সিলেট জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সাবেক এমপি দিলদার হোসেন সেলিম এক বিবৃতিতে গত বৃহস্পতিবার সিলেট আলিয়া মাদ্রাসা ময়দানে প্রধানমন্ত্রী যে সব বক্তব্য রেখেছেন তার জন্য হতাশা প্রকাশ করেছেন।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, বিনা-ভোটে প্রধানমন্ত্রী হয়ে যেখানে দাঁড়িয়ে তিনি বক্তব্য রেখেছেন সেখানকার জনগণকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করে আবার ভোট দেয়ার জন্য ধন্যবাদ জানানো জনগণের সাথে তামাশা করা ছাড়া কিছুই নয়।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে দুইদিন ধরে প্রশাসনের যে আচরণ সিলেটের জনগণের প্রতি তা চরম হতাশাজনক। আগমনের দিন সকাল থেকে সিলেট শহরে সকল রাস্তা-ঘাট, অফিস-আদালত, ব্যাংক-বীমা সহ সকল প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে জনগণকে যে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে তাতে সিলেটবাসী অত্যন্ত ক্ষুদ্ধ। হযরত শাহজালালের দরগাহর মসজিদে যোহর ও আসরের নামাজ পড়া সীমাবদ্ধ করাও আমাদেরকে মর্মাহত করেছে। আমরা ভাষায় বলতে চাই, দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে উনার নিরাপত্তার ব্যবস্থা অবশ্যই করণীয়। কিন্তু নিরাপত্তার নামে শহরের জনগণকে জিম্মি রেখে প্রধানমন্ত্রীর সফর সফল করা এবং স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদেরকে দিয়ে জনসভাস্থল পূর্ণ করা তা অত্যন্ত লজ্জাজনক। তা থেকেই প্রমাণ হয় যে, প্রধানমন্ত্রী জনগণ থেকে কতটা বিচ্ছিন্ন। এমনকি দরগাহ মসজিদে কফিনে রাখা লাশ দাফন করতেও দেওয়া হয়নি যা অত্যন্ত দুঃখজনক।


সিলেটবাসী অবশ্যই জানেন বিগত বিএনপি সরকারের সময় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে সিলেটের কৃতি সন্তান সাবেক সফল অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের নেতৃত্বে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, সিলেট বিভাগীয় স্টেডিয়াম, সুরমা নদীর উপর ৬টি সেতু সিলেট শহরকে আধুনিক শহরে রূপান্তরিত করা সহ যে উন্নয়নের ধারা সূচিত হয়েছিল। তার পরে নতুন করে উন্নয়ন তো দূরে কথা এই কাজের সংস্কারটুকুও বর্তমান সরকার করতে পারে নাই। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বিএনপির করা এই উন্নয়ন কর্মকাণ্ড আওয়ামী লীগের বলে চালিয়ে দেওয়া অত্যন্ত লজ্জাজনক।

প্রধানমন্ত্রীর উচিত ছিল সিলেটের কৃতি সন্তান সাবেক সফল অর্থমন্ত্রী এম. সাইফুর রহমানের নাম স্মরণ করা এবং পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক এম এ জি ওসমানীর নামটিও স্মরণ করা। কিন্তু তিনি তা করেন নাই। তিনি যে সার্কিট হাউজে বিশ্রাম নিয়েছেন সেটা ঐ সাইফুর রহমানের উন্নয়নে ফসল। কিন্তু তিনি এম. সাইফুর রহমানের নাম পর্যন্ত নেননি।

বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, সিলেটবাসী আশা করেছিল প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে সিলেটের কৃতি সন্তান এম. ইলিয়াস আলীকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য প্রশাসনের পদক্ষেপ সম্বন্ধে সিলেটবাসীকে অবহিত করবেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী এম. ইলিয়াস আলী সম্পর্কে কোন বক্তব্য রাখেননি অথচ প্রধানমন্ত্রী নিজে ইলিয়াস আলীর স্ত্রীকে আশ্বাস দিয়েছিলেন ইলিয়াস আলীকে খুঁজে বের করার জন্য সব ধরণের পদক্ষেপ নিবেন।

পরিশেষে আমি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় প্রধানমন্ত্রীর এই সব বক্তব্যের প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং সিলেটবাসীর ন্যায্য দাবী-দাওয়া আদায়ের লক্ষ্যে সিলেটের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য আহ্বান জানান।