নিজস্ব প্রতিবেদক

২৪ জানুয়ারি, ২০২৩ ২০:০২

মানুষ নদীর সত্তাকে স্বীকার করে না : সিলেটে আইনুন নিশাত

মানুষ নদীর সত্তাকে স্বীকার করে না। শাসন করতে গিয়ে বাধা দিয়ে দেয়। এতে অনেক সময় হিতে বিপরীত হয় বলে মন্তব্য করেছেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চের ইমিরেটাস অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত।

সিলেটে অষ্টম আন্তর্জাতিক পানি সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে মঙ্গলবার ‘জীবন-জীবিকার জন্য পানি ও নদী: যুবদের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে এমনটি বলেন আইনুন নিশাত। সোমবার থেকে সিলেটের নাজিমগড় রিসোর্টে শুরু হওয়া তিনদিন ব্যাপী এই সম্মেলনের আয়োজন করেছে একশনএইড বাংলাদেশ।

তিনি বলেন, ‘আমাদের দক্ষিণাঞ্চলে ল্যান্ড বিল্ডিং সম্পন্ন হয়নি। পুরোপুরি প্রস্তুত হওয়ার আগেই সেখানে মানববসতি গড়ে উঠেছে। ফলে নানা ধরনের সমস্যায় পড়তে হয়েছে।’

এতে আইনুন নিশতা আরও বলেন, ‘ওয়াটারশেড শব্দ নিয়ে বিতর্ক আছে। ওয়াটারশেড বদলাচ্ছে। আগে একটি ফসল হতো এখন তিনটি হচ্ছে। পানির প্রবাহের ওপর নির্ভর করে যে নদীভাঙনে মানুষের বসতিতে আঘাত করছে, এ জন্য আমরা নদীকে শাসন করতে যাচ্ছি। অনেক সময় এই শাসন উল্টো কাজ করে।’

এরআগে ‘পানি অধিকার, নদী এবং যুবদের কাজ’ শীর্ষক সেমিনারে সূচনা বক্তব্য দেন একশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ।

ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, শব্দের সঙ্গে তত্ত্বের ও তত্ত্বের সঙ্গে প্রয়োগের সম্পর্ক আছে। পানি শব্দটি ব্যবহার করলে বিজ্ঞান বলবে হাইড্রোজেন-অক্সিজেন মিলে পানি হয়। সামাজিকভাবে ব্যবহার করতে হলে সেখানে পলিটিকস, পাওয়ার, পলিউশন থাকতে হবে। নদী শব্দের মধ্যে প্রাণ, আত্মা ও শক্তি দেখি। এই তিনটি জিনিস থাকতে হবে।

তিনি বলেন, ‘আমরা পতাকাকে স্যালুট দিই কিন্তু তার পেছনে থাকা মানুষকে ভুলে যাই। দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাসে ব্রিটিশরা ভেঙে টুকরো টুকরো করে দিয়েছে।’

ইমতিয়াজ আহমেদ আরো বলেন, ‘যুবদের একটি সংজ্ঞায় বলা হয় ১৫ থেকে ২৯ বছর পর্যন্ত যুবক। আমার মনে হয় এভাবে মূল্যায়ন করা ঠিক হবে না। যার মধ্যে প্রাণশক্তি আছে সেই তরুণ। এটি বয়সের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়।’

নেচার কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্টের নির্বাহী পরিচালক এস এম মঞ্জুরুল হান্নান খানের সঞ্চালনায় এতে প্যানেল আলোচক ছিলেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী।

আলোচনায় অংশ নেন পোস্টড্যাম ইনস্টিটিউট ফর ক্লাইমেট ইম্পেক্ট রিসার্চের বৈজ্ঞানিক মোহাম্মদ মফিজুর রহমান, ডেলফ ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির শিক্ষার্থী গাবরিয়েলা গডলিউয়েস্কি, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক জহির বিন আলম, রিভারাইন পিপলের সেক্রেটারি জেনারেল শেখ রোকন প্রমুখ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত