ইয়াকুব শাহরিয়ার, শান্তিগঞ্জ

২৯ মার্চ, ২০২৪ ১৬:১৩

শান্তিগঞ্জে এখনো জমে উঠেনি ঈদের বাজার

পবিত্র ঈদ উল ফিতরের আর মাত্র ১১ দিন বাকি (যদি রোজা ত্রিশটি হয়)। মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব ঘনিয়ে আসলেও শান্তিগঞ্জ উপজেলার বাজারগুলোতে এখনো জমে উঠনি জামা কাপড়ের ব্যবসা। এতে দোকানগুলোতে ক্রেতাশূন্যতায় ভুগছেন উপজেলার প্রধান প্রধান বাজারগুলোর ব্যবসায়ীরা। তারা মনে করছেন, ‘চৈত্র মাস খরা-নিদানের মাস’ বলেই হয়তো ব্যবসায় এমন মন্দাভাব যাচ্ছে। তবে আগামী সপ্তাহে অর্থাৎ ২৫ রমজানের পর থেকে বাজারে ক্রেতার সংখ্যা বাড়বে বলে বিশ্বাস ব্যবসায়ীদের।

এদিকে, উপজেলার বিভিন্ন বাজারের ইফতারির দোকানগুলোকে দুপুর দুইটা থেকেই মানুষের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ করা যাচ্ছে। রোজা শেষের দিকে এ অঞ্চলে মেয়ের বাড়িসহ বিভিন্ন আত্মীয়ের বাড়িতে ইফতার পাঠানোর রেওয়াজ চালু থাকায় ‘বিশেষ’ এই দোকানগুলোকে বাড়তি ক্রেতার চাপ রয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

উপজেলার গণিগঞ্জ বাজার, পাথারিয়া বাজার, শান্তিগঞ্জ বাজার, পাগলা বাজার ও ভমবমি বাজারের একাধিক ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, অন্যান্য বছর পনেরো রমজানের পর থেকেই টুকটাক ঈদের বেচা-কেনা শুরু হয়ে যায়। কিন্তু এবছর অন্য সময়ের তুলনায় বিক্রি হচ্ছে অর্ধেকেরও কম। তারা জানান, যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন রুচিশীল ও ভালো মানের পোশাক দোকানে তুলার। ক্রেতা কম হওয়ার শঙ্কা দেখা দেওয়ায় কিছুটা মন খারাপ রয়েছে ব্যবসায়ীদের।

তারা বলছেন, এখন চৈত্র মাস চলছে। হাওরাঞ্চলে চৈত্র মাসে কিছুটা ‘নিদান’ (অর্থাভাব) থাকে। মানুষের হাতে টাকাপয়সা থাকে না। এজন্য হয়তো ক্রেতারা বাজারে আসতে চাচ্ছেন না। তারপরও ২৫ রমজানের পরে ব্যবসা জমে উঠার আশা তাদের।

উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলোর একটি হচ্ছে পাগলা বাজার। শুক্রবার বিকালে বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রায় প্রতিটি কাপড়ের দোকান ক্রেতাশূন্য। ব্যবসায়ীরা দোকানে বসে, গল্পগুজব করে ও মোবাইল টিপে সময় কাটাচ্ছেন। মাঝে মধ্যে দু’একজন ক্রেতা আসলেও দাম দরে বেশিরভাগেরই পোষাচ্ছে না।

ক্রেতারা বলছেন, কাপড়ের দাম অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি। অন্যদিকে, ইফতারির দোকানে ক্রেতাদের উপস্থিতি লক্ষ করার মতো। বেশিরভাগ ক্রেতারাই আত্মীয়ের বাড়িতে ইফতার পাঠাতে নিমকি, জিলাপি, খাজা, মিষ্টি, খেজুর, ছোলা, বড়া, পিঁয়াজু ইত্যাদি কিনছেন।

রাজনা বেগম নামের এক মহিলা এসেছেন কেনাকাটা করতে। যে পোশাকই তিনি পছন্দ করছেন সেটাই তার বাজেটের বাইরে চলে যাচ্ছে৷ তিনি বলেন, দু’তিনটা দোকান ঘুরে দেখেছি৷ কাপড়ের দাম বেশি। তবে, কালেকশন খুবই ভালো লেগেছে। দেখি দামে দরে পোষালে কিনবো না হলে কিনবো না। আরেকটু দেখবো।

পাগলা বাজারের রনি এন্ড তানিয়া ফ্যাশনের পরিচালক মেহেদী হাসান রনি, আনন্দ গার্মেন্টস’র পরিচালক জাকির হোসাইন, ভমবমি বাজারের ভাই ভাই দত্ত গার্মেন্টস’র স্বত্বাধিকারী ভক্ত দত্ত ও গণিগঞ্জ বাজারের নোমান গার্মেন্টস’র স্বত্বাধিকারী নোমান আহমদ বলেন, এখনো কেনাকাটা জমে উঠেনি। এ বছরের ঈদ বাজার নিয়ে কিছুটা শঙ্কা রয়েছে। মানুষের হাতে টাকা নাই। চৈত্র মাস চলছে৷ তবে ঈদের চার-পাঁচ দিন আগে কিছুটা ব্যবসা হওয়ার আশা আছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত