নিজস্ব প্রতিবেদক

০৩ আগস্ট, ২০২৫ ২৩:২৪

কানাইঘাটে জোড়া খুনের মামলায় দুই ভাইয়ের মৃত্যুদণ্ড, দুজনই পলাতক

সিলেটের কানাইঘাটে জোড়া হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় দুই ভাইকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া একজনকে যাবজ্জীবন এবং আরও দু’জনকে ১০ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।

 রবিবার (৩ আগস্ট) অতিরিক্ত দায়রা জজ (৫ম) আদালতের বিচারক ঝলক রায় এই রায় ঘোষণা করেন।

আদালতের বেঞ্চ সহকারি সালেহ আহমদ বিষযটি নিশ্চিত করেছেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই ভাই হলেন, কানাইঘাট উপজেলার বাকিবারাপৈত গ্রামের মৃত আবু শহীদের ছেলে বোরহান উদ্দিন (৪৬) ও তার ভাই আব্দুন নুর (৫৩)। মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি তাদেরকে ৫ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়।

অপর দুই আসামি মৃত সুলেমানের ছেলে ছইদুল (৫৮) ও ভাটিপাড়ার মৃত আবু শহীদের ছেলে সুলতানকে (৩৮) দশ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।

মামলার প্রধান আসামি আব্দুল কাশিম মারা যাওয়ায় তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা পলাতক এবং অপর ৩জন জেল হাজতে ছিলেন।

জানা যায়, ২০০৭ সালের ২২ জুলাই দুপুরের দিকে বাড়ির সীমানা প্রাচীর নিয়ে বিরোধের জের ধরে হামলা হয়। আসামিরা মামলার বাদি আব্দুল্লাহর ঘরে ঢুকে ভাঙচুর করে। তার স্ত্রী সাজিদা প্রতিবাদ করলে আবুল কাশিম ঘরে ঢুকে দা দিয়ে কোপ মারেন। তার ভাই বোরহান রড দিয়ে আঘাত করলে সাজিদার চিৎকার শুনে ছুটে আসেন আব্দুল্লাহ। তখন আসামিরা তাকেও মারধর করে।

আব্দুল্লাহকে রক্ষায় ছুটে আসেন তার বৃদ্ধ পিতা আবু বকর (৭১)। তাকেও আঘাত করা হয়। আব্দুল্লাহর শ্বশুর মাওলানা মঈন উদ্দিন (৬০) বাড়ি ফিরলে মারপিঠ করা হয় তাকেও। হামলার শিকার হন আব্দুল্লাহর শ্যালক হাবিবুর রহমান। তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্ষে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আবু বকরকে মৃত ঘোষণা করেন। অন্যদের পাঠানো হয় ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
   
এই ঘটনায় পরদিন (২৩ জুলাই) নিহত আবু বকরে ছেলে আব্দুল্লাহ বাদি হয়ে কানাইঘাট থানায় ৬ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা (নং-১০/০৭) দায়ের করেন।

ঘটনার ৪ দিন পর ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মাওলানা মঈন উদ্দিনও মৃত্যুবরণ করেন।

কানাইঘাট থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল মান্নান ২০০৭ সালের ১৪ অক্টোবর ৫ ভাইসহ ৬ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশীট দাখিল করেন।

পরবর্তীতে মামলাটি বিচারের জন্য সিলেট জেলা ও দায়রা জজ (৫ম) আদালতে স্থানান্তর হয় ২০০৮ সালের ৯ নভেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার কাও শুরু হয়।

মোট ১৯ জন সাক্ষির মধ্যে ৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে বিচারক এ রায় ঘোষণা করেন।

মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন এপিপি নজরুল ইসলাম এবং আসামি পক্ষে ছিলেন আব্দুল খালিক।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত