মৌলভীবাজার সংবাদদাতা

১১ ফেব্রুয়ারি , ২০১৫ ১৮:৪১

মৌলভীবাজার সরকারি কলেজে অধ্যক্ষের কক্ষে তালা

শিক্ষক সূত্রে জানা যায়, বেশকিছু ছাত্র অধ্যক্ষ বদরুজ্জামান চৌধুরীর কক্ষে গিয়ে তাঁর সম্পর্কে উচ্চস্বরে কথাবার্তা বলেন। এক পর্যায়ে অধ্যক্ষের কক্ষের দরজার উপর রাখা অধ্যক্ষের নামফলকটি নামিয়ে ফেলে তাঁরা।

মৌলভীবাজার সরকারি কলেজে অধ্যক্ষের কক্ষে তালা দেওয়া হয়েছে। বুধবার (১১ ফেব্র“য়ারি) দুপুর ১২টার দিকে কিছু ছাত্র অধ্যক্ষের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন। এর আগে গত রোববার (৮ ফেব্র“য়ারি) আরও একবার ছাত্রলীগের নেতৃত্বে অধ্যক্ষের কক্ষে তালা মারা হয়েছিল।
শিক্ষক সূত্রে জানা যায়, বেশকিছু ছাত্র অধ্যক্ষ বদরুজ্জামান চৌধুরীর কক্ষে গিয়ে তাঁর সম্পর্কে উচ্চস্বরে কথাবার্তা বলেন। এক পর্যায়ে অধ্যক্ষের কক্ষের দরজার উপর রাখা অধ্যক্ষের নামফলকটি নামিয়ে ফেলে তাঁরা। কক্ষে নামের তালিকা লেখা বোর্ডে অধ্যক্ষের নামটি ঘষামাজা করে মোছার চেষ্টা করা হয়। এর পর কক্ষে তালা মেরে ছাত্ররা চলে যান।
কলেজের উপাধ্যক্ষ ড. ফজলুল আলী এ ব্যাপারে বলেন, ‘আমি এসময় শিক্ষকদের নিয়ে ক্যাম্পাসে ভিজিলেন্স টিমে ছিলাম। শুনেছি কিছু ছাত্র এসে তালা মেরেছে। নতুন কলেজে এসেছি। সবাইকে চিনি না। এখন সিনিয়র শিক্ষকদের সাথে কথা বলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’ উপাধ্যক্ষ আরো জানান, কলেজের অধ্যক্ষ দুদিন ধরে ছুটিতে আছেন। তিনি এ সময় কক্ষে ছিলেন না। তবু দাপ্তরিক কাজের জন্য কক্ষটি খোলা ছিল।
ছাত্ররা জানায়, মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী গত ৮ ফেব্র“য়ারি অধ্যক্ষের কক্ষে প্রথমবার তালা দেয়। পরে বিক্ষোব্ধ ছাত্রলীগ কর্মিরা চলে গেলে অন্যান্য শিক্ষকদের উপস্থিতিতে অধ্যক্ষের কক্ষের তালা ভাঙা হয়। ৭ ফেব্র“য়ারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মো. শহীদুল্ল¬াহ অবসরজনিত ছুটিতে গেলে কলেজের উপাধ্যক্ষ বদরুজ্জামান চৌধুরী অধ্যক্ষের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তাঁকে (বদরুজ্জামান চৌধুরীকে) অধ্যক্ষের দায়িত্ব থেকে বিরত রাখতে এই তালা ঝুলানো হয়।
অধ্যক্ষ বদরুজ্জামান চৌধুরী জানান, গত ৭ ফেব্র“য়ারি ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী তাঁকে অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব না নিতে বলে। তিনি অন্যত্র বদলি না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালনের কথা তাদেরকে (নেতৃবৃন্দকে) বলেছেন। এর পর গত রোববার (৮ ফেব্র“য়ারি) ছাত্রলীগের কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিমসহ কয়েকজন এসে অধ্যক্ষের কক্ষে তালা দিয়ে যায়।   বদরুজ্জামান চৌধুরী আরো বলেন, ‘আমি দুদিন ধরে ছুটিতে আছি। শুনেছি আমার নেম-প্লেইট ফেলে দিয়ে অনার বোর্ড থেকে নাম মোছার চেষ্টা হয়েছে। মৌলভীবাজার সরকারি কলেজে অতীতে এ রকম ঘটনা ঘটেনি। এটা কলেজের জন্য একটি খারাপ উদাহরণ।’
জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি জাকারিয়া আহমদ সমর্থিত মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. রেজাউল করিম জানান, কলেজের সাধারণ ছাত্ররা তাঁকে বলেছেন উপাধ্যক্ষ বদরুজ্জামান চৌধুরী অধ্যক্ষ হিসেবে কলেজে যোগদান করছেন। তিনি জামায়াতপন্থী। তাঁকে সাধারণ ছাত্ররা অধ্যক্ষ হিসেবে চাইছে না। তখন তাঁকে (বদরুজ্জামান চৌধুরীকে) বলা হয়েছে, তিনি যেন কলেজে না আসেন। কিন্তু ৯ ফেব্র“য়ারি তাঁর অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের কথা থাকলেও তিনি ৮ ফেব্র“য়ারি অধ্যক্ষের আসনে বসেন। এতে সাধারণ ছাত্ররা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। সাধারণ ছাত্রদের নিবৃত্ত করতে এদিন (৮ ফেব্র“য়ারি) কলেজের কেরানির মাধ্যমে কক্ষে তালা দেওয়া হয়েছে। আর ‘আজকে সাধারণ ছাত্ররা তালা মেরে স্টাফের কাছে চাবি দিয়ে গেছে। আমরা শুনে পরে গিয়ে দেখেছি তালা মারা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত