১০ আগস্ট, ২০২৫ ০০:২৩
সিলেট-২ (বিশ্বনাথ-ওসমানীনগর-বালাগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন এম. ইলিয়াস আলী। রহস্যজনকভাবে ইলিয়াস আলী নিখোঁজ হওয়ার পর এ আসনে তার জনপ্রিয়তা আরও বেড়েছে। ইলিয়াস আলীর অনুপস্থিতিতে গত ১৪ বছর ধরে তার উত্তরসূরি তাহসিনা রুশদী লুনা মাঠে সক্রিয় রয়েছেন।
এতদিন এই আসনে লুনাই ছিলেন বিএনপির একমাত্র প্রার্থী। লুনার দুর্গ হিসেবে পরিচিত পেয়েছিলো এ আসন। তবে এবার এই আসনে নতুন করে আবির্ভূত হয়েছেন বিএনপির আরেক নেতা। বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবিরও এই আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী। তিনি তারেক রহমানের গ্রিন সিগন্যাল পেয়েই মাঠে নেমেছেন বলে জানিয়েছেন। হুমায়ুন কবিরের এই আগমন লুনা অনুসারীদের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে।
তাহসিনা রুশদীর লুনা হচ্ছেন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা আর হুমায়ুন কবির হচ্ছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ও কেন্দ্রীয় বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক।
শুক্রবার বিকেলে বিশ্বনাথ উপজেলা ও পৌরসভার সর্বস্তরের জনসাধারণের ব্যানারে এক সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিলেট-২ আসনে আগামী সংসদ নির্বাচনে নিজেকে ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিয়ে লুনা’র দুর্গে ভাগ বসান হুমায়ুন কবির।
সমাবেশে তিনি সংসদ সদস্য প্রার্থিতা ঘোষণা দিয়ে বলেন, এই আসনে কাজ করার জন্য বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তাকে নির্দেশ দিয়েছেন। যদি ধানের শীষ পান আর নির্বাচিত হন তাহলে নিখোঁজ বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলীর স্বপ্নের উন্নয়ন বাস্তবায়নে কাজ করবেন। সেই সাথে বিএনপি সরকার গঠন করলে এম ইলিয়াস আলীকেও উদ্ধারের জন্য কাজ শুরু করবেন বলে জানান।
এর পূর্বে হুমায়ুন কবির প্রায় তিনমাস ধরে বিশ্বনাথ ও ওসমানীনগর আসনে দলীয় কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন। কিন্তু এতদিন নিজের প্রার্থিতা নিয়ে কোনো ঘোষণা দেননি। এনিয়ে জনমনে নানা জল্পনা-কল্পনার সৃষ্টি হয়েছিল। অবশেষে বিশ্বনাথের ওই সুধী সমাবেশে তার নিজ মুখে সংসদ সদস্য প্রার্থিতা ঘোষণা দিয়ে সেই জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটান।
কিন্তু এম ইলিয়াস আলী নিখোঁজের পর দীর্ঘ প্রায় ১৩ বছর ধরে তাহসিনা রুশদীর লুনা নেতাকর্মীদের আলগে রেখে দলীয় কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন। তিনিও এই আসনে বিএনপি মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী হয়ে নির্বাচন করার স্বপ্ন দেখে সভা-সমাবেশ করছেন। এতদিন তাহসিনা রুশদীর লুনা এই আসনে একক প্রার্থী হিসেবে কাজ চালিয়ে গেলেও হঠাৎ করে সেখানে হুমায়ুন কবির ভাগ বসালেন। এনিয়ে এই আসনে বিএনপি থেকে দু’জন প্রার্থী হওয়ায় জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
উপজেলা বিএনপির সহ সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান আব্বাছ আলীর সভাপতিত্বে ও অলংকারি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নাজমুল ইসলাম রুহেল, যুবদল নেতা রুমেল আলী এবং আমির আলীর যৌথ পরিচালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতা চৌধুরী, সিলেট জেলা বিএনপির সাদারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সোহেল আহমদ চৌধুরী, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আশিক উদ্দিন চৌধুরী, জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান পাপলু, লামাকাজী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কবিরর হোসেন ধলা মিয়া, বিএনপি নেতা সাজিদুর রহমান সোহেল, বিশ্বনাথ পুরান বাজার বণিক কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, যুবদল নেতা সজিব আহমদ, সেচ্চাসেবক দল নেতা শিবলু আহমদ, সাবেক চেয়ারম্যান খায়রুল আমিন আজাদ ও জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম সাজু।
আপনার মন্তব্য