কুলাউড়া প্রতিনিধি

২৩ অক্টোবর, ২০১৬ ১৭:০২

কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা তদন্ত

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও চিকিৎসা অবহেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত কলেজ শিক্ষক আশুতোষ দেবের মৃত্যুর অভিযোগের তদন্ত অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রোববার (২৩ অক্টোবর) হবিগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ড. দেবপদ রায়কে প্রধান করে গঠিত চার সদস্যের তদন্ত কমিটি কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য, আন্দোলনকারী নেতৃবৃন্দের ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বক্তব্য গ্রহণ করেন।

জানা যায়, চলতি বছরের ৫ আগস্ট ভাটেরা স্কুল এন্ড কলেজের প্রভাষক আশুতোষ দেব ও একই প্রতিষ্ঠানের অফিস সহকারী ফজির আলী পিকআপ ভ্যান চাপায় গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসকরা যথাযথ চিকিৎসা প্রদান না করে তাদের দ্রুত সিলেটে প্রেরণ করেন।

ভুক্তভোগী পরিবারের স্বজনদের অভিযোগ হাসপাতালে দায়িত্বরত চিকিৎসকরা গুরুতর আহতদের প্রয়োজনীয় ব্যান্ডেজ ও চিকিৎসা প্রদান না করায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়ে সিলেটে নেওয়ার পথেই আশুতোষ দেব মারা যান এবং ফজির আলীর একটি পা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তিনি পঙ্গু হয়ে যান।

বিষয়টি স্থানীয় সচেতন মহল জানতে পেরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং কর্তব্যরত চিকিৎসকদের অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও চিকিৎসা অবহেলার প্রতিবাদে আন্দোলনে নামেন। এর ভিত্তিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃপক্ষ বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য হবিগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ড. দেবপদ রায়কে প্রধান করে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন হবিগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ড. মো. মখলিছুর রহমান, হবিগঞ্জ সিভিল সার্জন অফিসের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. শাহ আলম ও প্রধান সহকারী ফরিদ আহমদ।

তদন্ত কমিটি রোববার দুপুর দেড়টার দিকে কুলাউড়া হাসপাতালে আশুতোষ দেবের স্বজন গোলাম মোস্তফা পাবেল ও ফজির আলীর ভাই আবুল কালাম এর সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। এদিকে অফিস আদেশের মাধ্যমে অভিযুক্ত তৎকালীন হাসপাতালের দায়িত্বরত (বর্তমানে কোম্পানীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দায়িত্বরত) স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ড. মোহ. মিজানুর রহমানকে তদন্ত চলাকালীন সময়ে উপস্থিত থাকার কথা জানানো হলেও তিনি এ সময় উপস্থিত হননি।

পরে তদন্ত কমিটি আন্দোলনকারীদের মধ্যে প্রবীণ রাজনীতিবিদ জাসদের কেন্দ্রীয় নেতা গিয়াস উদ্দিন আহমদ, কুলাউড়া ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি বদরুজ্জামান সজল, কুলাউড়া ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক সিপার উদ্দিন আহমদ, কুলাউড়া উপজেলা জাসদের সভাপতি ময়নুল ইসলাম শামীম, কুলাউড়া ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাবেক প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আতিকুর রহমান আখই এবং হাসপাতালের দায়িত্বরতদের বক্তব্য গ্রহণ করেন।

এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির প্রধান ও হবিগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ড. দেবপদ রায় বলেন, সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য নিয়েছি। তদন্ত প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠানো হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত