মৌলভীবাজার সংবাদদাতা

১৬ ফেব্রুয়ারি , ২০১৫ ২১:৩৫

মৌলভীবাজার শহর প্রতিরক্ষা বাঁধে অবৈধ স্থাপনায় মাদক ব্যবসা

মৌলভীবাজার শহরের মনু সেতু-সংলগ্ন মনু নদের শহর প্রতিরক্ষা বাঁধের উপর গড়ে উঠছে স্থাপনা ,শুকরের খামার এবং মাদক ব্যবসার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ও স্থানীয় আবাসিক এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পরিবেশ দূষণীয় হচ্ছে।
জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ শুকরের খামার এবং মাদক ব্যবসা উচ্ছেদের দাবিতে গত ৮ জানুয়ারি (২০১৫) পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী ও মৌলভীবাজার পৌরসভার মেয়রের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আজ সোমবার দুপুরে পাউবো ও মৌলভীবাজার পৗরসভার প্রতিনিধি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
অভিযোগে বলা হয়েছে, মনু সেতু-সংলগ্ন মনু নদের পাউবোর শহর প্রতিরক্ষা বাঁধের উপর পাঁচ থেকে ছয় মাস ধরে শুকরের খামার গড়ে তোলা হয়েছে। এ সব খামারে অর্ধশতাধিক শুকর লালন-পালন করা হচ্ছে। এতে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স এবং আশপাশের বাসাবাড়িতে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পরিবেশ দূষনীয় হয়ে পড়েছে। অনেক সময় খামারের শুকর গুলোকে অবাধে ছেড়ে দেওয়া হয়। তখন মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে আসা লোকজন, বাসাবাড়ির মানুষ ও পথচারিরা চরম বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন। অন্যদিকে মনু সেতু সংলগ্ন স্থানটিতে অবৈধভাবে বসবাসকারি পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের অনেকে মদ-গাঁজা, ইয়াবা টেবলেটসহ বিভিন্ন ধরনের মাদক ব্যবসা করছেন। এতে এলাকার শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিঘিœত হচ্ছে।
মুক্তিযোদ্ধা সংসদের জেলা ইউনিট কমান্ডার মো. জামাল উদ্দিন বলেন, ‘আমরা প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়েছি। দূষিত পরিবেশের কারণে আমরা কমপ্লেক্সটিকে কাজে লাগাতে পারছি না। এখানে কেউ আসতে চায় না। আশপাশের বাসাবাড়িতে দুর্গন্ধে টিকে থাকা মুশকিল হয়ে পড়েছে।’
স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, মনু সেতুর কাছের এই স্থানটিতে অবৈধভাবে পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের কয়েকটি পরিবার বসবাস করছেন। তাঁদেরকে মৌলভীবাজার শহরতলির মাতারকাপনে পৌরসভার উদ্যোগে পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের বসবাসের জন্য স্থাপিত সেবক নিবাসে যাওয়ার কথা বললেও তাঁরা এই স্থানটি ছাড়তে চাইছেন না।
পরিদর্শনের সময় মৌলভীবাজার পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও কাউন্সিলর মনবীর রায় মঞ্জু বলেন, ‘এখানে শুকর পালন করা হচ্ছে। পরিবেশও ময়লা। আমরা তাদেরকে (এখানে বসবাসকারি পরিচ্ছন্নতাকর্মী) সেবক নিবাসে যাওয়ার কথা বলেছি। কিন্তু তারা যাচ্ছে না। পরিচ্ছন্নতাকর্মীর অনেকেই মদ পান করেন। এটা তাদের বিষয়। কিন্তু ব্যবসা করতে দেওয়া যাবে না। মাদক প্রতিরোধ ও পরিবেশ দূষণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো।’
পাউবোর শাখা কর্মকর্তা মো. বশির উদ্দিন বলেন, ‘আমরা এখন মাপজোক করে জায়গা চিহ্নিত করবো। এর পরে তাদেরকে লিখিত জানাবো। এতে কাজ না হলে আইনগত  ব্যবস্থা নিবো।’
হরিজন ঐক্য পরিষদ মৌলভীবাজারের সভাপতি কান্তিলাল বাসপর বলেন, মদ বিক্রি ও শুকর পালন বন্ধ করতে তাদের বলা হয়েছে। আমাদের সেবক নিবাসে এসব নেই। সেখানে সুন্দর পরিবেশ রয়েছে।
এখানে বসবাসকারি পরিচ্ছন্নতাকর্মী লছমন বাসপর বলেন, যেসব শুকর আছে। সেগুলো বিক্রি করে শেষ করে দিবো। কানাই বাসপর বলেন, একসময় মাদক ব্যবসা করেছি। এখন ছেড়ে দিয়েছি। সেবক নিবাসে না যাওয়া প্রসঙ্গে তাঁরা বলেন, অনেকের ঘর তৈরি করার সামর্থ্য নেই। এজন্য যেতে চায় না

 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত