মৌলভীবাজার সংবাদদাতা

১১ ফেব্রুয়ারি , ২০১৫ ১২:২২

মৌলভীবাজারে নাশকতায় ১০টি মামলা,বেশির ভাগ আসামী পলাতক

মামলার বেশির ভাগ আসামীকে এখনো ধরতে পারেনি পুলিশ। রাজনীতির এই অস্থিরতার প্রভাব পড়ছে জন জীবনে। চলমান এই অবস্থায় উদ্বিগ্ন আর ক্ষুব্ধ পেশাজীবি মানুষ।

টানা হরতাল-অবরোধে জানুয়ারী মাসে মৌলভীবাজার জেলায় বড় কোন ঘটনা না ঘটলেও বিছিন্ন কয়েকটি নাশকতার ঘটনায় ১০টি মামলা হয়েছে। তবে মামলার বেশির ভাগ আসামীকে এখনো ধরতে পারেনি পুলিশ। রাজনীতির এই অস্থিরতার প্রভাব পড়ছে জন জীবনে। চলমান এই অবস্থায় উদ্বিগ্ন আর ক্ষুব্ধ পেশাজীবি মানুষ।
গত এক মাসে বিএনপি নেতৃতাধীন ২০ দলের ডাকা হরতাল-অবরোধের সময় জেলায় আলাদা ঘটনায় ৪টি গাড়ীতে আগুন , অন্তত ১৫টি গাড়ী ভাংচুর ও রেল লাইনের ফিস প্লেইট উপড়ে ফেলায় উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিনসহ ৭টি বগি লাইন চ্যাুত হয়। নাশকতায় ১জন দগ্ধসহ আহত হয়  অন্তত ৫০ জন। এ সব ঘটনায় ২টি মামলা রেলওয়ে পুলিশ ও ৮টি মামলা জেলা পুলিশের অধীনে হয়েছে। চলমান অশুভ রাজনীতির ভয়াবহতার স্বীকার হচ্ছেন শিক্ষার্থীসহ সাধারন মানুষ। স্থবিরতা নেমে এসেছে ব্যবসা-বানিজ্যে। বিপর্যস্থ হয়ে পড়েছে জনজীবন। এমন অবস্থায় উদ্বিগ্ন আর ক্ষোব্ধ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ।
জেলা বিএমএ সভাপতি  ডা: সাব্বির আহমদ খান চলমান অবস্থা সম্পর্কে বলেন, বর্তমানে দেশে যা চলছে তা কখনো আন্দোলন হতে পারে না । এটি নাশকতা,সহিংসতা । তা অচিরেই কঠোর হাতে সরকারকে দমন করা উচিত । নাশকতাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তি দেয়া ্উচিত। দেশ রক্ষায় এবং জনগনের জান মালের নিরাপত্তায় প্রয়োজনে আইন করে হরতাল অবরোধ নিষিদ্ধ করে দিতে হবে।
মৌলভীবাজার দি চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্টিজ এর সাধারন সদস্য শাহ ফয়জুর রহমান রুবেল বলেন বর্তমান অবস্থায় ব্যবসায়ীরা সবচেয়ে বেশী ক্ষতি গ্রস্থ হচ্ছে । এই ক্ষতি পূরন হবার নয়। ব্যাংক লোনের কিস্থি, দোকান ব্যবস্থাপনা,কর্মচারী বেতন দিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান টিকিয়ে রাখতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে ব্যবসা বন্ধ করে দিতে হবে। এই অবস্থা থেকে পরিত্রান চান আমরা।
বাংলা একাডেমীর তালিকাভূক্ত লেখক ও লোক গবেষক মাহফুজুর রহমান বলেন, এভাবে পেট্রোল দিয়ে মানূষ পুড়িয়ে মারা অমানবিক কাজ। এটা কোন রাজনৈতিক শিষ্ঠাচার হতে পাবে না। এ ধরনের কাজের সাথে যারা জড়িত তাদের উপযুক্ত শাস্তির দাবী করেন তিনি।
জেলা আওয়ামী শিল্পী গোষ্টীর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নাহিদ আহমদ বলেন,এসএসসি পরীক্ষা চলার সময় হরতাল অবরোধের কারনে বারবার পরীক্ষা পেছানোর ফলে পরীক্ষার্থীরা মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছেন। মানসিকভাবে বিপর্যস্থ হচ্ছেন তারা। এর প্রভাব গিয়ে পড়বে কাঙ্খিত ফলাফলের উপর। আর অভিভাবকরা রয়েছেন আতঙ্কে। তাই সন্ত্রাস,নৈরাজ্য,নাশকতা পরিহার করে চলমান সংকট রাজনৈতিক ভাবে মোকাবেলা করার আহবান জানান তিনি।
জেলা আইনজীবি সমিতির গ্রন্থাগার সম্পাদক মাসুক আহমদ বলেন বর্তমান অবস্থায় আমরা উদ্বিগ্ন। চলমান অস্থিরতা ও নাশকতার দায় বড়দল গুলো এড়াতে পারেন না। এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে সমাধানের পথে হাটতে হবে। নাশকতা করে,নীরিহ মানুষ পুড়িয়ে মেরে সমস্যার সমাধান হবে না।
এদিকে পুলিশ জানায়,মৌলভীবাজারে নাশকতা কর্মকান্ডের ফলে জেলা পুলিশের অধীন ৮টি মামলায় ৩১৮ জন এজাহার ভুক্ত আসামী এবং অঞ্হাত আরো কয়েক শত । এরা সবাই বিএনপি ও জামায়াতের সমর্থক। এদের মধ্যে ৫৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং ৪৫ জন উচ্চ ও নি¤œ আদালত থেকে জামিনে আছেন। তবে বেশির ভাগ আসামীরা রয়েছেন পলাতক ।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: খাইরুল আলম জানান নাশকতা মামলার আসামীদের ধরতে বারবার তাদের বাড়ীতে ও সন্দেহ জনক স্থানে তল্লাশি করা হচ্ছে। তবে কিছু আসামী পলাতক থাকায় তাদের ধরা যাচ্ছে না । নাশকতা বন্ধে পলাতক আসামীদের ধরতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে ।
সহিংসতা আর নাশকতার পথ ছেড়ে রাজনৈতিক উপায়ে চলমান সংকট দ্রত  নিরসন হবে। জন জীবনে ফিরে আসবে স্বস্থি। সাধারন মানূষ স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি পাবে । ব্যবসায়ীরা ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাবেন আর নিরাপদে  শিক্ষার্থীরা  পরীক্ষা দিতে পারবে। এমনটাই প্রত্যাশা সকল নাগরিকের।

 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত