ডেস্ক রিপোর্ট

১০ ফেব্রুয়ারি , ২০১৫ ১৪:৩৩

২৪ ঘণ্টায় ৩২ মৃত্যু: কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন অজুহাত

এত অল্প সময়ের মধ্যে একই সাথে হাসপাতালে এত মানুষের মৃত্যু নজিরবিহীন

সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১০ শিশুসহ ৩২ জনের মৃত্যুতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দেখাচ্ছে ভিন্ন ভিন্ন অজুহাত আর অভিভাবকেরা বলছেন ডাক্তারদের অবহেলাকে। 

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এলাকায় বিরাজ করছে টানটান উত্তেজনা। অনেকেই একই সাথে এত মানুষের মৃত্যুর ঘটনাকে নজিরবিহীন হিসেবেও আখ্যা দিয়েছেন।

জানা যায়,সোমবার সন্ধ্যা থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত এসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। ঘটনায় ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে হাসপাতাল কতৃপক্ষ ।

স্বজনদের অভিযোগ, চিকিৎসকদের অবহেলায় এদের মৃত্যু হয়েছে। এই অভিযোগ নাকচ করে হাসপাতালের উপপরিচালক আবদুস সালাম বলেন, ঠান্ডাজনিত সমস্যা, নিউমোনিয়া ও ডায়রিরার কারণে এই শিশুদের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা পাওয়া গেছে। চিকিৎসকের অবহেলা ছিল না।
মৃত শিশুরা হলো- সিলেটের গোয়ান উপজেলার দেড় বছরের সায়মা, জকিগঞ্জের দশগ্রামের সাতদিনের আকাশ, নগরীর শেখঘাট এলাকার নিলুফার নবজাতক, শহরতলীর শাহ পরানের আসমার নবজাতক, একই এলাকার সন্ধ্যা রানীর নবজাতক, সুনামগঞ্জ সদরের তাজরিয়া, একই এলাকার আড়াই মাসের মেহেদি, ছাতকের তিন বছর বয়সী শাপরাজ, সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুরের ছয়মাসের নাদিয়া ও হবিগঞ্জের তিনদিনের শিশু ইয়াসমিন।

ডা. সালাম জানান, শিশু মৃত্যুর এ ঘটনায় মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. ইসমাইল পাটোয়ারীকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন-শিশু বিভাগের প্রধান ডা. মনজ্জির আলী ও আবাসিক চিকিৎসক রঞ্জন কুমার রায়।

এদের ছয়জন জন্ম জটিলতায়, দুই জন অপুষ্টিজনিত সংক্রমণে, একজন নিউমোনিয়ায় ও অন্য একজন ঠাণ্ডাজনিত রোগে মারা গেছে বলে জানান হাসপাতালের উপপরিচালক সালাম।

“জন্মগত জটিলতা, মারাত্মক সংক্রমণ, অপুষ্টি ও নিউমোনিয়ার কারণেই শিশুগুলোর মৃত্যু হয়েছে। এটা স্বাভাবিক মৃত্যু,” বলেন তিনি।

তবে স্বল্প সময়ের ব্যবধানে এতোগুলো শিশুর মৃত্যুর এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে অন্যান্য রোগী এবং মৃত শিশুদের স্বজনরা বলছেন, চিকিৎসায় অবহেলার কারণেই এতগুলো শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

নবজাতক সন্তানকে হারানো সন্ধ্যা রানীর স্বামী রানা পাল বলেন, “হাসপাতালের নার্স ও কর্তব্যরত চিকিৎসকদের অবহেলার কারণেই শিশুগুলো মারা গেছে।

“ভর্তির পর শিশুর ঠিকমতো পরিচর্যা করেননি ডাক্তার-নার্সরা। স্বজনরা রোগীদের অবস্থা জানাতে নার্স ও চিকিৎসকদের কাছে গেলে তারা দুর্ব্যবহার করে তাড়িয়ে দেন।”

তদন্ত করে দায়ী চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান তিনি।

 

 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত