নিজস্ব প্রতিবেদক

২০ মার্চ, ২০২৪ ২১:২৭

পুকুরটি আর পুকুরে ফিরছে না, উল্টো হচ্ছে ভরাট

পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ছাড়া পুকুর ভরাটের জরিমানার এক লাখ ৭০ হাজার টাকা পরিশোধ করে আবারও পুকুরটি ভরাট শুরু করেছেন সিলেট নগরীর পাঠানটুলা এলাকার মো. আব্দুল হাদী ও সানী উল বারী নামে দুই ব্যক্তি।

জরিমানার পাশাপাশি পরিবেশ অধিদপ্তরের আদেশ ছিল- একমাসের মধ্যে ভরাট করা পুকুরটি আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হবে। কিন্তু তা না করে অভিযুক্ত দুজন একমাসের মধ্যে আবারও পুকুর ভরাট শুরু করেছেন।

গত শুক্রবার (১৫ মার্চ) থেকে আবারও পুকুর ভরাট শুরু করেন তারা। প্রথমে রাতে পুকুর ভরাট করলেও বর্তমানে দিনেও পুকুর ভরাটের কাজ চলছে।

এর আগে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) কর্তৃক পুকুর ভরাটের তথ্য প্রদানের প্রেক্ষিতে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি পরিবেশ অধিদপ্তর, সিলেট জেলা কার্যালয়ের পরিদর্শক মো. মামুনুর রশিদ ও সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের সিনিয়র টেকনিশিয়ান আল মামুন বিতর্কিত স্থানটি পরিদর্শন করেন। বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯০ (সংশোধিত ২০১০) এর ধারা ৬(৫) পরিবেশ অধিদপ্তর, সিলেট জেলা কার্যালয় কর্তৃক সরেজমিনে পরিদর্শনপূর্বক পুকুর ভরাটের অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় মামলা করা হয়। পরে বিবাদী দুজনকে ১৪ ফেব্রুয়ারি শুনানিতে অংশ নিতে নোটিশ করে পরিবেশ অধিদপ্তর।

এরপর বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক মোহাম্মদ এমরান হোসেন পুকুর ভরাটের অভিযোগে মো. আব্দুল হাদী ও সানী উল বারী নামে দুইজনকে এক লাখ ৭০ হাজার টাকা জরিমানা ও এক মাসের মধ্যে ভরাটকৃত পুকুর পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে নির্দেশ দেন।

তবে জরিমানার টাকা প্রদান করলেও এক মাসের মধ্যে পুকুর পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে না এনে আবার ভরাট শুরু করেন তারা।

এ ব্যাপারে পুকুর ভরাটকারী মো. আব্দুল হাদী বলেন, ‘আমরা জরিমানার টাকা দিয়েছি।’

পুকুরটি পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে নির্দেশ ছিল কিন্তু আপনি আবারও কেন পুকুর ভরাট করছেন? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমি জানি না। আমি অসুস্থ পরে কথা বলব।’

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) সিলেট বিভাগীয় সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট শাহ শাহেদা আক্তার বলেন, ‘এর আগেও যখন পুকুরটি ভরাট শুরু করা হয় তখন আমরা বেলার পক্ষ থেকে অভিযোগ করি। আমাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে পরিবেশ অধিদপ্তর তাদেরকে জরিমানা ও পুকুরটি পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু তারা জরিমানার টাকা জমা দিয়ে আবার পুকুর ভরাট শুরু করেছেন। গত দুদিন আগে তারা যে পুকুর ভরাট করছেন এ বিষয়টি আমার দৃষ্টিগোচর হয়। তাই আমি আবারও পরিবেশ অধিদপ্তরকে এ ব্যাপারে অবগত করেছি।’

এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেট জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. বদরুল হুদা বলেন, পুকুর ভরাটের জন্য গত মাসে তাদের অর্থদণ্ড করা হয়। পাশাপাশি পুকুরটি পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে নির্দেশ দেওয়া হয়। ইতোমধ্যে তারা জরিমানার টাকা পরিশোধ করেছেন। কিন্তু তারা আবার পুকুর ভরাট করছেন বলে আমার আবার অভিযোগ পেয়েছি। এ ব্যাপারে আমি বিভাগীয় পরিচালকের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত