বিশ্বনাথ প্রতিনিধি

১৭ এপ্রিল, ২০২৪ ২৩:২০

বিশ্বনাথের মেয়র মুহিবুরের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ কাউন্সিলরদের

সিলেটের বিশ্বনাথ পৌরসভার মেয়র মুহিবুর রহমানের বিরুদ্ধে পৌরসভার উন্নয়নকাজের প্রায় কোটি টাকা আত্মসাৎসহ আরও নানা অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন প্যানেল মেয়র রফিক মিয়াসহ পরিষদের আরও ৬ কাউন্সিলর।

বুধবার দুপুর ২টায় পৌর শহরের একটি রেস্টেুরেন্টে পৌরসভার মেয়র মুহিবুর রহমানের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ করেন তারা। অনয়িম দুর্নীতির প্রায় ১৭টি গরুত্বপূর্ন বিষয় উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পৌরসভার প্যানেল মেয়র-১ ও ৫নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রফিক মিয়া।

এর আগে গত মঙ্গলবার ঢাকাস্থ স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রাণলয়ের সচিব বরাবরে মেয়র মুহিবুর রহমানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবসহ লিখিত অভিযোগ দেন প্যানেল মেয়র-১ রফি মিয়া, ১নং ওয়ার্ডের পুরুষ কাউন্সিলর রাজুক মিয়া রাজ্জাক, ৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জহুর আলী, ৯নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শামীম আহমদ, ১নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত কাউন্সিলর সাবিনা বেগম, ২নং ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর রাসনা বেগম এবং ৩নং ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর লাকী বেগম।
তার আগে গত সোমবার মেয়রের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ এনে সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার বরাবরে অনাস্থা প্রস্তাবও দাখিল করেন তারা। অভিযোগকারী কাউন্সিলরদের মতে, গত ৯ এপ্রিল দুপুরে পৌর কাউন্সিলের হলরুমে এক সভায় মেয়রের বিরুদ্ধে তারা অনাস্থা প্রস্তাব আনেন এবং তাতে সাতজন কাউন্সিলর এক হয়ে অনাস্থা প্রস্তাবে স্বাক্ষর করেন।

সংবাদ সম্মেলনে প্যানেল মেয়র রফিক মিয়া বলেন, ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিশ্বনাথ পৌরসভার মেয়র মুহিবুর রহমান এপর্যন্ত পৌরসভার উন্নয়নের প্রায় কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। ময়লা আবর্জনার খাত দেখিয়ে রাজস্ব খাত থেকে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করছেন। পৌরসভার উন্নয়নের টাকা অন্য ইউনিয়নে এবং অন্য উপজেলায় বিতরণ করেছেন। সরকারের রাজস্ব খাত থেকে তিনি বাজেট অনুসরন না করে বিভিন্ন নামে বেনামে ভূয়া বিল ভাউচার করেও বিপুল পরিমান টাকা আত্মসাৎ করেছেন। পৌর পরিষদের সিদ্ধান্ত ছাড়া জনপ্রতি ২/৩ লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে একক ক্ষমতা বলে মাষ্টারোলের মাধ্যমে নিজের আত্বীয়-স্বজনকে পৌরসভায় নিয়োগ দিয়েছেন।

এছাড়া পৌরসভার উন্নয়ন কাজের দরপত্র আহবান ছাড়াই ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজের পছন্দের ঠিকাদার দিয়ে কাজ পরিচালনা করাচ্ছেন মেয়র। কাউন্সিলরদের প্রত্যয়ন ছাড়া লাখ লাখ টাকার বিল পরিশোধের ব্যবস্থা করে দীর্ঘদিন ধরে টাকা আত্মসাৎ করে আসছেন। দুর্নীতির সুবিধার্থে পৌরসভার কার্যালয় থেকে অফিসিয়াল সকল কাগজপত্র, ফার্নিচার ও ল্যাপটপ তার বাসভবনে নিয়ে সেখানে ষ্টাফদের দিয়ে অফিসের কাজ করাচ্ছেন, যা বেআইনী।

তবে, এসকল অভিযোগ মিথ্যা দাবি করেছেন পৌরসভার মেয়র মুহিবুর রহমান। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, প্যানেল মেয়র রফিক মিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ছিল এবং তদন্তে তা প্রমানিত হয়। এরপর গত ২৪ মার্চ সকল কাউন্সিলরদের উপস্থিতিতে পরিষদের সিদ্ধান্ত মতে রফিক মিয়াকে প্যানেল মেয়র থেকে বাদ দিয়ে ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সলর ফজর আলীকে প্যানেল মেয়র-১ করা হয়। এতে ক্ষুব্দ হন রফিক মিয়া।

আর পৌরসভার বরাদ্দকৃত উন্নয়নের টাকা উন্নয়নখাতে ৭০ভাগও না লাগিয়ে শতভাগ আত্মসাৎ করায় রফিক মিয়াসহ বাকি ৬কাউন্সিলরদের বিরুদ্ধেও অনিয়ম দুর্নীতির তদন্ত চলমান। যেকারণে পৌরসভার টাকা আত্মসাৎকারী ওই সাত কাউন্সিলর এক জোট হয়ে মিথ্যা অনাস্থা প্রস্তাব দাখিল করে তাঁর মানহানী করছেন বলেও মন্তব্য করেন মেয়র।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত