকে মৌলভীবাজারে চলছে পিকেটারহীন ধর্মঘট

মৌলভীবাজার শহরের চাঁদনীঘাট এলাকায় সড়কে ট্রাক সিএনজিচালিত অটোরিকশা চললেও চলছে না বাস-মিনিবাস।

মৌলভীবাজারে বাস-মিনিবাস পরিবহন শ্রমিক-শ্রমিকদের তিন দফা দাবি আদায়ে শুক্রবার ভোর থেকে ৩৬ ঘন্টার পিকেটারবিহীন ধর্মঘট চলছে। কিন্তু সড়ক-মহাসড়কে চলছে সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ বিভিন্ন ধরণের যানবাহন, বাধা দিচ্ছে না কেউ।

এদিকে বিএনপি নেতারা ধর্মঘটকে বিএনপির সিলেটের গণসমাবেশের জনস্রোত আটকাতে ক্ষমতাসীনদের হাতিয়ার বলে অভিহিত করেছেন।

মৌলভীবাজার জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন সূত্র জানায়, মৌলভীবাজার পৌর এলাকার মধ্যে বাস টার্মিনাল স্থাপন, সিএনজিচালিত অটোরিকশা নতুন করে কোনো রেজিস্ট্রেশন না দেওয়া ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার দুইদিকে গ্রীল লাগানো, এ তিন দফা দাবি আদায়ে জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন শুক্রবার ৬টা থেকে শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৩৬ ঘণ্টা ধর্মঘট পালন করছে। ধর্মঘটের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন তাদের মালিক সংগঠন।

তবে জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের আওতাধীন প্রাইভেটকার, লাইটেস, মাইক্রোবাস ও হাইয়েস গাড়ি চালকেরা ধর্মঘটের প্রতি অনেকে সাড়া না দিয়ে যানবাহন চালাচ্ছেন। নোয়াহ গাড়ির চালক আব্দুস শহীদ বলেন, ‘গাড়ির চাকা ঘুরলে পেটের দানা (ভাত) জোগাড় হইব। নাইলে বাল-বাইচ্চা লইয়া উপাস থাকা লাগব। তাই নেতাগিরি হুকুম তামিল করলে আমার পেট চলত নায়।’

নবীগঞ্জ থেকে মৌলভীবাজার আসা নিশি দাশ নামে এক পথচারী জানান, বাস-মিনিবাস না চলায় অটোরিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালকরা ২০ টাকার ভাড়া ৩০-৪০ টাকা নিচ্ছে। বারবার গাড়ি বদল করে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে। ফলে এক ঘণ্টার পথ পাড়ি দিতে দুই-তিন ঘণ্টা লাগছে। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। বিভিন্ন রুটে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ায় অটো-টেম্পু শ্রমিকদের কাছে অনেক যাত্রী হয়রানির শিকার হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জেলা বিএনপির একাধিক নেতা জানান, গণসমাবেশের দুদিন আগ থেকে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন জেলা-উপজেলাসহ গ্রামীণ জনপদ থেকে নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে গিয়ে অবস্থান করছেন। নেতাকর্মীরা দু-তিন দিন আগে আসার ফলে এক অঞ্চলের নেতাকর্মীর সঙ্গে অন্য অঞ্চলের নেতাকর্মীর হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্কের সৃষ্টি হচ্ছে।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মিজানূর রহমান ভিপি মিজান বলেন, ‘এ তো পরিবহন শ্রমিকের ধর্মঘট নয়, সিলেট বিভাগীয় গণসমাবেশের জনস্রোত ঠেকাতে ক্ষমতাসীন দলের চাপে বাস মালিকেরা তাদের পরিবহন বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছেন। নতুবা পরিবহন শ্রমিকেরা দাবি আদায়ে মাঠেও ধর্মঘট সফল করতে পিকেটিংয়ে নেই কেন? ষড়যন্ত্রমূলক হরতাল করে বিএনপির নেতাকর্মীকে আটকানোর নামে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করা হয়েছে।’

মৌলভীবাজার সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন সভাপতি ফজলুল আহমেদ বলেন, ‘তিন দফা আদায়ে পরিবহন শ্রমিকরা বাস-মিনিবাস বন্ধ রেখে ধর্মঘট পালন করছেন। বিচ্ছিন্নভাবে কিছু প্রাইভেট গাড়ি ছাড়া কোনো যানবাহন চলাচল করছে না।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত